গৃহে বা বাইরে পড়ে গিয়ে দেহে আঘাত বা অস্থিভঙ্গ হতে পারে। কাজকর্মে মনোযোগের অভাব। ... বিশদ
ভোটের দিন সকাল থেকেই রানাঘাট উত্তর-পূর্বের একাধিক এলাকায় দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাধিপত্য। ভোটারদের প্রভাবিত করে টোটোয় বসিয়ে বুথে পাঠানো, বিজেপির পতাকা লাগানো বাইক বাহিনীর দাপটে কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। নিজেদের দিকে ভোট টানতে বিজেপিকে রীতিমতো অ্যাকশন মুডে দেখা গেলেও বাকি ছয় বিধানসভার তুলনায় রানাঘাট উত্তর-পূর্ব থেকেই ভোটদানের হার সব থেকে কম। এই কেন্দ্রে ৭৮.২৭ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। গত নির্বাচনগুলোর তুলনায় মতুয়া অধ্যুষিত এই বিধানসভায় ভোটদান কমল কেন, তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে পদ্ম শিবিরের অন্দরেও। রাজনৈতিক মহল বলছে, সিএএ নিয়ে আশঙ্কিত মতুয়া সমাজকে মূলত তিনভাগে ভাগ করেছে। নাগরিকত্ব হারানোর ভয় থেকেই মতুয়া ভোটারদের অনেকে এবার ভোটদান থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন। অন্যদিকে, গত দু’টি নির্বাচনে বিজেপির পাশে থাকা মতুয়াদের একটা অংশ বিজেপির পাশ থেকে সরে তৃণমূলমুখী হয়েছে। কিন্তু তারপরও সীমান্তবর্তী এলাকার মতুয়াদের একটা বড় অংশকে বিজেপি ধরে রাখতে পেরেছে। যা চিন্তায় ফেলেছে তৃণমূলকেও।
অন্যদিকে, রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা থেকেও ভোট ভাগাভাগির বড় সম্ভাবনা দেখছে ঘাসফুল শিবির। বিজেপির বিধায়ক হিসেবে প্রায় তিন বছর এই বিধানসভায় দায়িত্ব সামলেছেন মুকুটমণি অধিকারী। কিন্তু এবার তৃণমূলের টিকিটে লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে এই বিধানসভার মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক আড়াআড়ি বিভক্ত হতে পারে বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতাদের অনেকেই। তাঁদের কথায়, রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভায় তৃণমূলের নিজস্ব ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। মুকুটমণি বিজেপি থেকে ভাঙিয়ে কতটা ভোট এবার নিজের দিকে টানতে পারেন, সেটাই দেখার বিষয়। যদিও এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই সব থেকে বেশি লিড আসবে বলে আশায় বুক বেঁধেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক আশিসবরণ উকিল বলেন, রানাঘাট দক্ষিণ থেকেই তো মুকুটমণি বিজেপির বিধায়ক হয়েছিলেন। সেখানকার মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তিনি। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই বিধানসভা থেকেই বিজেপির সব থেকে বেশি লিড আসবে। আর মতুয়াদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেও সীমান্তবর্তী এলাকার মতুয়ারা মোদিজিকে দেখেই ভোট দিয়েছেন।
রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, রানাঘাট উত্তর-পূর্বে দাদাগিরি চালিয়ে বিজেপি ভোট করিয়েছে। সেই ভয় থেকেই অনেকে ভোট দিতে যাওয়ার সাহস করেন নি। এটা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু বিজেপি যদি ভাবে এতে মতুয়াদের দমিয়ে রাখা সম্ভব, তাহলে ভুল হবে। মতুয়ারা কাদের সঙ্গে রয়েছেন, কৃষ্ণগঞ্জই তার প্রমান দেবে। কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা থেকে প্রায় ৪০ হাজার ভোটের কাছাকাছি লিড রানাঘাট উত্তর-পূর্ব ও রানাঘাট দক্ষিণের ক্ষয়ক্ষতিকে মেরামত করতে পারবে বলে রীতিমতো আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল শিবির।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, শুধু সিএএ ইস্যুতেই নয়, কৃষ্ণগঞ্জে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেও ভোট ফলাফলে বড় ফায়দা লুটবে তৃণমূল। কিন্তু মতুয়া অধ্যুষিত বাকি দুই বিধানসভার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই কোথায় গিয়ে পৌঁছায় সেটাই দেখার।