একাধিক সূত্রে অর্থপ্রাপ্তি ও ঋণশোধে মানসিক ভাব মুক্তি। নিজ বুদ্ধি ও দক্ষতায় কর্মোন্নতি ও সুনাম। ... বিশদ
মেমারির ইছাপুর এলাকার মাঠে গিয়ে দেখা গেল, অনেক জমির আলু গাছের পাতা লাল হয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও আবার পাতা শুকিয়ে গিয়েছে। চাষিরা বলেন, নবিধসা ছড়িয়ে পড়লে সব শেষ হয়ে যাবে। দেরিতে চাষ হওয়ায় গাছ বাড়ছে না। অন্যান্য বছর এই সময় গাছ বড় হয়ে যায়। ২০ থেকে ২৫ দিন পর থেকে আলু তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এবছর গাছ বাঁচিয়ে রাখা যাবে কি না তা নিয়েই চিন্তা রয়েছে। গাছ থাকলেও ফলন অর্ধেকের কম হয়ে যাবে। মেমারির চাষি নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ছ’বিঘা জমিতে আলু রয়েছে। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ২৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে। দু’বার চাষ করতে হয়েছে। তারপরেও ফলন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আলু চাষের জন্য ঠান্ডা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু মাঝেমধ্যেই গরম অনুভূত হচ্ছে। ফলে চাষ নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হচ্ছে।
চাষিরা বলেন, নাবিধসার আক্রমণ শুরু হয়েছে। তা রুখতে কীটনাশক দিতে হবে। তার জন্য অতিরিক্ত খরচ হবে। এত টাকা খরচ করেও আলুর ফলন ও ভালো দাম না পাওয়া গেলে আমাদের পথে বসতে হবে। শেখ আসরফ নামে এক চাষি বলেন, অন্যান্য বছর এক বিঘায় ১০০ বস্তার মতো আলু হয়। কিন্তু এবার যা পরিস্থিতি তাতে ৪০ থেকে ৫০ বস্তা হবে না বলে মনে হচ্ছে। ফলন কম হওয়ায় হয়তো দাম বেশি পাওয়া যাবে। কিন্তু তাতেও সবাই লাভ পাবেন না। কারণ অনেক জমির আলু বাড়বে না। ছোট সাইজের আলুর দাম বেশি পাওয়া যায় না। চাষ করতে এবছর সবকিছুই অনেক বেশি দামে কিনতে হয়েছে। বিশেষ করে সার নিয়ে কালোবাজারি করা হয়েছে। ১০:২৬:২৬ সার অনেক বেশি দামে কিনতে হয়েছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান জেলার গ্রামীণ অর্থনীতি অনেকটাই আলু চাষের উপর নির্ভরশীল। তাই বহু চাষি সমস্যায় পড়ে যাবেন। অন্যান্য বছর ৭৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। এবছর ৬৬ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। প্রথমবার গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর অনেকে দ্বিতীয়বার চাষ করেননি। কৃষি আধিকারিকদের দাবি, এবছর অনেক বেশি চাষি বিমা করেছেন। তাঁরা কিছুটা হলেও ক্ষতিপূরণ পাবেন। যদিও চাষিরা বলেন, চাষ করে যে লাভ হয় তা বিমার টাকায় পাওয়া যায় না। তাছাড়া আলু মাঠ থেকে তোলার পর মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। এবছর প্রথম থেকেই চাষিদের সেই শান্তি উধাও হয়ে গিয়েছে।