নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বৃহস্পতিবার ভোররাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল বাখরাহাটে বড় কাছারি মন্দির লাগোয়া ৭৩টি দোকান। দমকলের চারটি ইঞ্জিন দীর্ঘ চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে ওই চত্বর ধ্বংসস্তূপের চেহারা নেয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবার। এই ঘটনায় ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন তাঁরা। অগ্নিকাণ্ডের জেরে এদিন মন্দির বন্ধ রাখা হয়। পুণ্যার্থীদের অনেকেই মন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়েই পুজো দিয়ে চলে যান। কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। স্থানীয় মানুষজন ও ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, লাইটপোস্টে মাঝেমধ্যেই আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়। বুধবার রাতে হয়তো সেই ফুলকি কোনও দোকানের ছাউনিতে এসে পড়ে। তা থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে জেলা প্রশাসন আলোচনায় বসেছিল। জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। ঠিক সময় তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রাত আড়াইটে নাগাদ আচমকা তিনটি দোকানে পরপর আগুন ধরে যায়। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, স্থানীয়রা চেষ্টা করলেও জল দিয়ে নেভাতে পারেননি। উল্টে রাতে হাওয়ার থাকায় মুহূর্তের মধ্যে আশপাশের দোকানগুলিকে গ্রাস করে আগুন। খবর পেয়ে প্রথমে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে আরও দু’টি ইঞ্জিন আসে। এদিন সকাল ৭টার পর আগুন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানা গিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সাতগাছিয়ার বিধায়ক মোহন নস্কর, ডায়মন্ডহারবার পুলিস জেলার শীর্ষ আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
বেলার দিকে, বিষ্ণুপুর ২ নম্বর ব্লক থেকে আধিকারিকরা এসে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের নাম, ঠিকানা ও ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নথিভুক্ত করে নিয়ে যান। পরে ব্লক অফিসে প্রশাসনিক স্তরে বৈঠক হয়। সেখানে বিধায়ক ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার দাবি জানান প্রশাসনের কাছে।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ডায়মন্ডহারবারের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস ঘটনাস্থলে গিয়ে এ ব্যাপারে তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন এবং সত্য উদঘাটনের জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। যদিও এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মোহনবাবু। তিনি বলেন, বিরোধীদের কিছু একটা বলতে হবে, তাই তিনি এসব বলছেন। তাঁর কথার কোনও ভিত্তি নেই। এদিন বেলায় সিপিএম প্রার্থী প্রতীক উর রহমান ও দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গেও কথা বলেন। কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার সম্পাদক রামরাবণ পাল ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।