নির্মাল্য সেনগুপ্ত, রায়গঞ্জ: রাজ্য তথা দেশের প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের কাছে অন্যতম দর্শনীয় স্থান এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম পক্ষীনিবাস কুলিক। পক্ষীকূলকে ভালোবাসেন এমন মানুষজন অবসর পেলেই ঢুঁ মারেন এখানে। এখানকার হাজার হাজার দেশি, বিদেশী পরিযায়ী পাখির কলতান মানুষের মনকে ভালো করে দেয়। এবার পক্ষীনিবাসের খণ্ডচিত্রই স্কুলের দেওয়ালে রং, তুলির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলে পড়ুয়াদের মন জয় করতে চায় কর্ণজোড়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন। কাজও শুরু হয়েছে। যার লক্ষ্য, পড়ুয়াদের মধ্যে কুলিক পক্ষীনিবাসের অসীম গুরুত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও প্রকৃতিবান্ধব চিন্তাভাবনা গড়ে তোলা। এতে অচিরেই পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় দ্রষ্টব্যস্থান সম্পর্কে পড়ুয়াদের মধ্যে প্রকৃতি ও পক্ষীকূলকে রক্ষার ভাবনা গড়ে উঠবে। সার্বিকভাবে স্কুলের প্রতিও আকর্ষণ তৈরি হবে পড়ুয়াদের মনে। দিন যত এগচ্ছে, শহর ও শহরতলীর সরকারি স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা নিম্নমুখী। সেই আশঙ্কায় এখন থেকেই জেলাজুড়ে শতাধিক স্কুলকে মডেল হিসেবে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আর এই উদ্যোগের পোশাকি নাম ‘জ্ঞানালয়’। তারই অংশ হিসেবে কর্ণজোড়া হাইস্কুলকেও সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা বলেন, জেলার শতাধিক স্কুলকে পড়ুয়াদের জন্য সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে ই-লার্নিংয়ের জন্য স্মার্ট ক্লাস। প্রজেক্টরও বসানো হচ্ছে। পড়াশোনার জটিল বিষয়গুলিকে স্কুলের দেওয়ালে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে কর্ণজোড়া হাইস্কুলেও কাজ চলছে। সেখানে কুলিক পক্ষীনিবাসের খণ্ডচিত্র ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। সেটা যথেষ্ট আকর্ষণীয় হবে পড়ুয়াদের কাছে। প্রশাসনের উদ্যোগে স্কুলের নতুন রূপ দেখে খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে পড়ুয়া ও অভিভাবকমহল। হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র বর্মন বলেন, জেলাশাসকের চেষ্টা এবং রায়গঞ্জের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সাহায্যে স্কুলের রূপ বদলাচ্ছে। দু’ হাজার পড়ুয়ার শেখার পরিধি আরও বাড়বে বলে মনে করছি। জেলার অন্যতম নিদর্শন কুলিক পক্ষীনিবাসের গুরুত্ব সম্পর্কে স্থানীয়রা অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। কিন্তু স্কুলের দেওয়ালে কুলিকের পরিযায়ী দর্শনে তাঁরা কিছুটা হলেও প্রভাবিত হবেন। এছাড়াও স্কুলে তৈরি করা হচ্ছে কিচেন গার্ডেন। শ্রেণীকক্ষের বাইরে ও সীমানা পাঁচিলে রংতুলিতে ফুটে উঠছে একটা আস্ত ট্রেন ও ভূগোল, বিজ্ঞানের বিভিন্ন জটিল বিষয়। তার মধ্যে জলচক্র, ঋতুচক্র, চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণের মতো বিষয়গুলি রয়েছে। যেগুলি সবসময় পড়ুয়াদের নজরে আসবে। তাদের মননে অনায়াসে জায়গা করে নেবে সিলেবাসের জটিল বিষয়গুলি।