সম্পাদকীয়

চিন্তায় রাখছে চণ্ডীগড় মডেল

৩ আগস্ট, ২০০২। নয়াদিল্লিতে বসেছিল বিজেপির জাতীয় সংসদের বৈঠক। এম বেঙ্কাইয়া নাইডুকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি ঘোষণা করতেই ওই বৈঠক আহ্বান। সেদিন দলের তরফে ‘দিল্লি অঙ্গীকার’ ঘোষণা করে দাবি করা হয় যে, ‘হ্যাঁ, আমরা অন্যদের থেকে একেবারে আলাদা একটি রাজনৈতিক দল এবং আমাদের সরকারও একইভাবে অন্যরকম।’ কেন্দ্রীয় শাসন ক্ষমতা দখলের জন্য যখন থেকে কংগ্রেস এবং অন্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলিকে সত্যিকার চ্যালেঞ্জ জানাতে থাকল, তখন থেকে এটাই হয়ে উঠল বিজেপির ‘ক্যাম্পেন থিম’। ২১ আগস্ট, ২০২২। হরিয়ানার পঞ্চকুলায় বিজেপির নতুন দলীয় কার্যালয় ‘পঞ্চকমল’ উদ্বোধন করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। এরপর তাঁর ভাষণে রাজনাথ দাবি করেন, ‘অন্য দলগুলির পার্থক্য তাদের ভিতরে, অন্যদিকে আমাদের বিজেপি অন্যদের থেকে পৃথক একটি রাজনৈতিক দল। অন্যরা স্রেফ ক্ষমতা দখলের জন্য রাজনীতি করে, কিন্তু আমাদের গেরুয়া দলের রাজনীতির লক্ষ্য হল দেশ গঠন।’ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি আরও বলেন, বিজেপি যে মৌলিক চিন্তা ও রাজনৈতিক দর্শনের দ্বারা চালিত, সেটা পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় এবং ডঃ মঙ্গল সেইনের মতো মহান নেতাদের দান। আমাদের রাজনীতির লক্ষ্য নিছক সরকার গঠন নয়, বরং সমাজ ও দেশ নির্মাণ।’ 
রাজ্যে রাজ্যে ‘অপারেশন লোটাস’ দেখার পর ভারতের একজনও সুস্থ চিন্তার মানুষের পক্ষে বিজেপির এসব বড় বড় কথার বিন্দু বিসর্গও আর বিশ্বাস করা সম্ভব কি? বেশি সংখ্যক রাজ্য নরেন্দ্র মোদির তাঁবে রাখতে চলতি এক দশকে কতগুলি ‘সিঙ্গল ইঞ্জিন’ সরকার পদ্ম-হামলার শিকার হয়েছে? কতগুলি আঞ্চলিক দলের চেহারা চরিত্র বদলে দিয়েছে ‘কমল-সন্ত্রাস’? সত্যিই হিসেব রাখা কঠিন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মোদি ‘কংগ্রেস-মুক্ত’ ভারত গড়ার ডাক দিয়েছিলেন। বিজেপিকে পছন্দ করে না, এমন কংগ্রেস বিরোধীদেরও কেউ কেউ খুশিই হয়েছিলেন তাতে। কিন্তু তাঁরা এটা ভাবার সময় পাননি যে, ওটা ছিল মোদি নামক হিমশৈলের চূড়ামাত্র। তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ্য, ‘বিরোধী-মুক্ত’ ভারত নির্মাণ। কংগ্রেস তো বটেই, ওইসঙ্গে নির্বিচারে বাকি রাজনৈতিক প্রতিস্পর্ধীদেরও তিনি সাফ করে ফেলতে মরিয়া। তাঁর বা বিজেপির সামনে তর্জনী উঁচিয়ে রাখার কাউকেই টিকে থাকতে দেবেন না মোদি। এ কোনও কষ্টকল্পনা বা আতঙ্ক নয়, গেরুয়া শিবির প্রতি দিন নানাভাবে এই ধারণায় সিলমোহর দিয়ে চলেছে। গেরুয়া লালসার হাত আর কেন্দ্রে এবং রাজ্যের ক্ষমতাতেই সীমাবদ্ধ নেই, তা প্রসারিত এখন স্থানীয় সরকার দখলের ক্ষেত্রেও।
টাটকা দৃষ্টান্ত চণ্ডীগড়। সামান্য একটি পুর নিগমের মেয়র পদ দখলের জন্যও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ‘হত্যা’ করতে কসুর করেনি মোদি-শাহের পার্টি! ৩০ জানুয়ারি সেখানে মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। হিসেব মতো মেয়র পদে বসার কথা ছিল আপ প্রার্থী কুলদীপ কুমারের। গণনার সময় রেজাল্ট উল্টে দেন স্বয়ং রিটার্নিং অফিসার অনিল ম্যাসি! আপ ও কংগ্রেস জোটের আটটি ব্যালট অন্যায়ভাবে বাতিল করে দিয়ে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী মনোজ সোনকারকে তিনি জয়ী ঘোষণা করেন। স্বভাবতই বিবাদটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। যাবতীয় কারচুপির প্রমাণ পেয়ে সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার মনোজকে পদচ্যুত করে কুলদীপকে মেয়র পদে ফিরিয়েছে। একইসঙ্গে, ম্যাসিকে শোকজ করে শীর্ষ আদালত তাঁর কাছে জানতে চাইবে, এবার কেন তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? সোজা কথায়, নির্বাচনী এবং আইনি জোড়া লড়াইয়ে গোহারা হয়েছে বিজেপি। বিজয়ীর আসনে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকরা। লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভোট-দুর্নীতির কালি মাখল ‘পার্টি উইথ আ ডিফারেন্স’-এর মুখে! এখানেই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, গেরুয়া শিবিরের তরফে মোদি-শাহের শ্রীমুখে চারশোর বেশি (বিজেপি একাই ৩৭০ সহ) আসন জয়ের হুংকারের রহস্য কি? সাংসদ নির্বাচনেও গেরুয়া শিবিরের হাতিয়ার ‘চণ্ডীগড় মডেল’ হলে, বৃহত্তম গণতন্ত্রের পক্ষে তার চেয়ে বড় দুর্ভাগ্য কিছু হবে না।  
7Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মে পরিশ্রম ও ব্যস্ততা বৃদ্ধি। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় অগ্রগতি। অর্থাগম যোগটি অনুকূল।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৫০ টাকা১১২.০৬ টাকা
ইউরো৯১.০৪ টাকা৯৪.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা