সম্পাদকীয়

মোদির হৃদয় কি পাথরে তৈরি!

ভোটের অঙ্ক ছাড়া তিনি কিছুই বোঝেন না। এমনকী রণাঙ্গণে দেশের জওয়ানের মৃত্যুও তাঁকে টলাতে পারে না। তাঁর সরকার শুধুমাত্র খবরের শিরোনাম তৈরি করায় বেশি উৎসাহী। আত্মপ্রচারের শেষ রসটুকু কীভাবে নিংড়ে নিতে হয়, প্রতিনিয়ত সেই অনুশীলন নিজে করেন। তাঁর গোটা দলও সেই পাঠে মগ্ন থাকে। তাই অনন্তনাগে জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে আত্মবলিদান দেওয়া নিরাপত্তা বাহিনীর তিন শীর্ষ অফিসারের জন্য গোটা রাষ্ট্র যখন শোকাহত, ঠিক তখন জি-২০ সম্মেলনের সাফল্য উদ্‌যাপন চলে মহা ধুমধামে। পুষ্পবৃষ্টি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিজেপির সদর দপ্তরে স্বাগত জানানো হয়। এই অসহ্য বৈপরীত্যের ছবি দেখে গোটা দেশ। বিরোধীদলগুলি একযোগে বলতে বাধ্য হয়, জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগে তল্লাশি অভিযান চালাতে গিয়ে আমাদের সাহসী ডিএসপি হুমায়ুন ভাট, মেজর আশিস ধনচক এবং কর্নেল মনপ্রীত সিংহ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জীবন দিয়েছেন। এই বীরদের জীবন উৎসর্গের খবর আসার পরেও প্রধানমন্ত্রী মোদি বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়ে জি ২০-র সাফল্য উদ্‌যাপন করেন কীভাবে? আমাদের শহিদদের জন্য এক মুহূর্তের নীরবতা নেই। অথচ প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্য গাঁদা ফুল রয়েছে। মোদির হৃদয় কি পাথরে তৈরি? কংগ্রেসের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, অনন্তনাগে নিহত মেজর আশিসের মায়ের কথা শুনুন। তাঁর ছেলের এবং অন্য অফিসারদের যদি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট থাকত, তাঁদের প্রাণ হারাতে হতো না। এসব প্রশ্ন নরেন্দ্র মোদির কিছু যায় আসে না। কাশ্মীরে পর পর ঘটনা ঘটে চলে, প্রধানমন্ত্রী নীরবই থাকেন! তিন জনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে ‘রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্ট’ নামে একটি জঙ্গিগোষ্ঠী। তারা লস্কর-ই-তইবার একটি অংশ। অথচ এই সেদিনও সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছে, ২০১৯ সালের আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা অর্থাৎ জম্মু-কাশ্মীরের জন্য বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ কমে গিয়েছে। কাশ্মীরে নাকি এখন শান্তি বিরাজ করছে। ভূস্বর্গ নাকি হাসছে।
কাশ্মীরে গত চার বছরে সাধারণ মানুষ যে কঠিন বন্ধনে জীবন অতিবাহিত করতে বাধ্য হয়েছেন, ইন্টারনেট সংযোগ থেকে স্কুল-কলেজের স্বাভাবিক জীবন যেখানে নিয়মিতভাবে ব্যাহত হয়েছে, বারবার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সে সব কানাকড়িও গুরুত্বের যোগ্য মনে করেননি। বরং তাঁরা ক্রমাগত বলে গিয়েছেন, কাশ্মীরের পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’। আর এই স্বাভাবিকতার আড়ালেই ঘাঁটি গেড়েছে জঙ্গিরা। অথচ, এই ব্যর্থতা আড়ালের জন্য ক্রমাগত মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে কাশ্মীরে শান্তির কল্পিত ছবি প্রচার করা হচ্ছে। কাশ্মীরে গেরুয়া শিবিরের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ক্রমাগত প্রশাসনিক হিংস্রতা বাড়ানো হয়েছে। আর মেরুকরণের লক্ষ্যে ক্ষমতা ও ঔদ্ধত্য জাহির করে দেশময় দেশপ্রেম ও হিন্দুত্বের জিগির তোলা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে তারা রাজনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তাই কাশ্মীরের জনগণের স্বার্থসিদ্ধি হয়নি। লাভবান হয়েছে আরএসএস-বিজেপি এবং অবশ্যই নরেন্দ্র মোদি। গেরুয়া শিবির জানে, স্মৃতি বস্তুটি বড়ই পিচ্ছিল। প্রচারমাধ্যম তাকে যতটুকু জিইয়ে রাখে, মনে করিয়ে দেয়, সেটুকু ছাড়া বাকি সবই বিস্মৃতিসাগরে নষ্ট হয়। স্বভাবতই জনমানসের এই বিস্মৃতিপরায়ণতা রাজনীতির একটি বিরাট সহায়িকা শক্তি। বিস্মৃতির উপর ভরসা করেই রাজনীতির ভাষ্য তৈরি হয়, এবং সেই ভাষ্য সাধারণ মানুষ অকাতরে গ্রহণ করে, লালন ও পালন করে। তাই জঙ্গি দমনের ব্যর্থতা আড়াল করতে পাকিস্তানের দিকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার কৌশল নেয় বিজেপি। অতীতেও তাঁরা একই কৌশল নিয়েছে। ফলে ২০২৪-এর লোকসভার আগে সেই পাকিস্তান জিগির সামনে চলে আসবে কি না, তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে রাজধানীর রাজনৈতিক পরিসরে! বিরোধীদের একটি বড় অংশের ধারণা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোটের আগে তাঁর প্রিয় অস্ত্র উগ্র জাতীয়তাবাদের আবেগকে উস্কে দিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধের জিগির তুলতে পারেন।
বিজেপি জানে, পাকিস্তান জিগির মানেই মুঠো মুঠো ভোট। সেক্ষেত্রে শহিদ জওয়ানদের চিতা কিংবা কবর নিমিত্তমাত্র!
12Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৫০ টাকা১১২.০৬ টাকা
ইউরো৯১.০৪ টাকা৯৪.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা