সম্পাদকীয়

ফের রহস্য, অপেক্ষা যন্ত্রণার

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন এক্স হ্যান্ডেলে একটি খালি পাতা পোস্ট করেছেন। ডেরেক কোনও রহস্যের অবতারণা করেননি, বরং কেন্দ্রীয় শাসকের তরফে তৈরি করা নয়া রহস্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন এইভাবে। সংসদের কথা উঠলেই প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা যায় একটিই কথা—‘গণতন্ত্রের মন্দির’। পবিত্র সদনের সদর দরজায় মাথা ছুইঁয়েই নরেন্দ্র মোদি জীবনে প্রথমবার তার ভিতরে প্রবেশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই নিজেকে দেশের ‘চৌকিদার’ ঘোষণা করেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দেন যে, ভারতের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার দায়িত্ব তাঁর, ভারতই সারা দুনিয়ার গণতন্ত্রকে নেতৃত্ব দেবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল, মোদি মুখে যা বলেন তা করেন না এবং যা করেন মুখে তা বলেন না। তাঁর ডানহাত একটু পরে কী করবে, হয়তো তাঁর বামহাতও জানতে পারে না। ভারতের আজকের প্রধানমন্ত্রী সবেতেই রহস্য এবং চমক সৃষ্টি করতে ভালোবাসেন। তার জন্য তিনি সংসদকেও রেয়াত করেন না। তাঁর অদ্ভুত খেয়ালের শিকার তাঁরই সাধের গণতন্ত্রের মন্দির। 
বাদল অধিবেশন সবে শেষ হয়েছে। দেরি আছে শীতকালীন অধিবেশনের। তারই মাঝে আচমকা ডেকে দেওয়া হয়েছে সংসদের বিশেষ অধিবেশন। ১৮-২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় অধিবেশনের এজেন্ডা বা আলোচ্যসূচি কী? বিরোধীরা জানে না। কারণ এজেন্ডা ঠিক করার জন্য তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেনি সরকার পক্ষ। সোজা কথায়, মোদির পার্টি ও সরকার সংসদের বিশেষ অধিবেশনকে কেন্দ্র করেও একটি রহস্য রেখে দিয়েছে। আচমকা বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের কারণ জানতে চেয়ে কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। ওই চিঠিতে সোনিয়া গান্ধী দাবি করেছেন, বিরোধীদের তরফে উত্থাপিত ইস্যুগুলির উপর সংসদে আলোচনা করতে হবে। আলোচ্য বিষয় হিসেবে দেশের নয়টি জ্বলন্ত সমস্যার উল্লেখ করা হয়েছে—বেহাল আর্থিক পরিস্থিতি, কৃষকদের সমস্যাবলি, চীনের বেপরোয়া আগ্রাসন, মণিপুর সমস্যা, জাতিগণনা, দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর উপর্যুপরি আঘাত, আদানি গোষ্ঠীর দুর্নীতির ব্যাপারে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠন, হরিয়ানাসহ একাধিক রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ এবং হিমাচল প্রদেশে ও মহারাষ্ট্রে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে মানুষের দুঃখকষ্ট। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে সোনিয়া গান্ধী এই আশাই ব্যক্ত করেছেন যে, ‘আশা করি, ইতিবাচক সহযোগিতার ভিত্তিতেই উপর্যুক্ত বিষয়গুলি নিয়ে আসন্ন বিশেষ অধিবেশনে চর্চা হবে।’ জানা গিয়েছে, অধিবেশনের পাঁচদিনের জন্যই সরকারি এজেন্ডা রাখা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে, সোনিয়া গান্ধীর চিঠির প্রতিলিপি সামনে এনে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ দাবি করেন, ‘বিরোধীদের কথাও সরকারকে শুনতে হবে। সরকার একতরফা তার কথাই বলে যাবে আর বিরোধীরা তা শুনবে, এটি আর হবে না। গণতন্ত্রে এই জিনিস চলতে পারে না। বিরোধীদের দাবিও সরকার পক্ষকে মানতে হবে।’ 
এই অধিবেশন আচমকা হলেও, বিরোধীদের মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’ তা বয়কট করছে না। পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে বিরোধীদের তরফে। অর্থাৎ বিরোধীদের বয়কটের সুযোগ সরকার এবার পাচ্ছে না। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি অবশ্য বিরোধীদের বক্তব্যকে ‘অহেতুক রাজনীতি’ বলে নস্যাৎ করতে চেয়েছেন। একইসঙ্গে সোনিয়া গান্ধীকে জবাবি চিঠি দিয়েছেন প্রহ্লাদ। চিঠিতে তাঁর দাবি, সরকার সংসদে আলোচনায় তৈরি। তবে, সোনিয়া যেসব বিষয়ে আলোচনা চেয়েছেন সেগুলি চর্চায় আসবে না। কারণ বাদল অধিবেশনেই সরকার সেসবের জবাব দিয়েছে। সোনিয়া গান্ধীর চিঠির দায়সারা জবাব প্রধানমন্ত্রীর বদলে প্রহ্লাদ যোশি মারফত দিয়েই সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে, বিরোধীদের বক্তব্য এবারও সংসদে কোনও গুরুত্ব পাবে না। সরকারের মাথায় যেসব অসমাপ্ত বদখেয়াল ভর করে আছে, সেগুলিই ঝাঁপি খুলে বেরবে আসন্ন অধিবেশনে। তার মধ্যে থাকতে পারে দেশের নাম থেকে ‘ইন্ডিয়া’ মুছে শুধুই ‘ভারত’ চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব; এক দেশ এক ভোট, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউসিসি) এবং লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আনার মতো বিষয়গুলিও। নয়া তুঘলকি ফরমান আরও কত যে দুর্ভোগ বয়ে আনবে তা নিয়েই চিন্তিত দেশবাসী। নোট বাতিল, লকডাউন এবং আধারের সিঁদুরে মেঘেই যেন আচ্ছন্ন হয়ে আছে ভারতের আকাশ।
12Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

বহু প্রচেষ্টার পর আটকে থাকা কাজের জটিলতা মুক্তি। কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায় বিশেষ উন্নতি। আয় বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৭.৭৯ টাকা১১১.৩৩ টাকা
ইউরো৯০.৯৫ টাকা৯৪.১৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা