রাজ্য

লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাও জালিয়াতদের অ্যাকাউন্টে, ক্ষুব্ধ মমতা

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে এ রাজ্যের বহু স্কুল পড়ুয়ার ‘ট্যাব’ বা মোবাইল কেনার টাকা লোপাট করেছে সাইবার অপরাধীরা। বিষয়টি সামনে আসামাত্র তদন্ত শুরু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। আর তাতেই সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু ‘তরুণের স্বপ্ন’ নয়, জালিয়াতদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘বার্ধক্য ভাতা’, এমনকী ‘কৃষকবন্ধু’র টাকাও। জামতাড়া গ্যাংয়ের মতো সংগঠিত সাইবার অপরাধীরা তা লোপাট  করছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পর নিশ্চিত গোয়েন্দারা। কিন্তু কীভাবে সামনে এল এই জালিয়াতি? নবান্ন সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সরকারি পোর্টালে ঢুকে প্রকৃত প্রাপকের বদলে অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ‘ভূতুড়ে’ সেই সব অ্যাকাউন্টেই ঢুকেছে পড়ুয়াদের ‘ট্যাব’ কেনার টাকা। ইতিমধ্যেই এমন প্রায় ৮০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে। আর সেগুলি পরীক্ষা করতে গিয়ে সামনে এসেছে চোখ কপালে ওঠার মতো এই তথ্য। গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। জানা গিয়েছে, শুক্রবারই শীর্ষ সরকারি আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মমতা—দ্রুত এই ধরনের সমস্যার সমাধান করতে হবে। সমস্ত প্রকল্পে অনুদান দেওয়ার পদ্ধতি ‘লিক প্রুফ’ করার কথাও বলেছেন তিনি। এমনকী তাঁর নির্দেশেই সোমবার থেকেই জালিয়াতদের কোপে পড়া পডুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘ট্যাব’ কেনার টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে বলেও খবর।
সূত্রের খবর, জালিয়াতদের অ্যাকাউন্টে ‘ট্যাব’ কেনার টাকা যাওয়াতেও বিরাট অবাক হননি তদন্তকারীরা। কিন্তু সেখানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বাধর্ক্য ভাতা, কৃষকবন্ধুর টাকাও জমা পড়েছে দেখে তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ। কারণ, পডুয়াদের অ্যাকাউন্টে এসব সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অনুদান যাওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়। আর সেই কারণেই তদন্তকারীদের অনুমান, এই কেলেঙ্কারির নেপথ্যে রয়েছে পেশাদার কোনও গ্যাং। না হলে একের পর এক সরকারি প্রকল্পের টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে পাচার হবে কীভাবে? সাইবার অপরাধে যুক্ত পেশাদাররাই গোটা কাণ্ডের নেপথ্যে, এই সম্ভাবনা প্রবল হতে তোলপাড় শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় পড়ুয়াদের প্রাপ্য টাকা লোপাটের ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতে দেওয়া হচ্ছে।
তদন্তকারীরা বলছেন, এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর ও পূর্ব বর্ধমানে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা ‘লোপাট’-এর ঘটনায় ২০০টিরও বেশি ‘অবাঞ্ছিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট’ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ৮০টি অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৬৪টিতে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পড়ুয়াদের টাকা। এই অ্যাকাউন্টগুলির অধিকাংশই ঝাড়খণ্ড, বিহার, রাজস্থানের মতো ভিন রাজ্যের। তবে বাংলার মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর ও নদীয়া জেলাতেও এমন কিছু অ্যাকাউন্টের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। সূত্রের খবর, যে কায়দায় সরকারি পোর্টালে ঢুকে পড়ুয়াদের হকের টাকা লোপাট করা হয়েছে, তার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, রাজস্থানের আলওয়ার এবং বিহারের গয়া গ্যাংয়ের ‘মোডাস অপারেন্ডি’র যথেষ্ট মিল রয়েছে।
এই পর্বে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া-অশোকনগর এলাকার বেশ কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টেও হানা দিয়েছে জালিয়াতরা। এই এলাকায় শুক্রবার পর্যন্ত মোট ন’জন ছাত্রীর ‘ট্যাব’ কেনার টাকা লোপাটের ঘটনা সামনে এসেছে। 
তদন্তে নেমে পুলিসের নজরে এসেছে উত্তর দিনাজপুর জেলাও। তদন্তকারীরা বলছেন, ২০২২ সালে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা গায়েব হওয়ার একটি মামলার তদন্তভার নিয়েছিল কলকাতা পুলিস। উত্তর দিনাজপুর থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল দুই সাইবার জালিয়াতকে। তারা এখন জামিনে মুক্ত। রাজ্যের কয়েকটি জেলায় ট্যাবের টাকা লোপাটের ঘটনা সামনে আসতেই সেই মামলার কথা মনে পড়েছে তদন্তকারীদের। নবান্ন এবং স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে ওই মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র চাওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিসের কাছে। পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুরের কোনও স্কুলে পড়ুয়াদের সঙ্গে ট্যাবের টাকা সংক্রান্ত কোনও জালিয়াতি হয়েছে কি না, সেই রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর।
24d ago
কলকাতা
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

স্বদেশের বা বিদেশের নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালাভের সুযোগ পেতে পারেন। সব কাজে কমবেশি সাফল্যের যোগ। আয়...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৭৩ টাকা৮৫.৪৭ টাকা
পাউন্ড১০৫.৮৫ টাকা১০৯.৬১ টাকা
ইউরো৮৭.৮২ টাকা৯১.২১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
1st     December,   2024
দিন পঞ্জিকা