রাজ্য

শিয়রে নিশ্চিত মৃত্যু সত্ত্বেও জয়ী ৮৪ ‘মা’

বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: মুখে অক্সিজেন মাস্ক। সদ্য ভেন্টিলেটর থেকে বের করা হয়েছে। মুখে-চোখে স্পষ্ট মৃত্যুর সঙ্গে টানা লড়াইয়ের চিহ্ন। সেই পুনরুজ্জীবিত প্রসূতি ওই অবস্থাতেই চিকিৎসককে দেখে বেড থেকে নামার চেষ্টা করলেন। সিনিয়র গাইনোকোলজিস্ট কাণ্ড দেখে থ। শশব্যস্ত হয়ে বেডের কাছে এগিয়ে এলেন তিনি। ‘করেন কী!’ মুখের মাস্ক ততক্ষণে সরিয়ে নিয়েছেন খানাকুলের বাসিন্দা নাজিবা খাতুন। শ্বাস নিয়ে বললেন, ‘আমি তো ভেবেছিলাম মরেই গিয়েছি। বেঁচে আছি দেখে অবাক লাগছে? এটা আপনাদের জন্যই হল। পায়ে হাত দিতে দিন ডাক্তারবাবু!’ 
পাঁচ হিমোগ্লোবিন নিয়ে হাওড়ার গাববেড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজে এসেছিলেন খানাকুলের নাজিবা। মৃত্যু তখন কড়া নাড়ছে শিয়রে। রক্তচাপ অস্বাভাবিক বেশি। হার্ট ফেলিওরের জন্য তাঁকে রাখতে হয় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে। স্ত্রীকে ওই অবস্থায় দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন স্বামী। বলেছিলেন, ‘ডাক্তারবাবু, আমার বাচ্চার দরকার নেই। বউকে বাঁচান যেভাবেই হোক।’ চিকিৎসকরা তারপর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত দেন, ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থাতেই প্রসব করানো হবে। শেষমেশ তাই হয়। তারপর বাচ্চাটিও কঠিন সময় পার করে এখন অনেকটা সুস্থ। ছুটির অপেক্ষায় রয়েছেন মা ও শিশু দু’জনেই। 
এই কাহিনি নাজিবার একার নয়। এক জানুয়ারি থেকে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে প্রসব হওয়া ৮৪ জন মায়েরই নাজিরার মতো ঘটনা। চিকিৎসক পরিভাষায় এঁরা প্রত্যেকেই চিহ্নিত একটি সরকারি পরিভাষায়—‘ম্যাটারনাল নিয়ার মিস’! সোজা বাংলার এ কথার অর্থ, যাঁদের কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে মৃত্যু। হারতে হারতেও যাঁরা জিতে গিয়েছেন জীবনের লড়াইয়ে। মেডিক্যালের স্ত্রীরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ রামপ্রসাদ দে বলেন, ‘দিবারাত্রের চেষ্টার পরও বেশ কিছু প্রসূতিকে হারিয়েছি। আবার গত পাঁচ মাসে এই ৮৪ জনের কাহিনিও ভোলবার নয়। এঁদের জন্য লড়তে লড়তে মনে হয়েছে, পৃথিবীর অনেক পেশায় মধ্যে চিকিৎসক পেশা আসলে অনন্য।’
চিকিৎসা পরিভাষায় ঠিক কী বলা হয় ‘ম্যাটারনাল নিয়ার মিস’কে? প্রসবকালে বা ছ’সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাতের সময় যেসব প্রসূতি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েও শেষমেশ প্রাণে বাঁচেন, তাঁদের বলা হয় ‘ম্যাটারনাল নিয়ার মিস’! 
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, জানুয়ারি থেকে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ১৯ থেকে ৫১ বছর বয়সী মায়েদের মধ্যে ৮৪ জন নতুন জীবন পেয়েছেন। সকলেই সিসিইউ নয়ত ইডেন বাড়ির অবস্টেটিকস এইচডিইউতে ভর্তি ছিলেন। তিনবার আইভিএফ করেও ব্যর্থ, রক্তের ক্যান্সার, মেনিনজাইটিস, তীব্র রক্তক্ষরণ, হার্টের অসুখ, উচ্চ রক্তচাপ, প্রচণ্ড খিঁচুনি বা একলাম্পশিয়া, একটোপিক প্রেগনেন্সি বা জরায়ুর বদলে অন্যত্র সন্তান আসা, ডিম্বাশয় ফেটে যাওয়া, সেপটিসেমিয়া—জটিলতার মধ্যে কী নেই! 
যেমন হাওড়ার প্রিয়া বৈদ্য। তীব্র খিঁচুনির পর অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন প্রিয়া। সপ্তাহখানেক ছিলেন ভেন্টিলেটরে। বেঁচে যাবেন ভাবাই যায়নি। সদ্য ‘মা’ হওয়া সেই প্রিয়া বলেন, ‘খুব কঠিন সময় গিয়েছে। চিকিৎসকদের জন্য‌ ঩বেরিয়ে আসতে পেরেছি। দু’জনেই ভালো আছি।’   
3Months ago
কলকাতা
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা