রাজ্য

‘দল যেদিন চাইবে, সেদিন প্রশাসনে যাব’

লোকসভা ভোটের আঁচে কর্মব্যস্ত শহর। ঘড়ির কাঁটা ধরে কোনও ইন্টারভিউ নয়। কিছুক্ষণ একেবারে খোলামেলা আড্ডায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বর্তমান-এর প্রতিনিধি রাহুল চক্রবর্তী।

প্রশ্ন: সন্দেশখালি নামটা এখন বড্ড বেশি শোনা যাচ্ছে। খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরেছে গেরুয়া শিবির...।
উত্তর: ১৬টা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র একটি নিয়ে অভিযোগ আসছে। ক্ষোভ মাত্র তিনজনের বিরুদ্ধে। ৫টি বুথ নিয়ে বিরোধীরা লাফালাফি করছে। আর সংবাদমাধ্যমের একাংশ। টিভিতে মুখ দেখাতে হবে বলে বিরোধীরা যা ইচ্ছে, তাই করছে। পরিস্থিতি অশান্ত করে তুলছে। একজন কর্তব্যরত পুলিস অফিসারকে যাঁরা খালিস্তানি বলতে পারে, তাঁদের ভালো করে বাংলার মানুষ চিনে ফেলেছে। সন্দেশখালি নিয়ে ওরা যতই মাতামাতি করুক না কেন, রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রেই তার কোনও প্রভাব পড়বে না। 

প্রশ্ন: কিন্তু ওখানে যা ঘটেছে, ক্ষোভের বিস্ফোরণ নয়?
উত্তর: একমত নই। অভিযোগ থাকলে প্রশাসন সেখানে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে। শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের গ্রেপ্তার হওয়ার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত। আমার প্রশ্ন, এতদিন ধরে যদি ওখানে জোর, জুলুম বা মহিলা নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে সিপিএমের নিরাপদ সর্দার কিংবা বিজেপির বিকাশ সিংহ চুপ ছিলেন কেন? 

প্রশ্ন: শাহজাহানের বিরুদ্ধে দলের তরফে কোনও ব্যবস্থা হবে?
উত্তর:  পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে যখন রেয়াত করা হয়নি, তখন শেখ শাহজাহান কে? আর ওকে গ্রেপ্তার করার দায়িত্ব তো ইডির। কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করছে। রাজ্য পুলিসে ওর বিরুদ্ধে বছরের পর বছর অভিযোগ হয়েছে, অথচ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি... এমন তো নয়। এজেন্সির কাছে স্পষ্ট অভিযোগ থাকলে ওরা অবশ্যই গ্রেপ্তার করবে। যদি আদালতও রাজ্যকে নির্দিষ্টভাবে তেমন কোনও নির্দেশ দেয়, তার পালন হবে। কিন্তু তার আগে অকারণে রাজ্য পুলিসের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে কেন? 

প্রশ্ন: সন্দেশখালি যাবেন?
উত্তর: হ্যাঁ যাব। ৩ মার্চ দলের কর্মসূচি রয়েছে। তারপরেই যাব‌।

প্রশ্ন: একটু লোকসভা ভোটের প্রসঙ্গে আসা যাক।‌ বর্তমান যাঁরা সাংসদ রয়েছেন, তাঁরা সবাই টিকিট পাবেন?
উত্তর: প্রার্থী নির্বাচন করবেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সংগঠনের দিক থেকে বলতে গেলে, সবারই পারফরম্যান্স বিচার হবে।‌ বর্তমান সাংসদের মধ্যে যাঁদের পারফরম্যান্স ভালো, নিশ্চিতভাবে তাঁরা ফের প্রার্থী হবেন। আর যে আসনগুলিতে আমরা পরাজিত হয়েছি, সেখানে নতুন মুখ থাকবে। মহিলা প্রার্থীরা প্রাধান্য পাবেন। সংগঠনের জন্য কাজ করতে পারেন, এমন ব্যক্তিকে বাছাই করা হবে।

প্রশ্ন: দক্ষিণ কলকাতাকে তৃণমূলের রাজনৈতিক শক্তির মাদারল্যান্ড বলা হয়।‌ এখানে প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূল কি একটু সংবেদনশীল?
উত্তর: আমি দক্ষিণ কলকাতার প্রার্থী নই, এটা বলে দিতে পারি।‌ এবার দল কাকে প্রার্থী করবে, সেটা জানা নেই।

প্রশ্ন: তাহলে আপনি ডায়মন্ডহারবারেরই?
উত্তর: ওখানে এতদিন ধরে কাজ করছি। নাগরিক পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছি। মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করছি। তাই চাইব, জন্ম আমার দক্ষিণ কলকাতায় হলেও মৃত্যু যেন হয় ডায়মন্ডহারবারে।

প্রশ্ন: বিধায়কদের প্রার্থী করা হবে?
উত্তর: কিছু জায়গায় তো হতেই পারে।

প্রশ্ন: নরেন্দ্র মোদি বলেছেন ৩৭০ একাই বিজেপি। বাংলায় ৩৫ আসনের টার্গেট। তৃণমূলের ফলাফল কী হবে?
উত্তর: গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা। মানুষ মনে করলে নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রীর গদি থেকে নামিয়ে দিতে দু’মিনিট সময় নেবে না। তবে বিজেপির একা ৩৭০ হাস্যকর। বাংলায় ৩৫টি আসনও বিজেপি পাবে না। গত লোকসভা ভোটের তুলনায় আমাদের ফল বহুগুণে ভালো হবে। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। ১০-১৫ শতাংশ ভোট এদিক-ওদিক হচ্ছে। মানুষের পালস বুঝে আত্মসমীক্ষা তো চলছেই।

প্রশ্ন: ইন্ডিয়া জোট?
উত্তর: ইন্ডিয়া জোটের বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী কংগ্রেস।

প্রশ্ন: ১০০ দিনের কাজে বঞ্চনাকে সামনে রেখেই কি ভোটযুদ্ধে নামছে তৃণমূল?
উত্তর: ১০০ দিন, আবাস যোজনায় বঞ্চনা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা মানুষকে বোঝাব যে, বিজেপি সরকারের টাকা দেওয়ার কথা ছিল, তারা দিল না। উল্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আপনার পাশে দাঁড়িয়েছে। টাকা দিচ্ছেন দিদি, এটা মানুষকে গিয়ে বোঝানো আমাদের কাজ। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আগামী দিনে স্বনির্ভর বাংলা হবে। আমরা দিল্লির কাছে গিয়ে হাত পাতব না। কীভাবে হবে সেটা সময় আসলেই দেখতে পাবেন। বাংলার মানুষ পাশে থাকলেই হবে।

প্রশ্ন: আপনারা তো সহায়তা শিবির খুলে জব কার্ড হোল্ডারদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছেন। সরকারের সঙ্গে তথ্যে পার্থক্য হবে না?
উত্তর: না। কারণ আমরা যে তথ্য পাচ্ছি, সেটা সরকারের কাছে তুলে দেব। ফলে সব তথ্য দু’বার মিলিয়ে নেওয়া যাবে। তালিকা স্বচ্ছ হবে।

প্রশ্ন: আপনি তো দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।‌ রাজ্য প্রশাসনে শামিল হবেন কবে?
উত্তর: আমাকে সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব এখন দেওয়া হয়েছে। সেটা করছি। দল যেদিন মনে করবে, সেদিন প্রশাসনে যাব।

প্রশ্ন: তৃণমূল অন্য রাজ্যে লোকসভা ভোটে প্রার্থী দেবে?
উত্তর: মেঘালয়ে একটি ও অসমে দু’টি আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।

প্রশ্ন: আপনার বিরুদ্ধে চোর স্লোগান দেওয়া হয়। খারাপ লাগে না? কখনও মনে হয় না রাজনীতিতে আসা ভুল হল?
উত্তর: প্রধানমন্ত্রীকেও লোকে চোর বলে। আর আমি কোথায়! ওসবে পাত্তা দিই না। আমি আমার কাজে অবিচল। আজ যাঁরা আমাকে চোর বলছে, তাঁরাই একদিন আমার কাজের জন্য আমার নামের সঙ্গে একটি উপাধি যোগ করে দেবেন।

প্রশ্ন: তৃণমূলে নবজোয়ার-২ হবে? লোকসভায় আপনি রাজ্যজুড়ে প্রচার চালাবেন?
উত্তর: নবজোয়ার ইউনিক। ওই ফরম্যাটে কর্মসূচি একবারই হয়েছে। আগামী দিনে অন্য ফরম্যাটে কর্মসূচি হবে। আর দলের নির্দেশ মেনে আমি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় লোকসভা ভোটের প্রচারে মিটিং, মিছিল করব। আমার বক্তব্য একটাই, বিজেপির জমিদারি মানব না।
7Months ago
কলকাতা
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৯ টাকা৮৪.৮৩ টাকা
পাউন্ড১০৯.৪৭ টাকা১১৩.০৪ টাকা
ইউরো৯১.০৬ টাকা৯৪.২৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা