পুজো ২০২৪

কাশিমবাজার রাজবাড়ি, দেবীর পুজো করেন সাত পুরোহিত

অভিষেক পাল, বহরমপুর: একদা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র কাশিমবাজারের খ্যাতিতেই বহির্বিশ্বে মুর্শিদাবাদ বিখ্যাত ছিল। এখনও স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে কাশিমবাজার রাজবাড়ি। সবুজ গালিচার সামনে দুধসাদা থামের সূক্ষ্ম নকশায় শরতের রোদ পড়ে স্বর্গশোভা তৈরি করছে। বিশাল প্রাসাদের গায়ে নতুন সাদা রঙের প্রলেপ জানান দিচ্ছে পুজো এসেছে। রাজবাড়ির রায় পরিবারের দুর্গাদালান এখন সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।
রাজবাড়ির ভিতর দিয়ে দু’টি পুকুরের পাড় ঘেঁষে দুর্গাদালানে ঢুকতেই শ্রমিকদের ব্যস্ততা চোখে পড়ল। বেলজিয়ান কাঁচের ঝুলন্ত ঝাড়বাতি সামলে বাঁশের মইয়ে উঠে একমনে কাজ করে চলেছেন তাঁরা। ঠাকুরদালানে বসে আছেন বৃদ্ধ পুরোহিত। দেবীর প্রতিমায় রঙের প্রলেপ আগেই পড়েছে। গণেশের গায়ে লাল রঙের প্রলেপ দিচ্ছিলেন শিল্পী। বৃদ্ধ পুরোহিত সেদিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন।
এই পুজোয় গণেশের গায়ের রঙ লাল। ৩০০ বছর ধরে একই নিয়মে পুজো হয়ে আসছে। রথের দিন কাঠামো পুজোর মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়েছে। অনন্ত চতুর্দশীর দিন মৃন্ময়ী প্রতিমায় সাদা রঙ করা হয়। মহালয়ার দিন দেবীর চক্ষুদান করা হয়। একচালার প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। রাজবাড়ির মন্দিরে শুক্লা প্রতিপদ থেকে পঞ্চমী পর্যন্ত তিনজন পুরোহিত চণ্ডীপাঠ করবেন। তিনজন দুর্গানাম জপ করবেন। প্রধান পুরোহিত বিল্ববৃক্ষের শাখার পুজোপাঠ করেন। অর্থাৎ সাত পুরোহিত দিয়ে পুজো চলবে। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস সম্পূর্ণ হয়। সপ্তমীতে ঘট ভর্তি করে প্রতিমায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে কুমারী পুজো ও সধবা পুজো হয়।
রায় পরিবারের সদস্য পল্লব রায় বলেন, ভগবানগোলা বন্দরের পাশে পিরোজপুরে আমাদের পিতৃপুরুষের ভিটেতে দুর্গাপুজো হতো। ১৭৩৫ সালে বর্গীদের আক্রমণে প্রাণভয়ে এখানে পালিয়ে আসেন আমাদের পূর্বপুরুষ অযোধ্যারাম রায়। এখানে বসবাস শুরুর পর রাজবাড়ির দক্ষিণ অংশে পঞ্চমুনির আসন স্থাপন করে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। ১৭৪৫ সালের পর চণ্ডীমণ্ডপ তৈরি হয়। এখনও সেই মণ্ডপে পুজো হচ্ছে। প্রতিপদের দিন পুরনো গঙ্গা অর্থাৎ কাটি গঙ্গা থেকে পবিত্র জল এনে ঘট স্থাপন করে পুজো শুরু হয়। সেদিন থেকে পুরোহিতরা চণ্ডীপাঠ ও দুর্গানাম জপ করতে থাকেন।
সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী-তিনদিনই পৃথক তিন কুমারীকে দেবীরূপে পুজো করা হয়। প্রায় ৪৪ বছর আগে রাজা কমলারঞ্জন রায়ের আমলে ঘাতকের অভাবে বলিদান প্রথা বাতিল হয়। সেই থেকে বলির বদলে দেবীকে রুইমাছের ঝোল ও কাঁচা সন্দেশ নিবেদন করা হয়। তুলট কাগজে হাতে লেখা ৪৫ পাতার প্রাচীন পুঁথি থেকে মন্ত্র পড়ে পুজো হয়। সপ্তমীর দিন সাতরকম, অষ্টমীর দিন আটরকম ও নবমীর দিন দেবীকে নয়রকম ভোগ দেওয়া হয়।
তিনদিনই দেবীকে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়। সাদা ভাতের সঙ্গে থাকে ফ্রাইড রাইসও। ডালভাতের সঙ্গে থাকে পাঁচরকমের ভাজা, আলু-কপির দলমা, পাঁচতরকারি, রুই মাছের ঝোল, শাক, চাটনি, পায়েস ও মিষ্টি। নবমীর দিন ভোগে যুক্ত হয় বোয়াল মাছের ঝোল, মোচার ঘণ্ট, লাউ-চিংড়ি, ইলিশ মাছের ঝোল, ভাপা ও ভাজা। সন্ধিপুজোয় থাকে খিচুড়ি, আলু, বেগুন, পটলভাজা ও মাছভাজা। দশমীতে মহিলাদের সিঁদুর খেলার পাশাপাশি অপরাজিতা পুজো হয়।
6d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সঞ্চীয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৫০ টাকা১১২.০৬ টাকা
ইউরো৯১.০৪ টাকা৯৪.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা