পুজো ২০২৪

পিতৃতর্পণে দামোদরে আজ ভিড় প্রবীণদের, নতুন প্রজন্ম মজে কাশফুলের সঙ্গে সেলফি-রিলসে

সুখেন্দু পাল, বর্ধমান: একসময় এফএম ছিল না। ইউটিউব সার্চ করে  বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের শুদ্ধ মন্ত্রোচারণ শোনার সুযোগ থাকত না। মহালয়ার ভোরে উঠে শুনতে হতো বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। রেডিওয় কান পেতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাদুরমর্দিনী শেষ হওয়ার পরই সাদাকালো টিভিতে মহিষাসুর বধ দেখা যেত। গ্রামে টিভি থাকত হাতে গোনা কয়েকজনের বাড়িতে। মহালয়ার ভোরে সেই পরিবারগুলি হয়ে উঠতে ‘ভিআইপি’। পাড়া ভেঙে পড়ত বাড়ির দরজার সামনে। টিভির সামনে কে বসে মহিষাসুরমর্দিনী দেখবে তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা হতো। সেই যুগ বদলে গিয়েছে। দ্রুতগতিতে ছুটছে যুব সমাজ। কিন্তু মহালয়ার ভোরে এখনও যেন সেই ‘সময়’ থমকে রয়েছে। নুতন প্রজন্মও মহালয়ার ভোরে মোবাইলে অ্যালার্ম দিয়ে রাখে। রেডিওর পরিবর্তে মোবাইলেই অনেকে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলা শোনেন। আর সূর্যের আলো ফোটার আগেই তাঁরা পাড়ি দেয় দামোদরের চরে। সেখানে আট থেকে আশি সকলের ভিড় দেখা যায়। প্রবীণরা পিতৃতর্পণ করেন। যুবক-যুবতীরা কাশবনে সেলফি ও রিলসে ব্যস্ত। ছেলেরা পাজামা-পাঞ্জাবি আর মেয়েরা শাড়ি পরে দামোদরের চরে জমিয়ে আড্ডা দেন। সময় যতই এগিয়ে যাক না কেন মহালয়ার ভোর নতুন প্রজন্মের কাছেও এক অন্য আবেগ বহন করে। তারা যেন এই দিনে পুরনো সময়কেই অনুসরণ করে চলে। 
কথা হচ্ছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অনুপম বৈরাগ্যের সঙ্গে। তিনি বলেন, মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের শুদ্ধ মন্ত্রোচ্চারণ না শুনলে যেন মনে হয় পুজোই আসেনি। সেই ছোট থেকে রেওয়াজ রয়ে গিয়েছে। আগে মা বাবা ভোরে ডেকে দিতেন। এখন আমি নিজে থেকেই উঠি। মহালয়ার সকাল থেকেই যেন পুজোর ঘণ্টা বেজে যায়। বন্ধুদের সঙ্গে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ি  শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। ওইদিন দামোদরের চরে যাওয়া চাই। দুপুরে বাড়ি ফেরা। আরেক ছাত্র সৌম্যদীপ রায় বলেন, বাঙালির আবেগ কখনই পরিবর্তন হবে না। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলা শোনার মাধ্যম বদলেছে। কিন্তু তা শোনার রেওয়াজ এখনও আছে। মহালয়ার ভোরে উঠিনি এমন কোনও বছর আসেনি। ভোর থেকে আমাদের পাড়ায় মন্ত্রোচ্চারণ শুরু হয়ে যায়।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া রাকেশ সেন বলেন, মহালয়ার দিন থেকে আর কাজে মন বসে না। পুজোর গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। মহালয়ার আগের রাতে বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে ফিস্ট সারি। আবার ভোরে উঠে দামোদরের কাশবনে হাজির হওয়া চাই। মহালয়ার ভোর আমার কাছে সম্পূর্ণ অন্যরকম। 
মহালয়ার ভোরে দামোদরের বিভিন্ন ঘাটে তর্পণ করার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দারা হাজির হয়ে যান। এবার নদীতে অনেক বেশি জল রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসন বিশেষ পদক্ষেপ নিচ্ছে। পূর্ব বর্ধমানের পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সিভিল ডিফেন্স এবং পুলিস কর্মীরা ঘাটে ছিলেন। গভীর জলে যাতে কেউ না নামে তার জন্য সতর্ক করা হয়েছিল। দামোদরের পাশাপাশি ভাগীরথীর ঘাটগুলিতেও নজরদারি চালানো হয়। সেখানেও বেশি জলে নামতে দেওয়া হয়নি। একটু অসাবধান হলেই বিপদ হতে পারে। সেই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
নদীর জলে নেমে নতুন প্রজন্ম রিলস বানানোর ঝুঁকি নেয়। অন্য বছর নদীতে জল কম থাকে। তেমন সমস্যা হয় না। এবার দামোদর বিপজ্জনক। তাই নতুন প্রজন্মও এবার সাবধানী। বীরেন্দ্রকৃষ্ণের মন্ত্রোচ্চারণ শুনেই এবারও তাদের সকাল শুরু হয়েছে। আবেগ আর আনন্দের মিশেলে উৎসবের পরিবেশ চারদিকে।
5d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সঞ্চীয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৫০ টাকা১১২.০৬ টাকা
ইউরো৯১.০৪ টাকা৯৪.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা