পুজো ২০২৪

মায়ের চিন্ময়ী রূপ পরীক্ষা করতে বুড়ো মা’র আঙুল কাটতে বলেছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র

দীপন ঘোষাল, রানাঘাট: মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র নাকি কোনও এক সভাসদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘সব জায়গায় তো মায়ের মৃন্ময়ী রূপ দেখি, কোথায় গেলে চিন্ময়ী রূপ দেখতে পাব?’ পরে সেই সভাসদের মুখে রানাঘাটের ‘বুড়োমা’র পুজোর কথা শুনেই ছুটে এসেছিলেন নদীয়ার অধিপতি। রানাঘাটের শর্মা বাড়ির পুজো তাই কেবল মাতৃ আরাধনাই নয়, জেলার ইতিহাসের একটি অধ্যায়ও। তল্লাটের প্রাচীনতম পুজো বলতে এটাই। 
পুজোর শুরু ঠিক কবে, তার লিখিত কোনও দলিল-দস্তাবেজ নেই। ঐতিহাসিকরা বলেন, রানাঘাটের এটাই প্রাচীনতম পুজো। শর্মা পরিবারেরও  দাবি, বুড়োমার পুজোর বয়স প্রায় ৭৬২ বছর। ১২৬২ সালে চাঁচোল থেকে তৎকালীন ব্রহ্মডাঙ্গায় এসে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন রামকুমার চক্রবর্তী। পরিবার জীবনে নিঃসন্তান ছিলেন তিনি। কেবলমাত্র এক পালিতা কন্যা ছিল তাঁর। পরবর্তীকালে ওই পালিতা কন্যার দুই মেয়ে হয়। তাঁদেরই এক মেয়ের বর্তমান প্রজন্ম শর্মা বাড়ির সদস্যরা। যেহেতু অত্যন্ত প্রাচীন এই দেবী দুর্গার আরাধনা, সেইহেতু সূচনাকাল অনুযায়ী মূর্তি পূজোর প্রচলন ছিল না। সে সময় পুজো হতো ঘটে কিংবা পটে। পরে ধীরে ধীরে মূর্তি পুজোর প্রচলন হয়। অন্য সব জায়গায় জমিদার বাড়ি আদলে ঠাকুরদালান, সিংহদুয়ার অথবা প্রকাণ্ড অট্টালিকা থাকলেও শর্মাদের বাড়ি সম্পূর্ণব্যতিক্রমী। প্রাচীনতম পুজো হলেও প্রকাণ্ড অট্টালিকা তাঁদের কোনওদিনই ছিল না। বরং সে যুগে আর্থিকভাবে দুর্বলই ছিলেন তাঁরা। বর্তমান প্রজন্ম আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতার মুখ দেখার পর তৈরি হয়েছে রাজকীয় আদলে ঠাকুরদালান। বর্তমান প্রজন্ম সৌরভ শর্মা চৌধুরী বলেন, ‘পুজোর প্রচলনকাল থেকে নিয়ম ছিল ভিক্ষে করেই পুজোর সংস্থান করতে হবে। দীর্ঘকাল ধরেই আমরা সেই রীতি বজায় রেখেছি। তবে পুরো সংস্থান এখন ভিক্ষে করে হয় না। প্রথমে পাঁচটি বাড়িতে ভিক্ষে করে যা জোগাড় হয় সেটিই পুজোর প্রথম অর্থ হিসেবে বিবেচিত হয়। পূর্বপুরুষদের কাছে শুনেছি, মায়ের চিন্ময়ী রূপ দেখে অভিভূত হয়ে যান রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তখন তিনি নাকি প্রতিমার একটি আঙুল কেটে দেখতে চান সত্যিই মা এখানে বিরাজমান কি না। শোনা যায়, তখন নাকি মাতৃ মূর্তির সেই কাটা আঙুল দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। যা দেখে কৃষ্ণচন্দ্র মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন এবং তাঁর অগাধ বিশ্বাস জন্মায় বুড়ো মায়ের প্রতি।’ 
কিন্তু নাম কেন বুড়ো মা? সৌরভবাবু বলেন, ‘এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর আমাদের পরিবারের কারও জানা নেই। তবে আমাদের বর্তমান যে পদবী শর্মা চৌধুরী তা উপাধিরূপে দিয়েছিলেন খোদ রাজা কৃষ্ণচন্দ্রই। আদতে আমাদের পদবী মুখোপাধ্যায় ছিল বলে শুনেছি।’
শর্মাবাড়ির ব্যতিক্রমী কিছু নিয়মনীতির মধ্যে অন্যতম হল কাদামাটির খেলা। নবমীতে শর্মা বাড়ির ঠাকুরদালান ছাড়াও রানাঘাটের ঘোষ বাড়ি, পালবাড়ি, কাঁসারি বাড়ি এবং একটি বারোয়ারি পুজোয় কাদামাটি খেলতে যান পরিবারের বর্তমান প্রজন্মরা। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, রানাঘাটে প্রথম পাটে ওঠেন বুড়ো মা। সেটা হয় চতুর্থীর দিন। তারপর সর্বত্র ঠাকুর পাটে তোলা হয়। পরিবারের সদস্য সৌরভ শর্মা চৌধুরী বলেন, ‘প্রথম পুজোয় যে ছাঁচ ব্যবহার করে ঠাকুর তৈরি হয়েছিল, আজও সেই ছাঁচেই তৈরি হয় বুড়োমা। একটি প্রাচীন তালপাতার পুঁথি রয়েছে আমাদের। সেই পুঁথির উপর নির্ভর করেই এই পুজো। শোনা যায়, এটিও নাকি প্রায় সাত শতাধিক বছরের প্রাচীন।’  রানাঘাটের শর্মাবাড়ির বুড়ো মা’র প্রতিমা। ছবি: অভি ঘোষ
2d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৯ টাকা৮৪.৮৩ টাকা
পাউন্ড১০৯.৪৭ টাকা১১৩.০৪ টাকা
ইউরো৯১.০৬ টাকা৯৪.২৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা