পুজো ২০২৪

রায়বাড়িতে দেবী এসেছিলেন জল খেতে ৫৫০ বছরের পুজো শান্তিপুরের ঐতিহ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: প্রায় সাড়ে ৫০০ বছর আগের কথা। ভাদ্রের শেষ অথবা আশ্বিনের শুরু। গরমের মারাত্মক দাপট। বাড়ির কর্ত্রী ঘরের কাজ সারছিলেন। হঠাৎ রাস্তা থেকে লালপাড় শাড়ি পরিহিতা এক মহিলা ঢুকে এলেন ঘরের ভিতর— আমায় একটু জল দিবি মা। কী অপরূপ তাঁর মুখশ্রী! খানিক চমকেই গিয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী। সামলে নিয়ে এগিয়ে দিয়েছিলেন খাওয়ার জল। ঢক ঢক করে জল খেয়ে মহিলা বেরিয়ে যাওয়ার পথে গৃহকর্ত্রীকে বললেন, ‘আমি আসি রে। বাইরের ছেলেমেয়েরা অপেক্ষা করছে।’ না, সেদিন কোনও সাধারণ মহিলা আসেননি শান্তিপুরের রায়বাড়িতে। সাধারণ মহিলার বেশে এসেছিলেন সাক্ষাৎ মা দুর্গা। পরে তিনিই গৃহকর্ত্রীকে নির্দেশ দেন দুর্গাপুজোর। জেলার অন্যতম প্রাচীন রায়বাড়ির পুজোর এভাবেই সূচনা হয়েছিল। 
একসময় গৌড়বঙ্গের জমিদার ছিল শান্তিপুরের রায় পরিবার। ভরা মুঘল আমল। শুরু হয় হিন্দুদের উপর অত্যাচার। প্রাণ বাঁচাতে গৃহদেবতা গৌরহরিকে আঁকড়ে জমিদারির মায়া ত্যাগ করে পালিয়ে আসেন চাঁদ রায় এবং তাঁর ভাই গৌরচন্দ্র রায়। আত্মগোপন করেন বংশবেড়িয়া বা বর্তমান বাঁশবেড়িয়ায়। কিন্তু মুঘলরা পিছু ছাড়ার পাত্র নয়। প্রাণ বাঁচাতে গুপ্তিপাড়া হয়ে গঙ্গা পার করে নদীয়ার বাঘআছড়া এবং অতঃপর শান্তিপুরে এসে বসবাস শুরু করেন চাঁদ এবং গৌর। আর্থিক অনটনে শুরু হয় দিনগুজরান। কিছু বছর বাদে ঘটে সেই ‘রোমহর্ষক’ ঘটনা। যেদিন সপরিবারে মর্ত্যে এসে রায়বাড়ির দেউড়ি ডিঙিয়ে প্রবেশ করেছিলেন দেবী দুর্গা। ওইদিন রাত্রে গৃহকর্ত্রী স্বপ্ন দেখেন, দেবী তাঁকে বলছেন, আমি তোর বাড়ি এলাম। আর তুই আমার চিনতেই পারলি না? যাই হোক, এই বছর থেকেই তুই আমার পুজো কর। কল্যাণ হবে তোদের। স্বপ্নেই ওই গৃহকর্ত্রী বলে ওঠেন, আর্থিক অনটনে দু’বেলা হাঁড়ি চড়ে না। এত বড় পুজো, এত কম সময়ে হবে কী করে?
শোনা যায়, দেবীর নিদানে প্রথম বছর কুলোয় ছবি এঁকেই আয়োজন করা হয় উমার আরাধনার। সেই থেকে আজ পর্যন্ত নিয়মিত শান্তিপুরের দত্তপাড়ার রায়বাড়িতে হয়ে চলেছে দেবী দুর্গার আরাধনা। তবে আকর্ষণীয় বিষয়, এই জমিদার বাড়ির পুজোয় দেবী দুর্গার পুজো হলেও সঙ্গে থাকেন না লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী অথবা কার্তিক। কেন এই ব্যতিক্রম? পরিবারের বর্তমান কর্তা উজ্জ্বলকুমার রায় বলেন, যেহেতু ওই ঘটনার দিন দেবী একাই বাড়িতে ঢুকেছিলেন। সেইজন্য আমাদের পুজোয় কেবল দুর্গা, অসুর আর সিংহ থাকেন। সঙ্গে অবশ্য নবপত্রিকা থাকে। 
পারিবারিক ইতিহাস বলছে, দুর্গাপুজো শুরু হওয়ার পর থেকেই অবস্থা ফিরতে থাকে রায়দের। ক্রমশ তারা শান্তিপুরের অন্যতম প্রধান জমিদার হয়ে ওঠে। বিরাট প্রতিপত্তি হয়। তার নিদর্শন আজও দেখা যায়। বাড়ির বহু অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও আজও আট থানের সুবিশাল দালান। 
বর্তমানে বাংলায় অবশিষ্ট জমিদার বাড়িগুলির মধ্যে এত বড় দালান বিরল। আপাদমস্তক শাক্তমতেই পুজো হয় রায়বাড়িতে। তবুও বলির প্রচলন কোনওকালেই ছিল না। বরাবরই এই বাড়িতে ফল বলি হয়। বাংলার অবশিষ্ট অভিজাত বাড়িগুলির পুজোর মধ্যে অন্যতম প্রাচীন শান্তিপুরের গৌরহরি রোডের এই রায়বাড়ির পুজো। 
              রায়বাড়ির প্রতিমা। ফাইল চিত্র
23h 23m ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৮৩ টাকা৮৪.৫৭ টাকা
পাউন্ড১১০.২৬ টাকা১১৩.৮৫ টাকা
ইউরো৯১.৭১ টাকা৯৪.৯১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা