মঙ্গলবার, 24 জুন 2025
Logo
  • মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

ভারত-পাক যুদ্ধ থামানোই জীবনের শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব: ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, এ পর্যন্ত তিনি যতরকম সাফল্য পেয়েছেন এবং যত কৃতিত্ব তাঁকে দেওয়া হয়, তার মধ্যে সবথেকে বড় হল সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়া। একবার দু’বার নয়।

ভারত-পাক যুদ্ধ থামানোই জীবনের শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব: ট্রাম্প

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, এ পর্যন্ত তিনি যতরকম সাফল্য পেয়েছেন এবং যত কৃতিত্ব তাঁকে দেওয়া হয়, তার মধ্যে সবথেকে বড় হল সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়া। একবার দু’বার নয়। ট্রাম্প এই নিয়ে সাতবার বললেন যে, তিনিই ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছেন। আভাসে ইঙ্গিতে ভারত সরকার বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে, কোনও কথায় নয়। পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ অনুরোধেই যুদ্ধবিরতিতে ভারত রাজি হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেকথা বলছেন, সেটা সঠিক নয়, এই মর্মে সরাসরি ভারত সরকারের কেন বিবৃতি আসছে না? এই প্রশ্ন করেছে বিরোধীরা। শনিবারও ট্রাম্প আবার এই একই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। এবার একধাপ এগিয়ে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর এখনও পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব এই যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়া? কেন? তার উত্তরও দিয়েছেন ট্রাম্প টিভি সাক্ষাৎকারে। বলেছেন, কারণ এবার আমি পরমাণু যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছি। তিনি দাবি করেছেন, পরিস্থিতি যেদিকে অগ্রসর হচ্ছিল, সেটা পরমাণু যুদ্ধের দিকেই। আমি বাণিজ্য প্রস্তাবে দু’পক্ষকেই রাজি করিয়েছি। তারপর তারা যুদ্ধ থামিয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই তো ভারতের আমদানি শুল্ক সবথেকে বেশি। অথচ এখন সেই ভারতই আমেরিকার পণ্যের উপর থেকে আমদানি শুল্ক ১০০ শতাংশ কমিয়ে দিতে রাজি হয়েছে। আমাদের সেই প্রস্তাব দেওয়াও হয়েছে।  ট্রাম্পের দাবি, অপেক্ষা করুন। শীঘ্রই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। 
ট্রাম্প কখন এবং কেন বললেন যে, ভারত আমেরিকার পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক শূন্য করে দিতে রাজি হয়েছে? ঠিক যখন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল আমেরিকায় পৌঁছেছেন। তাঁর এই মার্কিন সফরের উদ্দেশ্যই হল বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা। অর্থাৎ ভারত ও মার্কিন সরকারের চুক্তি শীঘ্রই যে স্বাক্ষরিত হতে চলেছে সেটা স্পষ্ট। কিন্তু সেই বৈঠক হওয়ার আগেই ট্রাম্প আগাম সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়ে যথেষ্ট বিব্রত করলেন ভারত সরকারকে। ট্রাম্প বলেছেন, এটাই তো স্বাভাবিক। আমাদের সঙ্গে সবাই ডিল করতে চায়। তবে ভারতের ব্যাপারে আমার কোনও তাড়াহুড়ো নেই। একদিকে ট্রাম্প বলেই চলেছেন যে, ভারত আমাদের শূন্য শুল্ক প্রস্তাব দিয়েছে। আর অন্যদিকে অস্বস্তি এড়াতে ভারত সরকার বলেছে, এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। দুই দেশের আলোচনা চলছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করই বলেছেন, যে কোনও  বাণিজ্য চুক্তি দু পক্ষের জন্যই স্বার্থবাহী হওয়া দরকার। তাই যে কোনও আলোচনাই জটিল। বিদেশমন্ত্রী একথা বললেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট আগেভাগেই বলে দিয়েছেন সিদ্ধান্ত। প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্প কেন বারংবার ভারত সরকারকে  অস্বস্তিতে ফেলার মতো বিবৃতি দিচ্ছেন? এতে তো যা বিরোধী দলগুলিও রাজনৈতিকভাবে মোদি সরকারকে আক্রমণ করতে সুবিধা পাচ্ছে। রাজনাথ সিং শুক্রবার অভিযোগ করেছিলেন যে, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার থেকে পাকিস্তান যে অর্থ সহায়তা নেয়, সেটা আদতে চলে যায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কাছে।  এ বিষয়ে আইএমএফের উচিত তদন্ত করা। শনিবার কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, রাজনাথ সিং এখন ভারতে বসে যে কথা বলছেন সেটা দেশবাসীকে বোকা বানানোর খেলা। কারণ এই গত ৯ মে যখন আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার পাকিস্তানকে ১০০ কোটি ডলার সহায়তা অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিল, সেই বৈঠকে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভারত ভোট দিল না কেন? সেদিন ভোটাভুটির সময় ভারত ভোটদানে কেন বিরত রইল? জয়রাম রমেশ বলেন, আমেরিকার চাপ ও নির্দেশেই ভারতের এই সিদ্ধান্ত।