বুধবার, 25 জুন 2025
Logo
  • বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়ায় আজারবাইজান ও তুরস্ক বয়কটের ডাক ভারতীয় পর্যটকদের

বহু ভারতীয় পর্যটকের স্বপ্নের ট্যুর তুরস্ক এবং আজারবাইজান। তুরস্কের ইস্তানবুল, ক্যাপাডোসিয়া, আঙ্কারা কিংবা আজারবাইজানের বাকু, গাবালা— এগুলি ভারতীয় পর্যটকদের কাছে দারুণ আকর্ষণীয় স্থান।

পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়ায় আজারবাইজান  ও তুরস্ক বয়কটের ডাক ভারতীয় পর্যটকদের

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বহু ভারতীয় পর্যটকের স্বপ্নের ট্যুর তুরস্ক এবং আজারবাইজান। তুরস্কের ইস্তানবুল, ক্যাপাডোসিয়া, আঙ্কারা কিংবা আজারবাইজানের বাকু, গাবালা— এগুলি ভারতীয় পর্যটকদের কাছে দারুণ আকর্ষণীয় স্থান। এবার ওই দু’টি দেশ থেকে ঘৃণায় মুখ ফেরাচ্ছেন ভারতীয় পর্যটকরা। কারণ ওই দু’টি দেশের ভারত-বিদ্বেষী মনোভাব। সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তারা শত্রুপক্ষ পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে। 
দু’টি দেশেরই অর্থনীতির একটা বড় শক্তি পর্যটন। সেই পর্যটনে ভারতীয়দের উপস্থিতি একটি উজ্জ্বল দিক। তাই পর্যটকদের সিদ্ধান্তে মোক্ষম থাপ্পড় খেল তুরস্ক ও আজারবাইজান। এ ব্যাপারে দ্রুত সম্বিত ফিরেছে তাদের। বুঝতে পেরেছে, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে পেটে টান পড়তে পারে। তাই এবার ভারত থেকে পর্যটক টানতে শুরু করেছে কাকুতিমিনতি। তাতেও অবশ্য চিঁড়ে ভিজছে না। একদিকে পর্যটন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক, অন্যদিকে দেশের পর্যটন ব্যবসায়ীরাও বলছেন, ‘বয়কট তুরস্ক এবং আজারবাইজান’। 
পাকিস্তানপন্থী হওয়ায় ইতিমধ্যেই তুরস্ক এবং আজারবাইজানকে বয়কট করার ডাক পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেশের প্রতি সম্মান জানাতে একজোট ভারতীয়রা। সকলেই পরামর্শ দিচ্ছেন, ওই দু’টো অকৃতজ্ঞ দেশে একদম যাবেন না। দেশের অন্যতম একটি বড় ভ্রমণ সংস্থার তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে ওই দুই দেশে বুকিং কমে গিয়েছে ৬০ শতাংশ। যাঁরা ইতিমধ্যেই বুকিং করেছিলেন, তাঁরাও দ্রুত তা বাতিল করছেন। একই দিনে একাধিকবার বুকিং বাতিল হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাটিও পর্যটকদের এই মনোভাবকে সম্মান জানাচ্ছে। তারাও বলছে, খুব বেশি দরকার না হলে আজারবাইজান এবং তুরস্ক এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। 
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কাঁদুনি গাইতে শুরু করেছে তুরস্ক। সরকারিভাবে তারা বলছে, সেদেশের বেশিরভাগ মানুষই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নিয়ে অবগত নয়। তাই পর্যটনে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। ভারতীয় পর্যটকরা আগেও যেমন সুরক্ষা এবং আতিথেয়তা পেতেন, এখনও তাই-ই পাবেন। তাই ট্যুর বাতিল করার কোনও কারণ নেই। তবে আয়ে টান পড়তে চলেছে বুঝেও চুপ করে আছে আজারবাইজান। তাদের এক হাত নিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, সেদেশের জিডিপি’র ১০ শতাংশ আসে পর্যটন থেকে। তাদের দেশে যাওয়া বিদেশি পর্যটকের নিরিখে ভারত তৃতীয়। ২০২২ সালে সেদেশে ৬০ হাজার ৭৩১ জন ভারতীয় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ২০২৪ সালে তা বেড়ে ২ লক্ষ ৪৩ হাজারে পৌঁছেছে। অথচ আজারবাইজানে বিদেশি পর্যটক আসার হিসেবে সেরা ২০ দেশের তালিকায় নেই পাকিস্তান। এদিকে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে সেই দেশটি। এটি ভারতীয়দের আত্মমর্যাদায় আঘাত করেছে। 
ভারতের বিরোধিতা করার পর এখন আজারবা‌ইজান বিপাকে পড়ে কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা বলছে। কিন্তু সেই ধাপ্পা কাজে আসছে না। এই দেশটি ছাড়াও বাকি বিশ্বকে ভারতীয়রা বুঝিয়ে দিচ্ছেন, বিশ্বাসঘাতকের পাশে তাঁরা দাঁড়াতে রাজি নন। দেশের সম্মানই তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় কথা।