নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রায় ১০০ ওষুধ নেই এন আর এস মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরের স্টোরে। ওই হাসপাতাল সূত্রেই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গিয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, হাঁচি-কাশি, জ্বরজালা থেকে অপরিহার্য আয়রন-ফোলিক অ্যাসিড, ব্যথার ওষুধ আবার কোষ্ঠকাঠিন্য ও কৃমির ওষুধ থেকে কেলেস্টেরলের ওষুধও নেই। সবচেয়ে বড় কথা ম্যালেরিয়ার ভরা সময়ে এখন ম্যালেরিয়ার ওষুধই নেই স্টোরে। নেই কোনও ধরনের ইনহেলারও। অমিল কয়েক ধরনের ইনসুলিন, জরুরি অ্যান্টিবায়োটিক, মাল্টিভিটামিনও, এমনকী কিছু অ্যান্টি ক্যান্সার ও থ্যালাসেমিয়ার ওষুধও। এমনকী বহু জরুরি সুগার ও প্রেশারের ওষুধ পর্যন্ত নেই। এই অবস্থা চলছে প্রায় ছ’মাস ধরে। চিকিৎসক মহল সূত্রে এই খবর মিলেছে।
তারা জানিয়েছে, আগে অবস্থা আরও খারাপ ছিল। গুচ্ছ গুচ্ছ জরুরি ওষুধই ছিল অমিল। প্রেসক্রিপশনে লিখে দিলে পাঁচটির মধ্যে তিন-চারটিই মিলছিল না আউটডোরের স্টোর থেকে। কিছুদিন হল পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও একশোটির কাছাকাছি ওষুধ নেই এখনও। তার মধ্যে ১০-১৫টি একেবারে অপরিহার্য। থাকাটা অতি আবশ্যিক। আর না-থাকায় গ্যাঁটের পয়সা দিয়ে কিনতে হচ্ছে হাসপাতাল চত্বরের ন্যায্যমূল্যের দোকান থেকে অথবা আশপাশের খুচরো দোকানগুলি থেকে। এন আর এসের অধ্যক্ষ ডাঃ পীতবরণ চক্রবর্তী বলেন, অবিলম্বে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ইমার্জেন্সি গেট দিয়ে ঢুকেই ডান দিকেই রয়েছে এখানকার আউটডোর বাড়ি। এখানে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়ার ৯টি কাউন্টার আছে। সরকারি তালিকা অনুযায়ী, সেখান থেকে বিনাপয়সায় তিনশোর বেশি ওষুধ দেওয়ার কথা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি হাসপাতালের সব ধরনের পরিষেবা ফ্রি করবার পর আগের থেকে ওষুধ সরবরাহ অনেক বেড়েছিল। এমনকী ক্যান্সার, থ্যালাসেমিয়ার এমন এমন মহার্ঘ ওষুধ বিনামূল্যে মিলছিল এবং মিলছে, যা ভাবনার অতীত। কিন্তু আর্থিক অবস্থা, সময়ে টেন্ডার না করা সহ নানা কারণে গত এক-দুই বছরে ওষুধ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। তার ফল ভুগছে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।
এবার দেখা যাক, কোন কোন জরুরি ওষুধপত্র নেই হাসপাতালের স্টোরে? কয়েকটির তালিকা ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হল। মাল্টিভিটামিন সিরাপ ও ট্যাবলেট—রোগীদের একাধিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। প্যান্টোপ্রাজোল ও ডোপপেরিডন ট্যাবলেট—গ্যাস ও বমি আটকানোর ওষুধ, প্যারাসিটামল সিরাপ—জ্বর ও ব্যথার ওষুধ, প্রোবায়োটিক ও প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল—পেটের অসুখ বা সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত অন্ত্রকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার উপকারী ব্যাকটেরিয়া, রোসুভাসটাটিন ট্যাবলেট: কোলেস্টেরলের ওষুধ, সালবুটামল ইনহেলার ও ট্যাবলেট: শ্বাসকষ্টের ওষুধ, অ্যাসিক্লোফেনাক, ডাইক্লোফেনাক ও আইব্রুফেন: ব্যথার ওষুধ, অ্যামক্সিসিলিন: অ্যান্টিবায়োটিক, বুডেসোনাইড: স্টেরয়ড, ক্লোনাজেপাম: ঘুমের ওষুধ, আইভারমেকটিন: কৃমির ওষুধ, ইঞ্জেকশন গ্লারগিন: ইনসুলিন সহ অজস্র দরকারি ওষুধ।