খেলা

ফিরে দেখা ১৯৮০’র কলঙ্কিত ১৬ আগস্ট, কেন এমন হল, উত্তর আজও খোঁজেন পুষ্পাদেবী

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শ্যাওলাধরা শীর্ণ গলি। ঝাঁ চকচকে কাঁকুড়গাছি নর্থ রোডের সঙ্গে যা একেবারেই বেমানান। ভরদুপুরে ঝিমিয়ে গোটা পাড়া। পড়শির নির্দেশমতো কয়েক পা এগতেই চোখ পড়ে ভাঙাচোরা বাড়ির দিকে। অপরিসর দাওয়ায় সবে দুপুরের ভাত মুখে পুরেছেন বৃদ্ধা। অ্যালুমিনিয়ামের থালায় একটু ভাত, সঙ্গে কাঁঠাল দানা সিদ্ধ। অচেনা পায়ের আওয়াজে ঘোলাটে চোখে মুখ তুলে তাকালেন। মর্মভেদী, বড় অসহায় সেই দৃষ্টি। পরিচয় জেনেই বুঝে নিলেন আসার কারণ। তারপর কোনওরকমে বললেন, ‘কেন এমন হল বলতে পারো?’ গত ৪৪ বছর ধরে এই একই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন পুষ্পা মাইতি। 
চার দশক আগের এক দুপুর। বড় ম্যাচের আগে থরথরিয়ে কাঁপছে কলকাতা। ১৬ আগস্ট ইডেনে মহারণ। কোনওরকমে মায়ের হাতে দু’গাল ভাত খেয়ে ইডেনে ছুটেছিল কার্তিক। কতই বা বয়স? ১৪ কিংবা ১৫। মোহন বাগানের অন্ধ সমর্থক কার্তিক আর বাড়ি ফেরেনি। রাত পর্যন্ত গলির মুখে দাঁড়িয়ে ছটফট করেছিলেন পুষ্পা দেবী। মায়ের মন তো। কু ডেকেছিল বিকেলেই। ততক্ষণে ইডেনের গ্যালারিতে লুটিয়ে পড়েছে কার্তিক। কুঁড়ি থেকে ফুল ফোটার আগেই স্বপ্নের অপমৃত্যু। কার্তিকের ছবি কোলে আঁকড়ে দিন গুজরান করেন পুষ্পাদেবী। পরম যত্নে ফুলের মালা ঝুলিয়ে দেন বিবর্ণ ফটোয়। গলির দেওয়ালে আছড়ে পড়ে মায়ের আর্তি— কেন এমন হল?

‘আর কোনও মায়ের কোল যেন খালি না হয়’
জানালার দিকে তাকিয়ে আজও থমকে যান ওঁরা। দমকা হাওয়ায় উথালপাথাল স্মৃতি। ছবির মতো মনে পড়ে সবকিছু। কতই বা বয়স উত্তমের? তখনও গোঁফের রেখা ওঠেনি। বড় ম্যাচ দেখতে যাওয়ার গোঁ ধরেছিল। খোলা জানালায় বন্ধু এসে দাঁড়াতেই ভাত ফেলে ছুট। মোহন বাগান না জিতলে জীবন বৃথা। গলির মোড়ে ছোট্ট দোকান। হোঁচট খেয়ে মাটিতে ছিটকে পড়েন উত্তম ছাউলে। ‘ওরে মাঠে যাসনে...।’ পড়শি বৃদ্ধার অনুরোধ উপেক্ষা করেই আবার দে ছুট...। গলির ইট, কাঠ, পাথরে ছড়ানো এ গল্প। অনেক রাতে ফুলে ঢাকা মরদেহ পৌঁছয় ছাউলেদের সদরে। পাড়ার কোনও বাড়িতে সে রাতে হাঁড়ি চড়েনি। কান্নার রোল ছড়িয়ে পড়ে এদিক থেকে ওদিক। 
ইডেন গার্ডেন্সের সাদা পাথরের ফলকে জ্বলজ্বল করছে উত্তম ছাউলের নাম। ১৯৮০ সালের বড় ম্যাচে মেঠো দাঙ্গায় প্রাণ হারান সবুজ-মেরুন সমর্থক। আজও টানা বারান্দায় চেয়ারে বসে হাতের তেলোয় চোখের জল মোছেন বৃদ্ধা শম্পারানি। আদরের ছোট দেওরকে চোখে হারাতেন যে। বিড়বিড় করে বলেন, ‘অসহনীয় যন্ত্রণা। খেলার মাঠে আর যেন কোনও মায়ের কোল খালি না হয়।’ এরপর কয়েক মুহূর্ত ভেবে তাঁর আর্তি, ‘জানি, এই রবিবার ফের বড় ম্যাচ। আশা করব, খেলার মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতার রেশ যেন গ্যালারিতে না পড়ে। তাহলেই ফুটবল হয়ে উঠবে সব খেলার সেরা।’
29d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

বহু প্রচেষ্টার পর আটকে থাকা কাজের জটিলতা মুক্তি। কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায় বিশেষ উন্নতি। আয় বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৭.৭৯ টাকা১১১.৩৩ টাকা
ইউরো৯০.৯৫ টাকা৯৪.১৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা