বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর

এবছরও এপার বাংলা মিলিত
হতে পারবে না ওপারের সঙ্গে

সুদেব দাস, রানাঘাট: ‘পাবনা থেকে আগের দিন ঢাকার কমলাপুর গিয়েছিলাম। সারারাত হইহুল্লোড় করে রেল স্টেশনে কাটিয়েছি। তারপর ভোরের আলো ফুটতেই রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে যোগ দিই। সে অনেক বছর আগেকার কথা। তোর মনে আছে? এখনও কি আগের মতো সেই অনুষ্ঠান হয়? মাটির পাত্রে পান্তাভাত, ইলিশ মাছ ভাজার স্বাদও কি একই আছে?’ মঙ্গলবার সকালে কালীনারায়ণপুর কামগাছি রেলগেট সংলগ্ন চায়ের দোকানে বসে বাংলাদেশে থাকা ছেলেবেলার বন্ধুকে ফোনে এই প্রশ্নগুলি করছিলেন অধীরকুমার মণ্ডল। বিপরীত দিক থেকে উত্তর এল, হ্যাঁ মনে আছে। সব আগের মতই আছে। কিন্তু অতিমারীর কারণে গত বছরের মতো এবছরও বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে। তাই মন খারাপ।
ভারত-বাংলাদেশের সৌভ্রাতৃত্বের ‘মৈত্রী’ অনুষ্ঠানে অংশ না নিতে পেরে মন ভারাক্রান্ত অনেক নদীয়াবাসীর। প্রতি বছর বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখের ওই অনুষ্ঠানে বাংলা সংস্কৃতিপ্রেমী বহু মানুষ অংশ নেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মত এবারও তা হচ্ছে না। তাই দুই বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে চায় ভিডিও কলে। দুই দেশের সংস্কৃতিপ্রেমী বাঙালি কবে আবারও একে অপরকে আলিঙ্গন করবেন সেই আশাতে দিন গোনা শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল, পয়লা বৈশাখের দিনই প্রথম ভারত-বাংলাদেশকে রেলপথে আবদ্ধ করে কোলকাতা-ঢাকা যাত্রা শুরু হয় মৈত্রী এক্সপ্রেসের। কিন্তু করোনার কারণে আপাতত সেই রেল যোগাযোগ বন্ধ।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছরের পয়লা বৈশাখের দিন সকালে ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের সুরে বিভিন্ন শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাঙালি বরণ করে নতুন বছরকে। অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে ঢাকার রমনার বটমূল এলাকা। এছাড়াও বাংলা অ্যাকাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বর, শাহবাগ, চারুকলা ইনস্টিটিউট, মৎস্যভবন, হাইকোর্ট এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা উৎসবের চেহারা নেয়। এছাড়াও দেশ জুড়ে থাকে বিভিন্ন বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়। সেখানে বাংলার হারিয়ে যাওয়া কুটির শিল্পের সম্ভার নিয়ে বসেন দোকানিরা। পাশাপাশি বাঙালিয়ানার খাওয়া-দাওয়াতেও থাকে রকমারি আয়োজন। বিশেষ করে পান্তা-ইলিশ পয়লা বৈশাখের অন্যতম আকর্ষণ। আর এ সবকিছুর টানেই জেলার বাঙালিদের অনেকেই নস্টালজিক হয়ে পয়লা বৈশাখের দিনটিতে প্রতিবছর বাংলাদেশে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু এ বছরের সেই চেষ্টায় জল ঢেলে দিয়েছে কোভিড-১৯।
নদীয়া জেলা ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া। দেশভাগের আগে ও পরে অনেকেই এদেশে এসেছেন। তাঁদের আত্মীয় পরিজন অনেকেই এখনও বাংলাদেশের রয়েছেন। পানিখালির বাসিন্দা কলেজ ছাত্র পবিত্র বিশ্বাস বলেন, বাবার কাছে বাংলাদেশের পয়লা বৈশাখ অনুষ্ঠানের অনেক গল্প শুনেছি। বছর তিনেক আগে পাসপোর্ট করেছিও। কিন্তু গত বছর করোনার কারণে বাংলাদেশ যাওয়া হয়নি। এ বছরও ভিসা মেলেনি। আগামী বছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার ইচ্ছে আছে।
বরিশালের বাসিন্দা আরতি মণ্ডল ফোনে বলেন, নববর্ষের ভোরে আলো ফোটার আগেই ঢাকা শহর কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ১৯৭১সালে দেশের স্বাধীনতার পর প্রথম মহামারীর কারণে এই অনুষ্ঠানে ছেদ পড়েছে। তবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন আগেভাগেই রমনার বটমূলে বেশ কয়েকটি প্রতীকী অনুষ্ঠান করেছে। তার ভিডিওগ্রাফি পয়লা বৈশাখের সকাল থেকে সম্প্রচার করা হবে।

15th     April,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ