বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
ভ্রমণ
 

মানসের জঙ্গলে 
সাইকেল সাফারি

তাপস কাঁড়ার

পাহাড়ের পাদদেশে অসমের বনাঞ্চল মানস। ভুটান থেকে নেমে আসা মানস নদী বয়ে গিয়েছে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। এই নদীর সৌজন্যে বনাঞ্চল পরিচিত হয়েছে নদীর নামেই। দেশের জাতীয় উদ্যানগুলির অন্যতম এটি। দীর্ঘদিন বোড়ো আন্দোলনের চক্রব্যূহে পড়ে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে জঙ্গল থেকে বন্যপ্রাণের। সে পর্ব শেষে আবার নতুন করে প্রাণ পেয়েছে মানস। শুভ ভাবনায়, শুভ বুদ্ধিতে শুভ মানসে ফিরেছে জঙ্গল।
মানস জাতীয় উদ্যান ফিরে পেয়েছে তার হারানো গৌরব। ধীরে ধীরে পর্যটকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে এই জঙ্গল। এবার পর্যটকদের অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ দিতে সম্প্রতি শুরু হয়েছে সাইকেল সাফারি। দেশের মধ্যে প্রথম এই উদ্যোগ। সুরক্ষার কথা ভেবে জঙ্গলের গভীরে নয়। ঠিক জঙ্গলের সীমানা ধরে অর্থাৎ বাফার জোনে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে পারবেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। জঙ্গলের পাশাপাশি গ্রাম দর্শনও করতে পারবেন তাঁরা। সব মিলিয়ে ২০ কিমি পথ নির্ধারিত হয়েছে সাফারির জন্য। আগে নাইট সাফারিও হতো, তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এখন তা বন্ধ। 
মানস জাতীয় উদ্যান ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা ভুক্ত। ইতিহাস বলে এই অরণ্য এক সময় ছিল কোচবিহারের রাজ পরিবারের শিকার ক্ষেত্র। ১৯২৮ সালে ব্রিটিশদের হাতে ৩৬০ বর্গ কিমি বনাঞ্চল স্যাংচুয়ারি হিসাবে ঘোষিত হয়। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকার বায়ো রির্জাভ ঘোষণা করে। তারপর অরণ্যের পরিধি বাড়তে থাকে। ১৯৮৫ সালেই বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা দেওয়া হয় এই অরণ্যকে। কিন্তু বোড়ো আন্দোলনের সময় জঙ্গলের ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যায়। ফিরিয়ে নেওয়া হয় বিশ্ব ঐতিহ্যের গৌরব। সব শান্ত হলে আবার আগের অবস্থায় ফেরে মানস। হারানো গৌরবও ফিরে পায়। ১৯৯০ সালে জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা পায় ২ হাজার ৮৩৭ বর্গ কিমি বনাঞ্চল। তার মধ্যে  ৫০০ বর্গ কিমি বনাঞ্চলকে কোর এরিয়া ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে ৩০টি বাঘের আবাস ভূমি এই জঙ্গল। তার সঙ্গে রয়েছে গণ্ডার, বুনো মোষ, হাতি, সোনালি বাঁদর, পিগমি হগের মতো লুপ্তপ্রায় প্রাণী। গত মার্চের ১৭ তারিখ থেকে অক্টোবরের ২ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ ছিল এই উদ্যান। দীর্ঘ মহামারী পর্ব কাটিয়ে পর্যটন ফিরছে স্বাভাবিক ছন্দে।  প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের জঙ্গল ভ্রমণ আকর্ষণীয় করে তুলতে সাইকেল সাফারির উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন, পার্ক সংরক্ষক অমল শর্মা। প্রতিদিন সকাল ৮ টায় সাইকেল সাফারির শুরু। প্রারম্ভিকভাবে সাইকেল প্রতি ভাড়া ধার্য হয়েছে ১০০ টাকা। এই ভাড়ায় মোটামুটি ঘণ্টা দু’য়েকের জন্যে সাইকেল নিয়ে  ঘুরে বেড়াতে পারেন। তবে একা নয়, সঙ্গে থাকবে উদ্যানের কোনও কর্মী। তিনিই আপনাকে জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। চিনিয়ে দেবেন গাছপালা, পাখ পাখালিদের। দেখা হয়ে যেতে পারে সোনালি বাঁদর বা গ্রেট হর্নবিলের সঙ্গে। ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হলে চা পাবেন গ্রামের কোনও বাড়িতে বা দোকানে। ইচ্ছে হলে সকালের ব্রেকফাস্টও সারতে পারেন বোড়ো কুইজিনে। প্রথম পর্যায়ে পর্যটকদের জন্য ১২টি সাইকেল বরাদ্দ করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে এই সংখ্যা বাড়বে বলে জানিয়েছেন পার্ক আধিকারিকরা।
তবে সুখবর এটাই যে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। পর্যটক বাড়লেও প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে সংযত রয়েছে বন দপ্তর। বাঁশবাড়ি রেঞ্জের রেঞ্জার অলকেশ দাস জানালেন, গত জানুয়ারি মাসে সাফারির জন্য ১৭৫টি গাড়িকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়েছিল।

14th     March,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ