বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর

বেয়াদপ আবহাওয়াই দোসর
আলুতে ধসার হানা, উৎকণ্ঠা

নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: নিম্নচাপের বৃষ্টিতে প্রথমবার আলুবীজ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। হাল ছাড়েননি চাষিরা। আবার জমিতে বীজ লাগান। সরকার নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ মূল্যের চেয়েও বেশি দাম দিয়ে চাষিরা সার কিনেছিলেন। আলুর বীজও দু’বার কিনতে হয়েছিল। আশা করেছিলেন আলু তুলে ক্ষতি পুষিয়ে নেবেন। আলুচাষের অনুকূল ঠান্ডা বজায় থাকলে দেরিতে বসানো হলেও আলুর ভালো ফলন হবে। কিন্তু চাষিদের সেই আশা ভঙ্গ হয়েছে। দেরিতে চাষ শুরু করায় গাছ বাড়েনি। এরমধ্যে মেঘলা বৃষ্টি ও লাগাতার কুয়াশার জন্য গাছে নাবিধসার আক্রমণ শুরু হয়েছে। ফলে আলু চাষিরা ভয়ঙ্কর সঙ্কটে পড়েছেন।
মেমারির ইছাপুর এলাকার মাঠে গিয়ে দেখা গেল, অনেক জমির আলু গাছের পাতা লাল হয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও আবার পাতা শুকিয়ে গিয়েছে। চাষিরা বলেন, নবিধসা ছড়িয়ে পড়লে সব শেষ হয়ে যাবে। দেরিতে চাষ হওয়ায় গাছ বাড়ছে না। অন্যান্য বছর এই সময় গাছ বড় হয়ে যায়। ২০ থেকে ২৫ দিন পর থেকে আলু তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এবছর গাছ বাঁচিয়ে রাখা যাবে কি না তা নিয়েই চিন্তা রয়েছে। গাছ থাকলেও ফলন অর্ধেকের কম হয়ে যাবে। মেমারির চাষি নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ছ’বিঘা জমিতে আলু রয়েছে। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ২৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে। দু’বার চাষ করতে হয়েছে। তারপরেও ফলন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আলু চাষের জন্য ঠান্ডা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু মাঝেমধ্যেই গরম অনুভূত হচ্ছে। ফলে চাষ নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হচ্ছে।
চাষিরা বলেন, নাবিধসার আক্রমণ শুরু হয়েছে। তা রুখতে কীটনাশক দিতে হবে। তার জন্য অতিরিক্ত খরচ হবে। এত টাকা খরচ করেও আলুর ফলন ও ভালো দাম না পাওয়া গেলে আমাদের পথে বসতে হবে। শেখ আসরফ নামে এক চাষি বলেন, অন্যান্য বছর এক বিঘায় ১০০ বস্তার মতো আলু হয়। কিন্তু এবার যা পরিস্থিতি তাতে ৪০ থেকে ৫০ বস্তা হবে না বলে মনে হচ্ছে। ফলন কম হওয়ায় হয়তো দাম বেশি পাওয়া যাবে। কিন্তু তাতেও সবাই লাভ পাবেন না। কারণ অনেক জমির আলু বাড়বে না। ছোট সাইজের আলুর দাম বেশি পাওয়া যায় না। চাষ করতে এবছর সবকিছুই অনেক বেশি দামে কিনতে হয়েছে।  বিশেষ করে সার নিয়ে কালোবাজারি করা হয়েছে। ১০:২৬:২৬ সার অনেক বেশি দামে কিনতে হয়েছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান জেলার গ্রামীণ অর্থনীতি অনেকটাই আলু চাষের উপর নির্ভরশীল। তাই বহু চাষি সমস্যায় পড়ে যাবেন। অন্যান্য বছর ৭৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। এবছর ৬৬ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। প্রথমবার গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর অনেকে দ্বিতীয়বার চাষ করেননি। কৃষি আধিকারিকদের দাবি, এবছর অনেক বেশি চাষি বিমা করেছেন। তাঁরা কিছুটা হলেও ক্ষতিপূরণ পাবেন। যদিও চাষিরা বলেন, চাষ করে যে লাভ হয় তা বিমার টাকায় পাওয়া যায় না। তাছাড়া আলু মাঠ থেকে তোলার পর মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। এবছর প্রথম থেকেই চাষিদের সেই শান্তি উধাও হয়ে গিয়েছে।

24th     January,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ