বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিনোদন
 

সামিউলের স্বপ্নপূরণ

স্বরলিপি ভট্টাচার্য: সহজ পাঠের গপ্পো। মানস মুকুল পালের পরিচালনায় এই ছবি কয়েকবছর আগে বাংলা ছবির বর্ণমালায় যেন নতুন অক্ষর যোগ করেছিল। সামিউল আলম ও নুর ইসলাম— সে ছবির দুই মুখ্য অভিনেতা মানসের চমকে দেওয়ার মতো আবিষ্কার। সেদিনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সামিউল আজ বেড়াচাঁপা কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয় চলছে সমানতালে। অভিনয়কেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই কিশোর। পুজোয় মুক্তি পাবে দেব অভিনীত ‘বাঘাযতীন’। অরুণ রায় পরিচালিত এই ছবিতে ক্ষুদিরামের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সামিউল।
‘আমাকে প্রথমে ফোন করে বলা হয়েছিল এই ছবিতে একটা চরিত্রের জন্য ভাবা হচ্ছে। যখন জানতে পারি ক্ষুদিরামের চরিত্রের জন্য আমাকে ভাবা হয়েছে, গায়ে কাঁটা দিয়েছিল। ক্ষুদিরামের জীবন কাহিনি ছোটবেলায় বইতে পড়েছি। এমন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর চরিত্রে অভিনয় করতে পারব ভেবেই খুব ভালো লেগেছিল,’ বললেন সামিউল। কাজের প্রয়োজনে নিত্য তাঁর কলকাতায় যাতায়াত। বাড়ি বেড়াচাঁপায়। কাজ মিটিয়ে শেষ ট্রেন ধরতে পারলে বাড়ি ফেরা হয়, নাহলে মানসের বাড়িতেই থেকে যান। অভিনয় করবেন এমন কোনও স্বপ্ন কোনওদিনই ছিল না সামিউলের। তাঁর কথায়, ‘এখন আমি অভিনয়টাই করতে চাই। কিন্তু অভিনয়ের সঙ্গে আমার পরিবারের কেউ কোনওদিন যুক্ত ছিল না। অভিনয় কী তাও কেউ জানত না। টিভি দেখত বাড়িতে, এটুকুই। মানসকাকু আমাদের দীর্ঘদিন শিখিয়েছিল। তারপর যখন সহজ পাঠের গপ্পো রিলিজ করল, তখন দেখল সকলে। যখন জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলাম, তখন আমি জানতাম না জাতীয় পুরস্কার কী। এখন যত বড় হচ্ছি বিষয়গুলো বুঝতে পারছি।’
প্রথম ছবিতেই জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু তারপরও যে ঘন ঘন কাজ এসেছে তা নয়। ‘প্রথম ছবির পর দু’বছর কোনও কাজ পাইনি। তারপর রাজ স্যরের (চক্রবর্তী) পরিচালনায় ‘অ্যাডভেঞ্চার অব জোজো’ করি। অনেক প্রশংসা পেয়েছিলাম। তখন মনে হচ্ছিল আমি হয়তো অভিনয়টা করতে পারছি’, সহজ ভাবে কথা বলতে পারা সামিউলের সহজাত। সদ্য রাজ চক্রবর্তীর ‘আবার প্রলয়’ ওয়েব সিরিজেও প্রশংসিত সামিউলের কাজ। কিন্তু এই পেশার আর্থিক অনিশ্চয়তা ভাবায় না? স্পষ্ট বললেন, ‘আমি তো গ্রামের ছেলে। সেই কারণে ভাবনাটা এখনই আসে। গ্রামে ১৬ বছর বয়স হওয়া মানেই পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করতে হবে। আমার বন্ধুরা ১৬ বছর বয়স থেকেই কাজ করে। অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কাজ করে বাড়িতে টাকা দিচ্ছে। আমাকে বাবা তেমন চাপ কখনও দেয়নি। সেক্ষেত্রে আমার একটু সুবিধে হয়েছিল। কিন্তু বাড়িতে টাকা দিই। তবে এখনই টাকা নিয়ে যে খুব ভাবি, তা নয়। কিন্তু আমার সব খরচ নিজেই চালাই।’ 
সবেমাত্র কয়েকটা কাজ করেছেন। এর মধ্যেই আলাদা করে সকলের নজরে পড়েছেন সামিউল। কখনও মনে হয়েছে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ পেলে ভালো হতো? সামিউল বললেন, ‘শেখার জায়গাটা পুরোটাই মানস কাকুর কাছ থেকে পাই। কীভাবে অভিনয় করতে হয় সেটা বোঝায় আমাকে। ভালো সিনেমা দেখায়। ভালো অভিনেতাদের দেখে শিখতে বলে। আমার বাড়ি অনেক দূরে তো। ইচ্ছে থাকলেও থিয়েটার করার সুযোগ হয়নি। এখনও পর্যন্ত কাজের জন্য কাউকে বলিনি। কিন্তু চালাতে তো হবে। ফলে ভবিষ্যতে হয়তো বলতে হবে।’
পুজোয় ঠাকুর দেখার আনন্দ, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার পাশাপাশি নিজের ছবি মুক্তি সামিউলকে অন্যরকম আনন্দের সাক্ষী করবে। আসলে এই ছবি তাঁর কাছে স্বপ্নপূরণ। কেন? হেসে বললেন, ‘দেবদার সঙ্গে প্রথমবার কাজ করলাম। দারুণ অভিজ্ঞতা। বন্ধুর মতো মিশে গিয়েছিল। দেবদা যে ছবিতে অভিনয় করছে, সেই ছবিতে আমিও অভিনয় করছি, এ তো কখনও ভাবিনি। তাই আমার কাছে বিষয়টা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো।’

25th     September,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ