বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিনোদন
 

ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে জমজমাট অভিযান
স্বস্তিক সঙ্কেত

অভিনন্দন দত্ত: লন্ডন শহরে একের পর এক অভিবাসী খুন হচ্ছেন। এদিকে শহরে ছড়িয়ে পড়েছে অতীতে তৈরি এক মারণ ভাইরাস। ভাইরাসটিকে ব্যবহার করে হিটলারের আদর্শে অনুপ্রাণিত এক অপরাধচক্র ইউরোপ থেকে বিদেশি রক্ত সাফ করে প্রকৃত আর্য রক্ত প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর। সঙ্কেতের আকারে লুকিয়ে রয়েছে সেই ভাইরাসের প্রতিষেধক। উৎসাহী পাঠককে নিশ্চয়ই এর বেশি বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বইয়ের পাতা থেকে রুদ্র-প্রিয়মের অভিযান এবারে বড়পর্দায়। গল্প কোনও নির্দিষ্ট খাতে চলতে থাকলে তা দর্শকের কাছে অনেক সময়েই বাড়তি চমক হাজির করতে পারে না। কিন্তু কাহিনিতে ইতিহাস, সঙ্কেতলিপি, বিজ্ঞান এবং সর্বোপরি রহস্যের গন্ধ মিশে গেলে তা দর্শককে আকর্ষণ করাটাই স্বাভাবিক। পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালের সাম্প্রতিক ছবি ‘স্বস্তিক সঙ্কেত’-এ সেটাই ঘটেছে। লন্ডনের প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, সঙ্কেত, হিটলার ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সাক্ষাৎ, এক মারণ ভাইরাস এবং বাঙালির অভিযান—সবকিছুকে চিত্রনাট্যে গেঁথে এক টানটান থ্রিলারের আবহ তৈরি হয়েছে এই ছবিতে।
রুদ্রাণী ওরফে রুদ্র (নুসরত জাহান) শখের ক্রিপ্টোগ্রাফার। পেশায় ব্যাঙ্কে চাকুরে রুদ্রাণী তার বইপ্রকাশ উপলক্ষে লন্ডনে হাজির হয়। সেখানে এক তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিতে চাকরি করে রুদ্রাণীর স্বামী প্রিয়ম (গৌরব চক্রবর্তী)। ইতিমধ্যে ডঃ সিগমন্ড শুমাখার (শতাফ ফিগার) রুদ্রাণীর সঙ্গে দেখা করেন। জানা যায়, শুমাখারের দাদুর তৈরি ক্যান্সারের প্রতিষেধক ফর্মুলা লুকিয়ে রাখা আছে সঙ্কেতের আকারে। রুদ্রাণীকে তা উদ্ধার করে দিতে হবে। সেই ফমুর্লা উদ্ধার করার পর রুদ্র-প্রিয়ম জড়িয়ে পড়ে এক মারাত্মক ষড়যন্ত্রে। তারা বুঝতে পারে, ক্যান্সারের প্রতিষেধক নয়, ওই ফুর্মলা থেকে তৈরি হয়েছে মারণ ভাইরাস। এদিকে প্রতিষেধক খুঁজতে গিয়ে আজাদ হিন্দ বাহিনীর রেডিও ইঞ্জিনিয়ার সত্যেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাতি সুভাষ চট্টোপাধ্যায়ের (দ্বৈত চরিত্রে রুদ্রনীল ঘোষ) সাহায্য চায় রুদ্রাণী। এরপর প্রতিষেধকের সন্ধানেই গল্প এগিয়েছে পরিণতির দিকে। 
বাংলায় এই ধরনের ছবি তৈরির প্রয়াস প্রশংসনীয়। দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের ‘নরক সঙ্কেত’ উপন্যাস অবলম্বনে এই ছবির চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন সৌগত বসু। সিনেমার প্রয়োজনেই চিত্রনাট্যে মূল গল্পের বেশ কিছু রদবদল ঘটানো হয়েছে। তবে কয়েকটি জায়গায় যৌক্তিকতার অভাব রয়েছে। লন্ডনে পরপর খুনে পুলিসের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে ফর্মুলা লুকোতে সত্যেন্দ্রনাথের পদক্ষেপগুলোতেও বিশ্বাসযোগ্যতার ছাপ নেই। কিছু কিছু দৃশ্যে চরিত্রদের তথ্য সমৃদ্ধ সংলাপ বলার ধরনও চাপিয়ে দেওয়া মনে হয়।
এই ছবিতে নুসরতের অভিনয় বেশ স্মার্ট। গৌরবের সঙ্গে তাঁর জুটি ভালো লাগল। স্বল্প পরিসরে শতাফও মন্দ নন। অন্যদিকে, নেতাজির ভূমিকায় অভিনয় শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই পরীক্ষায় তিনি পাশ করেছেন। নেতাজির লুকের জন্য মেকআপ শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডুর ধন্যবাদ প্রাপ্য। দ্বৈত চরিত্রে রুদ্রনীলও খারাপ নন। তবে রুদ্রনীলের বয়স্কলুকের মেকআপ আরও ভালো হতে পারত। রাজানারায়ণ দেবের আবহসঙ্গীত ভালো হলেও ছবিতে গানের প্রয়োজন ছিল না। রহস্য সমাধানের বিভিন্ন মুহূর্তে আধুনিকতার ছাপ রাখতে টুবানের সিনেমাটোগ্রাফিকে যোগ্য সঙ্গত করেছে ভিএফএক্স। সায়ন্তনের শুরুর দিকের ‘আলিনগরের গোলকধাঁধা’ ও ‘যকের ধন’-এর মতো ছবিতে ছিল ধাঁধার মাধ্যমে রহস্যোদ্ধার। এই ছবিও সেই গোত্রেই জায়গা করে নিল।

25th     January,   2022
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ