বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
সিনেমা
 

খুকু এসেছে এবং হেসেছে
 আয় খুকু আয়

অদিতি বসুরায়: দরিদ্র কিশোরীটি প্রেমে পড়েছে সাহায্য করতে এগিয়ে আসা যুবকটির। মেয়েটির বিশ্বাসকে তুরুপের তাস করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে তার অজান্তে। পরে পুরো ঘটনাটি ভাইরাল হয়। সামাজিক ও পারিবারিক হেনস্তা সহ্য করতে না পেরে, মেয়েটিকে ঝুলে পড়তে হয় গলায় ফাঁস দিয়ে— এই ঘটনা এখন নিয়মিত খবরের কাগজ, টেলিভিশনের পর্দা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আসছে। কাজ দেওয়ার নাম করে ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা নকল ‘এনজিও’র মাধ্যমে রমরমিয়ে চলছে নারীপাচার চক্র। এই পরিস্থিতিতে অসহায়, নিঃসম্বল বাবা কী করবে? সংসারে শুধু ওই মেয়ে ছাড়া যার কেউ ছিল না—কোথায় যায় সে সুবিচার পেতে? সদ্য সন্তানহারা পিতার সব রাগ গিয়ে পড়ে মোবাইল ফোনের ওপর। একের পর এক মোবাইল চুরি করতে থাকে সে—সেগুলোকে ইটে, পাথরে আছড়ে ভাঙে। যে আইন ব্যবস্থা তার কিশোরী কন্যার খুনের জন্য যে দায়ী তাকে খুল্লামখুল্লা ঘুরে বেড়াতে দেয় অথচ মোবাইল চুরির অপরাধে দু’বছরের  জেল হয়ে যায় নির্মল মণ্ডলের। এই নির্মলের মেয়ে শতাব্দী মণ্ডল (বুড়ি) নিজেকে মেরে ফেলতে বাধ্য হয়েছে প্রেমিক সঞ্জয়ের চক্রান্তে। দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজনৈতিক নেত্রী, পুতুলরানি দাসের বোনপো এই সঞ্জয়। পুতুল ও তার দলবল নারীপাচার সহ নানা অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। যথারীতি ধরাকে সরা জ্ঞান করার দেমাকে অন্ধ। সামান্য হকার নির্মল কি পারবে এদের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে মারার অভিযোগ প্রমাণ করতে ? 
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও দিতিপ্রিয়া রায় অভিনীত, ‘আয় খুকু আয়’ ছবিটির গল্প ইদানীংকালের অন্যতম জ্বলন্ত সমস্যা—সাইবার ব্ল্যাকমেলিংকে কেন্দ্র করে বুনেছেন পরিচালক শৌভিক কুণ্ডু।  কেবল এই সামাজিক বার্তাই নয়—এই প্রথম কোনও মেইনস্ট্রিম বাংলা ছবিতে অতিমারীর কারণে লকডাউন ও তার জেরে দিন আনি-দিন খাই গোত্রের মানুষের অসহায় অবস্থার ছবি দেখানো হল। নির্মল (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) রেলের হকার। টাইম টেবিল, বাচ্চাদের ছবির বই সে বিক্রি করে। মোবাইলের জমানায় বই বেচে দিন চলে না। লকডাউনের কারণে ভারতীয় রেল ও তার সঙ্গে যুক্ত লক্ষ লক্ষ হকার, নিত্যযাত্রীর যে জীবিকা-সঙ্কট তৈরি হয়, তার প্রভাব আজও জারি। যৌবনে নির্মল স্বপ্ন দেখত সে টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রির নায়ক হবে। স্বপ্নপূরণ না হলেও  গাঁ-গঞ্জের স্টেজে সে,  অন্ধ বন্ধু গোঁসাইকে নিয়ে  ‘প্রসেনজিৎ’  হয়ে নাচ-গান করে বেড়ায়। চেহারার মিল থাকলেও টাক পড়ে যাওয়ার কারণে, সবাই তাকে ‘টেকো প্রসেন’  বলে ডাকে। এমনকী, নায়ক প্রসেনজিৎ স্বয়ং তাকে প্রশ্রয় দেন। এই ছবির আর একটি চমক, প্রসেনজিৎ এখানে নিজের ভূমিকাতেও কাজ করেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই এই ছবিতে তাঁর মেক-আপ নিয়ে চর্চা চলছে। নিজেকে ছাপিয়ে গিয়ে কাজ করেছেন তিনি। সোহিনী সেনগুপ্ত, দেবপ্রতিম, শঙ্কর দেবনাথ খুব ভালো কাজ করেছেন। আর দিতিপ্রিয়া মেয়েটিকে নজরে রাখুন। এই মেয়ে যদি ঠিকমতো কাজ করতে থাকে তবে, ভবিষ্যতে টালিগঞ্জের মুকুট তার মাথায় উঠতে বাধ্য! সপ্রতিভ ও স্বাভাবিক অভিনয় ক্ষমতায় সে ‘ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসেনজিতের সঙ্গে সমানে সমানে লড়ে গিয়েছে। একেবারে শেষের মেলোড্রামাটিকে বাদ দিতে পারলে ও অল্পস্বল্প ত্রুটি বিচ্যুতি বাদে, ‘খুকু’ কিন্তু এসেছে। এবং শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে ‘হেসেওছে’।

24th     June,   2022
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ