পরামর্শে ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স-এর চিফ ডায়েটিশিয়ান মীনাক্ষী মজুমদার।
সুপ্রিয় নায়েক: হাতে খাওয়া ভালো নাকি চামচ বা কাঁটা চামচে তা সম্পূর্ণভাবে পরিস্থিতির উপর। কতকগুলি পরিস্থিতির কথা বললে বিষয়টি স্পষ্ট হবে—
ট্রেনে বা বাসে সফরের সময় হাতের বদলে চামচের সাহায্যে খাওয়া ভালো। কারণ তখন হাতের কাছে জল বা সাবান— চট করে কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে ব্যাগে চামচ রেখে দেওয়াই ভালো। এছাড়া বাইরে ঘুরে ঘুরে যাঁদের কাজ করতে হয় যেমন মার্কেটিং-এর কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকেও বাইরে খেয়ে নিতে হয়। সেই সময় চামচ ব্যবহারই শ্রেয়। স্যানিটাইজার ব্যবহার করাই যায়। তবে হাত খুব নোংরা থাকলে স্যানিটাইজার দেওয়ার পরেও সেই হাতে খেতে কারও রুচি হওয়ার কথা নয়। আবার স্যানিটাইজারের ব্যবহারও সঠিকভাবে করা দরকার। নিয়ম অনুসারে, স্যানিটাইজার হাতে দেওয়ার পর দেড় থেকে দুই মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর সেই হাত দিয়ে খেতে হবে খাবার। তবে কিছুটা স্যানিটাইজার তো পেটেও যায়। সেটা খুব একটা ভালো ব্যাপার নয়।
আবার বাচ্চাদের স্কুলের টিফিন চামচ দিয়ে খাওয়াই ভালো। কারণ বাচ্চারা নানা জায়গায় হাত দেয়। ভালো করে হাত ধুতেও মনে থাকে না ওদের। ফলে চামচ দিয়ে খাবার খেলে পেটে সংক্রমণের আশঙ্কা কম থাকে। তবে বাচ্চাদের টিফিন বক্সে সেইসকল খাদ্যই দিতে হবে যা চামচ বা কাঁটা চামচের সাহায্যে খাওয়া যায়। অর্থাৎ চিঁড়ের পোলাও, স্বাস্থ্যকরভাবে বানানো নুডলস ইত্যাদি দিতে হবে। কাঁটা চামচ আর ছুরি দিয়ে খাবার খেলে পেটে হাত থেকে নোংরা এবং জীবাণু যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে তা সত্যি কথা। তবে উলটো কথাটাও সত্যি। অর্থাৎ কাঁটা চামচ ও ছুরি থেকেও ঘটতে পারে বিপদ।
বাইরে বেড়াতে গিয়ে কাঁচা চামচ আর ছুরি দিয়ে খাবার খাওয়ার পরেও পেটে সংক্রমণ হতে পারে। ওই ফর্ক আর নাইফ সঠিকভাবে ধোয়া না হলে সেই কাটলারিতে খাবার লেগে থাকতে পারে। সেই খাবারে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই ব্যাকটেরিয়া পেটে গেল সংক্রমণ এবং সেখান থেকে ডায়ারিয়া হওয়া স্বাভাবিক।
দ্বিতীয়ত, খাবার খুব গরম আছে কি না তা আমরা হাত দিয়ে ছুঁলেই টের পাই। চামচ দিয়ে খেলে কিন্তু তা টের পাওয়া যায় না। চামচ দিয়ে গরম খাবার তুলে খেতে গিয়ে মুখ পুড়ে যাওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটে। বিশেষ করে বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার সময় সতর্ক থাকতেই হয়। মুখগহ্বর পুড়ে গিয়ে সেখান থেকে সংক্রমণ ঘটার বিপদ থেকে যায়। সেদিক থেকে দেখতে গেলে হাতে মেখে খাবার খাওয়া ভালো।