বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

হাত দিয়ে খাওয়ার স্বাস্থ্যগুণ

পরামর্শে আর এন টেগোর হাসপাতালের পুষ্টিবিদ সঞ্চিতা শীল

নীতিশ চক্রবর্তী
:
 দুনিয়াজুড়ে খাবার কিংবা খাদ্যাভাস নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। আমিষ বনাম নিরামিষ, ভেগান বনাম জৈন, অর্গ্যানিক বনাম প্রসেসড থেকে কার্ব বনাম প্রোটিন— হরেক কিসিমের খাবার আর তাদের তুল্যমূল্য বিচার করার খেলা কমবেশি সব দেশেই নিরন্তর চলছে। কিন্তু, বর্তমানে সেই তালিকায় জুড়েছে এক নতুন বিতর্ক। আর খাবার নয়, এবার তর্কের আসরের যাবতীয় লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছে খাবার খাওয়ার ‘পদ্ধতি’। কী খাচ্ছি নয়, কীভাবে খাচ্ছি— সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
আধুনিক সমাজ অবশ্য ছুরি-কাঁটা-চামচের পাল্লাই যে ভারি করবে, সেটাই স্বাভাবিক। এমনকী, ভারতের মতো দেশে যেখানে হাত দিয়ে খাওয়ার প্রাচীন রীতি রয়েছে, সেখানেও পশ্চিমি সভ্যতার সঙ্গে তাল মেলাতে ছুরি-চামচের অভ্যাস করছেন আজকের যুবসমাজ। তাঁরা কাঁটাচামচকে ‘বেশি স্বাস্থ্যকর’ তকমা দিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষদের শতাব্দিপ্রাচীন অভ্যাসকে নাকচ করে দিচ্ছেন। যা একই সঙ্গে হাস্যকর ও পীড়াদায়ক। 
এখন অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। মানুষ এখন বুঝতে পেরেছেন, চামচ অথবা কাঁটাচামচ যতই পরিষ্কার হোক, যতই জীবাণুমুক্ত হোক, হাত দিয়ে খাওয়ার প্রচুর বিজ্ঞানসম্মত গুণাগুণ রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে প্রত্যেকের কমফর্ট লেভেল, স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকেও মাথায় রাখতে হবে। কারও উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
ভারতের প্রাচীন গ্রন্থ এবং আয়ুর্বেদে হাতের পাঁচটি আঙুলকে পাঁচটি উপাদান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বুড়ো আঙুল হল অগ্নি, তর্জমা হল বায়ু, মধ্যমা হল আকাশ, অনামিকা পৃথিবী ও কড়ে আঙুল হল জল। হাতের মাধ্যমেই স্পর্শানুভূতির (ট্যাকটাইল সেনসেশনস) সঙ্কেত পৌঁছয় মস্তিষ্কে। তাই যখন কেউ হাত দিয়ে খাবার খান, তখন এই আঙুলগুলির ‘পঞ্চতত্ত্ব’ সক্রিয় হয়ে ওঠে। যা পাচন প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করে। 
আসলে হাত থেকেই পাচনক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ শুরু হয়ে যায়। তারপরের ধাপটি সম্পন্ন হয় মুখে এবং সর্বশেষ ধাপটি পাকস্থলীতে। হাত দিয়ে চটকে-মেখে খাওয়ার কারণে খাবার সহজপাচ্য হয়ে ওঠে। আবার ধোসা কিংবা রুটির মতো ভারতীয় খাবারের পদ ছিঁড়তে বা টুকরো করতে আঙুলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাতের পাশাপাশি সারা শরীরের রক্ত চলাচলের মাত্রা বৃদ্ধিতেও হাত দিয়ে খাওয়ার একটা ভূমিকা রয়েছে। আমরা যখন হাত দিয়ে খাবার খাই, তখন একাধিক পেশির সঞ্চালন হয়। এর ফলে শরীরে রক্তের সরবরাহ বাড়ে। অর্থাৎ, খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে ধাতব চামচের তুলনায় হাত অনেক বেশি মাল্টিটাস্কিং।
এছাড়াও হাত দিয়ে খাওয়ার সঙ্গে আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িয়ে রয়েছে। যেমন— চামচে করে খাওয়ার চেয়ে হাত দিয়ে খাবার খেলে সময় বেশি লাগে। হাতে খাবার খেলে চামচের তুলনায় খাওয়াও হয় কম। এতে বেশি খেয়ে ফেলা এবং ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা কমে। এই সময়সাপেক্ষ ব্যবস্থাই আপনাকে ‘ওভার ইটিং’ থেকে বাঁচায়।
শুধু তাই নয়, হাত দিয়ে খাবার খেলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমে। ‘ক্লিনিক্যাল নিউট্রশন’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষা রিপোর্ট জানিয়েছে, যাঁরা হাত দিয়ে খাবার খান, তাঁদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের প্রবণতা তুলনামূলক কম।

 

30th     March,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ