বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

এক টানা বসে কাজ
পিঠ ও কোমরের ব্যথা সামলাবেন কীভাবে?

মনীষা মুখোপাধ্যায়: বয়স তিরিশ পেরিয়েছে কী পেরয়নি, কোমর আর পিঠব্যথায় জেরবার! একটা সময় পর্যন্ত ধরা হতো পঞ্চাশের কোঠা না পেরনো অবধি ব্যথাবেদনা, বাত নিয়ে অন্তত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু পরিবর্তিত লাইফস্টাইলের কোপে পড়ে ব্যথা এখন থাবা বসিয়েছে মধ্যতিরিশেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটানা বসে কাজ, শরীরচর্চায় অনীহা, নিত্য রুটিনে হাঁটাহাঁটি না রাখার মাশুল গুনতে হচ্ছে জেন ওয়াইকে। ভুগছে ৮০ শতাংশ মানুষই!
সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, পিঠ ব্যথার সমস্যায় ভুগছেন প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ। পিঠে বা কোমরের ব্যথা কম থাকার সময় কেউ একে বিশেষ গুরুত্ব দেন না। চিকিৎসকের কাছে যাওয়া বা যোগাভ্যাস শুরুর প্রতিও অবহেলা দেখা যায়। দিনান্তে ব্যথা বাড়লে পেনকিলার খেয়ে ‘সয়ে নেওয়া’-র পথে হাঁটে তিরিশোর্ধ্ব বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু একসময় ব্যথা মাত্রা ছাড়ালে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। ততদিনে সমস্যা গভীরে পৌঁছেছে। এই ব্যথা ঘাড় থেকে শুরু হয়। তারপর বাড়তে বাড়তে কাঁধ, পিঠ এমনকী কোমর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ‘লো ব্যাক পেন’ অনেকেরই নিত্য সমস্যা।  ইদানীং ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে গিয়েও অনেকে বাড়ির ওয়ার্ক স্টেশন থেকে নড়েন না। হাতের কাছে চা-কফি-জলখাবার হয়তো জুগিয়ে যান বাড়ির কেউ। কাছেই থাকে জলের বোতল। এমন সেডেন্টারি এই লাইফস্টাইলের কারণেই পিঠে-কোমরে ব্যথা ফিরে আসে। ব্যথার রহস্য আমাদের মেরুদণ্ডের নির্দিষ্ট আকার থাকে। সারাক্ষণ তাকে ঝুঁকিয়ে বসলে মেরুদণ্ডের হাড়ে ভয়ানক চাপ পড়ে। ব্যথাবেদনার সূত্রপাত সেখান থেকেই। এক এক সময় এই ব্যথা এতটাই বেশি ক্ষতি করে শরীরের, বেশি হাঁটতেও বারণ করেন চিকিৎসকরা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই হাঁটতে না পারার ক্ষতিপূরণ করতে হবে যোগাসন বা সাঁতার বা অন্য কোনও শারীরিক কসরতের মাধ্যমে। 

হতে পারে কী কী রোগ? 
একটানা বসে কাজ করতে করতে সাধারণ পিঠে-কোমরের ব্যথা তো বটেই, হতে পারে হাড়ের অন্য অসুখও। তার মধ্যে অন্যতম স্লিপ ডিস্ক। দিনের পর দিন এক জায়গায় একটানা বসে কাজ করতে করতে কোমরের কাছে মেরুদণ্ডের দুই হাড়ের মাঝে বেশি চাপ পড়ে। একসময় ডিস্কের কেন্দ্রে অবস্থিত জেলিসদৃশ নরম টিস্যু ছিটকে বেরিয়ে যায় ও মেরুদণ্ডে চাপ দেয়। এছাড়াও অস্টিওপোরোসিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, অস্টিওপিনিয়া, স্পন্ডিওলোসিস ইত্যাদি অসুখের শঙ্কা বাড়ে। অস্থিসন্ধিতেও নানা জটিলতা দেখা দেয়। দীর্ঘ সময় এভাবে বসে থেকে থেকে কাজ করায় হাঁটু ক্ষয়ে যায়।  
একটানা এক জায়গায় কতক্ষণ?
নিয়ম মানলে একটানা এক ঘণ্টার বেশি একভাবে বসে থাকা উচিত নয়। এক ঘণ্টা পেরলেই উঠুন। অফিসে একটা চক্কর দিয়ে আসুন। তিরিশ-চল্লিশ পা হাঁটা তো হবে! কয়েকটি জরুরি টিপস
সবার প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে জীবনটা আপনার। অফিসের কাজের চাপ যতই আসুক, অকারণে জীবন বাজি রেখে তা করা যাবে না। তাই অফিসে কাজের পদ্ধতিতে একটানা বসে থাকতে হলে অবশ্যই শরীরচর্চা করুন। চেষ্টা করুন নিয়ম করে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ-ছ’দিন আধ ঘণ্টা একটানা হাঁটতে। কাজের ফাঁকেও অভ্যাস জারি থাক। মাঝেমধ্যে ডেস্ক থেকে উঠুন। কয়েক পা হেঁটে আসুন। 
কম্পিউটারে বসে কাজ করতে হয় অনেককে। ডেস্কে রাখুন স্মাইলি বল। মাঝে মাঝে ১০-২০ সেকেন্ড ধরে চাপ দিন তাতে। আঙুল, কব্জির হাড়ের সমস্যা রুখে দেবে তা।
ডেস্কে বসে টিফিন খাওয়ার অভ্যাস ছাড়ুন। উঠে হাঁটতে হবে এমন জায়গায় যান। কোনও অফিস কর্তৃপক্ষই টিফিনের সময় একটু হাঁটলে অসন্তুষ্ট হন না। এগুলো কিছুটা নিজেদের মনগড়া ভয়। 
কোন চেয়ারে বসছেন, সেটা খুব জরুরি। কোমর পর্যন্ত যেন ঠেস দেওয়ার মতো সাপোর্ট থাকে। দরকারে তেমন চেয়ার কিনে নিন নিজের জন্য। চাকা দেওয়া নরম গদির চেয়ার ছেড়ে কাঠের চেয়ার ব্যবহার করতে পারলে ভালো।
স্ট্রেস থেকেও ব্যাক পেন বাড়ে। মানসিক চাপ কমান। তারও অন্যতম সমাধান হাঁটাহাঁটি করা। 
কম্পিটারের পর্দা যেন চোখের সোজাসুজি থাকে। খুব উপরে তাকিয়ে বা নীচের দিকে ঝুঁকে তাকিয়ে কাজ করলে পিঠে চাপ পড়বে। মাউজ ধরা হাত যেন কব্জির পর থেকে সাপোর্ট পায়। টেবিলের প্রান্তে এনে মাউজ ধরে বাকি হাতের অংশ নীচে ঝুলিয়ে কাজ করবেন না।
ভারী ব্যাগ বইবেন না। নিজের ও ব্যাগের উভয়ের ওজনই কমান। কাঁধে ব্যাগ নেওয়ার চেয়ে স্কুল ব্যাগের মতো পিঠে ব্যাগ নিন। 
খাবারে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ বাড়ান। দিনের কোনও এক সময় একটু রোদ লাগান শরীরে। 

23rd     March,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ