বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

শরীরচর্চার জরুরি টিপস
সাবধানে জিম

পরামর্শে বিশিষ্ট ফিটনেস এক্সপার্ট গুরুপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়।

এক্সারসাইজ সকলেই করতে পারেন। তবে প্রত্যেকেই একই ধরনের কসরত করতে পারবেন না। কোনও একজন ব্যক্তি নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করবেন কি না, তা নির্ভর করে লিঙ্গ, বয়স, অসুখবিসুখ, কাজকর্মের উপর। 
 অনেকেরই অজান্তে ধমনীতে চর্বিজাতীয় পদার্থ জমতে থাকে। ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্ত সঞ্চালনের সময় ওই জমে থাকা পদার্থের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেখান থেকে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। বিশেষত, অতিরিক্ত পরিশ্রম করার সময় এমন সমস্যা হওয়ার ভয় বেশি থাকে। উত্তেজিত হলে বা বেশি পরিশ্রম করলে স্বাভাবিকের তুলনায় হার্টের স্পন্দন বাড়ে। ফলে হৃদযন্ত্রে রক্তপ্রবাহ বাড়ে। চিকিৎসকরা বলেন, এই সময়ে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। জিমে ঘাম ঝরানোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তাই ৪০ বছর বয়সের পরে জিমে যাওয়া শুরু করলে আগে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করান। মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে ও একটা ইসিজি করিয়ে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা থাকলেও তা ধরা পড়ে যাবে। জিম ইনস্ট্রাকটরকে চিকিৎসকের করা প্রেসক্রিপশন দেখাতে হবে বা ডাক্তারবাবুর দেওয়া পরামর্শের কথা বলতে হবে। তাহলে সংশ্লিষ্ট ফিটনেস বিশেষজ্ঞ রোগীর শারীরিক অবস্থা বুঝে ব্যায়াম করতে দেবেন।
 বংশে কমবয়সে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ইতিহাস থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন ও তারপর জিম করতে আসুন।
 ইদানীং বায়ু দূষণের কারণে বহু বাচ্চা, কমবয়সি ও বয়স্কের অ্যাজমার সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এমন রোগে আক্রান্তদের ইনহেলার নিতে হয়। ইনহেলার হুট করে বন্ধ করা যায় না। ফলে যে সমস্ত অ্যাজমার রোগী অল্পেই হাঁপিয়ে যান, তাঁদের এমন কিছু ব্যায়াম দেওয়া যায় না যাতে অসুখ চাগাড় দেয়। তাতে শ্বাসকষ্ট হয়ে তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলতে পারেন। সুতরাং হাঁপানির মতো সমস্যা থাকলে সেই সম্পর্কে ফিটনেস এক্সপার্টকে খুলে বলতে হবে। তিনিই ধীরে ধীরে সঠিক ব্যায়ামের মাধ্যমে ব্যাধিগ্রস্তের শরীর মজবুত করে তুলবেন। 
 বয়স্করা নতুন করে ব্যায়াম শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখের মতো কোমর্বিডিটি থাকলে আগে ওই রোগ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে। চিকিৎসক যে পরামর্শ দেবেন, তা অবশ্যই ফিটনেস এক্সপার্টকে বলতে হবে। জিম ইন্সট্রাকটর ওই ব্যক্তির শারীরিক পরিস্থিতি বুঝে ব্যায়াম করতে দেবেন।
 অনেকের ধারণা, বয়স্ক মানুষের ওয়েট ট্রেনিং বা ওজন তুলে ব্যায়াম করা উচিত নয়। অথচ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, ফিটনেস বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে নির্দিষ্ট মাত্রার ওজন তুললে হাড়, পেশি ইত্যাদি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এছাড়া পেশির ঝুলে যাওয়াও প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
 খুব বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে কোলেস্টেরল, সুগার, প্রেশারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সবচাইতে উপকারী পদ্ধতি হল হন হন করে হাঁটা। ট্রেডমিল নয়, হাঁটতে হবে খোলা মাঠে। সবুজ ঘাসে পা ডুবিয়ে, খোলা আকাশের নীচে, গায়ে বাতাস লাগিয়ে, পাখির কলকাকলির মধ্যে নিজের ইচ্ছেমতো হাঁটা যায় মাঠে। ট্রেডমিলে হাঁটার সময় একটা নির্দিষ্ট গতি বজায় রাখতে হয়। জিমের বদ্ধ জায়গায় ট্রেডমিলে হাঁটলে মানসিক চাপ তৈরি হয়। সকলকে জোরে হাঁটতে দেখে বয়স্ক মানুষটিও দ্রুতগতিতে হাঁটতে চান। শারীরিক কষ্ট হলেও বলতে চান না। অনেক ক্ষেত্রে বুকে চাপ তৈরি হলেও হাঁটা থামানোর উপায় থাকে না। কারণ, ট্রেডমিল চালু থাকে। এমন ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলতে পারেন। তাই খোলা মাঠে হাঁটলে সবকিছুই নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে। হাঁপ ধরলে বিশ্রাম নেওয়া যায়। হাঁটার গতিও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
খাদ্যাভ্যাস
 জিমে গিয়ে ব্যায়াম করার জন্য আলাদা কোনও ডায়েট অনুসরণ করতে হবে না। রোজ যা খাচ্ছেন অর্থাৎ ডাল, ভাত, সব্জি ও মাছ খেলেই হবে। তবে ডায়েটিশিয়ান ও চিকিৎসক কোনও বিশেষ খাদ্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন কি না ফিটনেস এক্সপার্টকে জানানো দরকার।  
 জলপান খুব জরুরি। প্রাপ্তবয়স্ক একজন ব্যক্তির প্রতি ২০ কেজি দৈহিক ওজন পিছু ১ লিটার জল পান করতে হবে। জিম করার সময় হাতের কাছে বোতল রাখুন। অল্প অল্প করে জল পান করুন। ওআরএস মিশিয়েও জল পান করতে পারেন। তবে সুগার, প্রেশার থাকলে শুধু সাধারণ জল পানই শ্রেয়।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক

26th     May,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ