বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

গ্রীষ্মকালে পেটের গণ্ডগোল বেশি হয় কেন?

পরামর্শে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ জ্যোতির্ময় পাল।

গরমকাল মানেই প্রলম্বিত খর বেলা। এমতাবস্থায় যখন তখন হিট স্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন লেগেই থাকছে। পেটের গণ্ডগোল যে দোসর হবে তাতে আশ্চর্য কী! পেট খারাপ মানেই গোটা দিনটি বিফলে যাওয়া। কাজ নষ্ট, শরীরে অস্বস্তি। খেয়ে শান্তি নেই, শুয়ে শান্তি নেই। তাই পেট খারাপ হওয়ার আগেই দরকার প্রতিরোধ করা। কীভাবে করবেন পেট খারাপ প্রতিরোধ? কেনই বা বারবার পেট খারাপের সম্মুখীন হতে হয় গরমকালে? দেখা যাক—
প্রতিরোধ
• যা কিছু কাজ সকাল ১১ টার মধ্যে সেরে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
• প্রচুর জলপান করুন। সবসময় সঙ্গে জল রাখুন।
• সারাদিনের ঘোরাঘুরির মধ্যেই কিছু সময় ওআরএস, ডাবের জল, ফলের রস পানের জন্য বরাদ্দ রাখুন। এসব হাতের কাছে না পেলে সাধারণ জলে নুন ও চিনি একসঙ্গে গুলে পান করুন।
• এই গরমে যে কোনও ধরনের ফ্যাটজাতীয় খাবার খাওয়া এড়িয়ে যান। অর্থাৎ ভাজাভুজি, চিজ, মেয়োনিজ, বাটার দেওয়া খাবার খাওয়া বাদ দিন। বাদ দিন গ্রিলড মিট। মশলা দেওয়া খাবার। এড়াতে হবে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়া।
• ঢিলেঢালা হালকা রঙের সুতির পোশাক পরে বাইরে বেরন। খুব ঘন রঙের জামাকাপড় পরবেন না।
• মর্নিং ওয়াক করার ক্ষেত্রে সতর্ক হন। আগে যেখানে ছ’টা নাগাদ মর্নিং ওয়াক করলে চলছিল, এখন তা করা অসম্ভব কারণ তাপমাত্রা খুব দ্রুত চড়ে যাচ্ছে। তাই সম্ভব হলে ভোর পাঁচটায় মর্নিং ওয়াক করুন। কারণ সেই সময়ে আবহাওয়ার উষ্ণতা অনেক কম থাকে। তবে ঘুমের দফারফা করলে চলবে না। রাতে ঘুমাতেও যান একঘণ্টা আগে।
• প্রেশারের রোগী যাঁরা নিয়মিত ওষুধ খান, বিশেষ করে যাঁরা ডাইইউরেটিক গ্রুপের ওষুধ খান তাঁদের একটু বেশিই সতর্ক হতে হবে। কারণ গরমের কারণে শরীর থেকে সোডিয়াম, জল বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে ও হুট করে প্রেশার নেমে যাওয়ার ভয়ও এড়ানো যায় না। উপসর্গ হিসেবে রোগী হঠাৎ দিশহারা ও অবসন্ন বোধ করতে পারেন। তাই প্রেশারের রোগীরা এই সময় চিকিৎসকের সঙ্গে একবার অবশ্যই পরামর্শ করবেন।
• কিডনি ও হার্ট ফেলিওরের সমস্যা না থাকলে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষকে প্রতিদিন অন্তত ৩ লিটার জল পান করতে হবেই এই সময়ে।
• হিট ক্রাম্প, হিট স্ট্রোক এড়িয়ে যেতে হলে যথেষ্ট মাত্রায় জল পান করুন। জল কম পান করলে হিট ক্রাম্প হওয়ার আশঙ্কা এড়ানো যায় না। হিট ক্রাম্পের উপসর্গ হিসেবে থাকে— পায়ে ব্যথা, মাথায় ঝিমঝিম ভাব। শরীরে অবসন্ন লাগে। এমতাবস্থায় সামান্য নুন মিশিয়ে জল পান করে ফেলুন। এই হল হিট একজশ্চনের বা হিট ক্রাম্পের প্রাথমিক লক্ষণ। হিট একজশ্চনের পরের ধাপ হল হিট স্ট্রোক!
কেন বেশি হয় পেটের রোগ?
• গ্রীষ্মকালে ডায়ারিয়ার মতো সমস্যা হয় মূলত দূষিত জল পানের কারণে। বাড়ির বাইরে কিছুক্ষণ থাকলেই এখন জলতেষ্টা পায়। ফলে তৃষ্ণাকাতর ব্যক্তি তখন চান যে কোনও জায়গা থেকেই জল পান করে পিপাসা নিবারণ করতে। অনেকেই তাই ঠেলাওয়ালার বরফ দেওয়া পানীয়, রঙিন জল ইত্যাদি পান করেন। ফলে পেটে একাধিক জীবাণু প্রবেশের সুযোগ পায়। অথচ এই কারণেই বারবার করে চিকিৎসকরা বাইরের খোলা জায়গায় তৈরি করা বরফ দেওয়া জল, রঙিন জল, কাটা ফল খেতে বারবার নিষেধ করেন। তাই বাড়ির বাইরে কাজে বেরতে হলে অবশ্যই সঙ্গে জলের বোতল রাখুন। অচেনা, অপরিচিত, অপরিচ্ছন্ন জায়গা থেকে জল পান করবেন না।
• বাসি খাবার খাবেন না কোনওমতেই। বাসি খাবারে প্রচুর বাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করে যা পেটের পক্ষে মারাত্মক।
• ডিম খান তবে সেদ্ধ। কারণ ওমলেটের তুলনায় সেদ্ধ ডিমে খাদ্যগুণ বেশি বজায় থাকে। দ্বিতীয়ত ডিম পচা হলেও তা ধরা পড়ে যায়।
• অধিক রাতে খাবার খাওয়া বন্ধ করুন। রাত দশটার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলুন। রাতে মশলাদার খাদ্য একেবারেই খাবেন না।
• ঝোল বা স্যুপজাতীয় খাদ্য বেশি খান। তাতে শরীরে তরলের জোগান বজায় থাকবে। শাকসব্জি বেশি করে খান। খাবার দ্রুত হজম হবে। শরীর ভালো থাকবে।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক

2nd     May,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ