পরামর্শে নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতালের ডায়েটিশিয়ান মৌপর্ণা ঘোষ।
ভিটামিন ডি-এর মূল উৎস হল সূর্যালোক। আগে আমাদের হাতে সময় ছিল। দিনের কোনও একটা সময় একটু গায়ে রোদ লাগিয়ে বসার অবসর মিলত। বাচ্চাদের গায়ে একটু তেল মাখিয়ে রোদে রাখা হতো। ত্বকেই ভিটামিন ডি সংশ্লেষ হতো ও ভিটামিন ডি-এর চাহিদাও মিটে যেত। এখনকার দিনে এসব অভ্যেস অতীতই বলা চলে। ফলে বহু লোকই ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন। ভিটামিন ডি-এর অভাবে শরীরে ক্যালশিয়াম, ফসফরাসের মতো খনিজের শোষণও সঠিকভাবে হচ্ছে না। কমবয়সেই হাড়ের কাঠামো হয়ে পড়ছে দুর্বল।
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হওয়ার পিছনে আরও একটা বড় কারণ হল খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন। ভিটামিন ডি ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন। চর্বি বা স্নেহ পদার্থে দ্রবণীয় ভিটামিন। ফলে আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি শোষণের জন্য ডায়েটে চর্বিজাতীয় খাদ্যের জোগান বজায় থাকা জরুরি। ডিমের কুসুমে থাকে ভিটামিন ডি। ডিমের কুসুম খুব ভালো ফ্যাটের উৎসও বটে। এখন অনেকেই ডিমের সাদা অংশ খেলেও কুসুম খেতে চান না। বহু মানুষ কোলেস্টেরল, ব্লাডপ্রেশার, ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন। ডিমের কুসুমে ভিটামিন ডি ছাড়াও থাকে প্রয়োজনীয় খনিজ। খানিকটা প্রোটিনও। এখন ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বা উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা সম্পূর্ণভাবে ডিমের কুসুম ও অন্যান্য চর্বিপ্রধান যেমন মাখন, ঘি, শ্রেডেড চিজ খাওয়া বন্ধ করে দিলে ভিটামিন ডি শরীরে সঠিকভাবে শোষিত হওয়ার সুযোগ পায় না। আবার ভিটামিন ডি-এর অন্যতম উৎস হল দুধ। এদিকে আমরা আজকাল দুধও কিনি ফ্যাট ছাড়া। এই দুধ বাজারে ডাবল টোনড মিল্ক বা স্কিমড মিল্ক নামে পরিচিত। দুধ থেকে ফ্যাট নিষ্কাশনের সময় কিছুটা হলেও ভিটামিন ডি-এর মাত্রাও হ্রাস পায়। শরীরে ভালো ফ্যাট প্রবেশেরও সুযোগ কমে যায়। সেই আমরা ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ভিটামিন ডি থেকে বঞ্চিত হই।
সুতরাং, একটা বিষয় পরিষ্কার যে, ফ্যাটজাতীয় খাবার ছাড়া ভিটামিন ডি পাওয়া অসম্ভব। অতএব বুদ্ধি করে ফ্যাটজাতীয় খাদ্য খেতে হবে।
করবেন কী?