বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

হোম আইসোলেশনে ডায়েট

পরামর্শে ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স, কলকাতার চিফ ডায়েটিশিয়ান মীনাক্ষী মজুমদার।
ভাইরাসের আক্রমণের সময় শরীর হয়ে পড়ে দুর্বল। এই সুযোগে অন্যান্য ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া শরীরে ঢুকে পড়তে পারে। হতে পারে অন্যান্য সমস্যা। তাই করোনা সংক্রামিত ব্যক্তির উচিত সুষম এবং সহজপাচ্য খাদ্য গ্রহণ করা। ডায়েটে মাস্ট প্রোটিনজাতীয় খাবার: কোভিডে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্ত হচ্ছে আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট। কদাচিৎ ফুসফুস। ভাইরাসের সঙ্গে যুঝতে গেলে সেক্ষেত্রে দেহের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাকে শক্তিশালী করা দরকার। শরীরকে দিতে হবে প্রোটিনজাতীয় খাদ্য। কারণ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য দায়ী শ্বেত রক্তকণিকা এবং অন্যান্য কোষ প্রোটিন দ্বারাই প্রস্তুত হয়।

থাকবে আরও কী কী উপাদান?
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য যেমন মাছ, চিকেন, ডিম অবশ্যই পাতে রাখতে হবে। দু’টি ডিমের সাদা অংশও খাওয়া যায়। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা থাকলে ডিমের কুসুম খাবেন না। নিরামিষাশীরা পাতে রাখুন ছানা, দই, সয়াবিন, সয়ামিল্ক, টোফু, ক্রিম ছাড়া পনির ইত্যাদি। 
শরীরের দরকার পর্যাপ্ত ফ্লুইড: দিনে ৩ লিটার জল পান করতেই হবে। তবে হ্যাঁ, কিডনির অসুখ থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করেই জল পান করুন। জল ছাড়াও খেতে হবে স্যুপ। পান করতে হবে ডাবের জল, কমলালেবু, মুসাম্বির মতো সাইট্রাসজাতীয় ফলের রস। 
ফল: সাইট্রাস বা লেবুজাতীয় ফল ও ফলের রস পান করা এই পর্যায়ে খুব উপকারী। কারণ কমলালেবু, মুসাম্বি, পাতিলেবুর মতো সাইট্রাসজাতীয় ফলে থাকে ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়। লাঞ্চের সময় পাতিলেবুর রস মাখিয়ে নিন ভাতে। এছাড়া পেয়ারাও খাওয়া যায়। খেতে পারেন আপেল, পেঁপে, তরমুজ ও কলা। তবে হ্যাঁ, হার্টের রোগ, প্রেশার, ডায়াবেটিসের মতো সমস্যায় ফল খাওয়ার আগে চিকিৎসক বা ডায়েটিশিয়ানের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া ভালো। 

ডায়েটের সময়: ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার সঠিক সময়ে সারতে হবে। শরীর দুর্বল বলে অল্প খেলে চলবে না। পরিমাণমতো খাওয়াও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট: ডায়েটিশিয়ান বা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট খেতেই পারেন এই সময়। শরীরে উপযুক্ত মাত্রায় প্রোটিনের জোগান বজায় থাকলে যে সমস্ত অঙ্গের কোষের বিস্তর ক্ষতি হচ্ছে, সেই অঙ্গগুলির কোষ পুনর্গঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা মিলবে।
প্রথম দু’দিন: কোভিডের আক্রমণের প্রথম দু’দিন বহু রোগীর গায়ে জ্বর, গলা ব্যথার মতো উপসর্গ থাকে। রোগী বেশ কাহিল হয়ে যান। খিদে থাকে না। এমন অবস্থায় জোর করেও সুষম খাদ্য খেতে হবে। রোগীর উচিত ঘণ্টা দু’য়েক পর পর অল্প অল্প করে খাদ্য গ্রহণ করা। এছাড়া শরীরে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি কমাতে ফ্রুট স্যালাড, ফলের রস, দই, চিকেন স্যুপ আলাদা করে প্রথম দু’দিন অবশ্যই ডায়েটে রাখতে হবে।
ডায়েট প্ল্যান—
ঘুম থেকে উঠে: চা বা কফি। সঙ্গে একটা বিস্কুট। ডায়েটিশিয়ান বা চিকিৎসকের পরামর্শমতো সাপ্লিমেন্টও খাওয়া যায়। দুধে অ্যালার্জির সমস্যা না থাকলে খাওয়া যায় দুধ-বিস্কুটও।
ব্রেকফাস্ট: কাশি হচ্ছে বহু কোভিড আক্রান্তের। প্রাতরাশে তাই খুব শক্ত খাবার খেলে গলায় ব্যথা হতে পারে। তাই টোস্ট না খেয়ে বরং ওটস, ডালিয়া, দুধ-কর্নফ্লেক্স, স্যান্ডউইচ খেতে পারেন। এগুলির সঙ্গে অবশ্যই দু’টি ডিমের সাদা অংশ খান। খেতে পারেন একবাটি ছানা।
ঘণ্টা দু’য়েক পরে: এক প্লেট ফ্রুট স্যালাড আর একগ্লাস ডাবের জল।
লাঞ্চ: সাধারণ বাড়ির খাবার যেমন হয় অর্থাৎ ভাত, ডাল, সব্জি, মাছ বা চিকেন খেয়ে নিন। খেতে পারেন ঘরে পাতা দই। তবে হ্যাঁ ডায়ারিয়ার সমস্যা থাকলে তেল কম দিয়ে, কাঁচকলা দেওয়া পাতলা করে করা মাছের ঝোল খান। আর হ্যাঁ সঙ্গে খান দই। কারণ দইয়ে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া খাদ্য হজমে সাহায্য করে।
ঘণ্টা দেড়েক পর: এক গ্লাস ফলের রস বা গোটা ফল খেতে পারেন।
বিকেলে: লাল চা বা দুধ-চা কিংবা কফি (পেটের সমস্যা না থাকলে) পান করতে পারেন। খেতে পারেন দুধ কিংবা সাপ্লিমেন্ট। প্রোটিন শেকও খাওয়া যায়।
মিনিট ৪৫ পর: চিকেন ও সব্জি মেশানো স্যুপ খেতে পারেন রোগী। নিরামিষাশীরা চিকেন খেতে না চাইলে শুধু সব্জির স্যুপই খান। এতে দেহে যেমন তরলের জোগান বজায় থাকবে, তেমনই ভিটামিন-মিনারেলসও প্রবেশ করবে শরীরে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেতে পারেন সিদ্ধ ভুট্টা, বেবি কর্ন। ইচ্ছে হলে সেদ্ধ ভুট্টায় লেবুর রস আর বিটনুন ছড়িয়ে দিন।
ডিনার: ভাত বা রুটি খান। সঙ্গে খেতে পারেন চিকেন বা সয়াবিনের ঝোল। নিরামিষাশী হলে রাজমা, কাবলি ছোলাও খেতে পারেন। তবে ডায়ারিয়া হলে রুটি খাওয়া চলবে না। খেতে হবে ভাত। 
খাবার শেষে একটা মিষ্টি পাতে রাখলে ক্ষতি নেই। খেতে পারেন সিমুই বা চালের পায়েস, সন্দেশ। তবে রোগীর ডায়াবেটিস থাকলে কৃত্রিম চিনি দিয়ে বাড়িতেই মিষ্টি বানিয়ে খান।শেষ কথা: মনোবল হারাবেন না। মনে রাখবেন সুষম খাদ্য খেলে কোভিড থেকে দ্রুত সেরে ওঠা যায়। সংক্রমণ পরবর্তী শারীরিক জটিলতাও কমে।

লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক

6th     January,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ