বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

দুশ্চিন্তার নাম যখন
ইনফ্লুয়েঞ্জা বি

পরামর্শে হাওড়ার নারায়ণা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী।

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস কী? কত ধরনের হয়?
ফ্লু ভাইরাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের একাধিক স্ট্রেন রয়েছে। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জার তিনটি ধরন নিয়েই বেশি চিন্তা থাকে। এই তিনটি ধরন হল এ, বি, সি। তিনটি ধরনের মধ্যে ‘সি’ ধরনটি তুলনামূলক কম ঝঞ্ঝাটের। ঝামেলা পাকানোর মূল কারিগর হল ‘এ’ এবং ‘বি’।

একটু বিস্তৃতভাবে যদি বলেন?
 ইনফ্লুয়েঞ্জা এ: সাধারণত জুনোটিক ট্রান্সমিশন বা প্রাণী থেকে মানবদেহে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা এ’ ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে পশু বা পাখির থেকে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা খুব বেশি ঘটে না। ইনফ্লুয়েঞ্জা বি: এই ভাইরাস মূলত হাঁচি-কাশি-সর্দি-ড্রপলেটের মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। এই কারণে ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে যায়।

আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলি কী কী?
এ, বি কিংবা সি— যে কোনও ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কমবেশি একইরকম। দেখা যাক সেগুলি কী কী— আক্রান্তের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট অবধি জ্বর উঠে যায়। গায়ে-হাত-পায়ে ব্যথা হবে। গলা ব্যথা থাকতে পারে। খুব কাশি হতে পারে। সর্দি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এছাড়া রোগীর ক্ষুধামান্দ্য, গা বমি ভাব দেখা যেতে পারে। হতে পারে ডায়ারিয়ার মতো পেটের সমস্যা।

ছোটদের ক্ষেত্রে কি উপসর্গ আলাদারকম? ক্ষতি হওয়ার ভয়ও কি বেশি?
বাচ্চা হোক বা বৃদ্ধ, সকলের ক্ষেত্রে লক্ষণ একইরকম। তবে হ্যাঁ, বাচ্চাদের ধকল নেওয়ার ক্ষমতা বড়দের মতো না হওয়াই স্বাভাবিক। ভাইরাসের আক্রমণে তাই বড়দের তুলনায় ওরা কাহিল হয়ে পড়ে বেশি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে বাচ্চার ফ্যারেঞ্জাইটিস, নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। নিউমোনিয়া হলে প্রচণ্ড কাশি, উচ্চ মাত্রায় জ্বর, বমি হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যেতে পারে।

কতদিন ভোগান্তি চলে?
গড়ে মোটামুটি ৭ থেকে ১০ দিন এমন লক্ষণ থাকতে পারে। সাধারণত এই সময়ের মধ্যেই রোগ লক্ষণ কমে যায়। তবে ফ্যারেঞ্জাইটিস বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে সমস্যা আরও বেশিদিন স্থায়ী হয়।

চিকিৎসা কী?
উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা করা হয়। সাধারণত জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। রোগীর দেহে জলশূন্যতা তৈরি হতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে রোগীকে বেশি মাত্রায় ফ্লুইড দিতে বলা হয়। ফ্লুইড অর্থাৎ জল, ফলের রস, ডাবের জল, স্যুপ ইত্যাদির কথা বলা হচ্ছে। এছাড়া ডায়েটে ঝাল-মশলার ব্যবহার কম করা দরকার। সহজপাচ্য খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। সাধারণত এই চিকিৎসাতেই কাজ হয়। অনেক সময় রোগীর সেকেন্ডারি ইনফেকশন বা দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অর্থাৎ ভাইরাসের আক্রমণে রোগী দুর্বল হয়ে পড়ার সুযোগে কিছু ব্যাকটেরিয়া রোগীকে আক্রমণ করে। এই ধরনের আক্রমণের মোকাবিলা করতে রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন চিকিৎসক। তবে রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া রীতি নয়।

কোভিড ও ফ্লু-এর লক্ষণ প্রায় একই। সেক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তির ফ্লু-এর মতো উপসর্গ হলে করণীয় কী? রোগীকে কি আইসোলেশনে রাখা উচিত?
কোনও ব্যক্তি সম্প্রতি করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসে থাকলে এবং তারপর তাঁর ফ্লু-এর মতো উপসর্গ হলে করোনা টেস্ট করাতে হবে। সমস্যা হল, খুব ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে আরটিপিসিআর করানো বেশ কঠিন। সুতরাং ফ্লু-এর মতো উপসর্গ এলে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনিই পরিস্থিতি বুঝে পরামর্শ দেবেন। এবার আসি আইসোলেশনের প্রসঙ্গে। রোগীর থেকে পরিবারের বাকিদের মধ্যে করোনা সহ ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ এড়াতে আইসোলেশন নিশ্চয়ই যথেষ্ট উপযোগী পদ্ধতি। তবে এই পদ্ধতি বড়দের ক্ষেত্রে কার্যকরী হলেও, খুব ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে সঙ্গত কারণেই সমস্যার বিষয়। তাই পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে।

ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণ কীভাবে প্রতিরোধ করা যাবে?
ফি বছর ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মিউটেশন ঘটে। তাই প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নেওয়াই হল এই ভাইরাস প্রতিরোধের একমাত্র উপায়। এই প্রসঙ্গেই একটা কথা জেনে রাখুন, অনেকের ধারণা ফ্লু ভ্যাকসিন দিলে বাচ্চারা বোধহয় কোভিড থেকেও রক্ষা পাবে। এমন ধারণা সর্বৈব ভুল।
সাক্ষাৎকার সুপ্রিয় নায়েক

23rd     September,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ