বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

করোনা রোগীকে বাড়িতেই অক্সিজেন
দিচ্ছেন, প্রেসক্রিপশন রয়েছে?

পরামর্শে পিজি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মনোতোষ সূত্রধর।

করোনা রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ শতাংশের নীচে নামলেই বুঝতে হবে সমস্যা গুরুতর আকার নিচ্ছে। এই অবস্থাতেই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন। এটাই হবে সবথেকে ভালো কাজ। কিন্তু কোনও কারণে এই অবস্থাতেও প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে বেডের বন্দোবস্ত সম্ভব না  হলে বাড়িতেই দ্রুত গতিতে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। এক্ষেত্রে বাড়িতে রোগীকে অক্সিজেন দিতে হবে। আর অক্সিজেন দিতে হবে নিজের জ্ঞানে নয়, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।  না হলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বেশি। এমন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অক্সিজেন প্রেসক্রিপশন দেবেন। সেই বলে দেওয়া নিয়মেই অক্সিজেন নিতে হবে। এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে রাখি, শুধুমাত্র অক্সিজেন ব্যবহার করলেই রোগী সুস্থ হয়ে যাবেন, এমনটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয় না। প্রয়োজন স্টেরয়েড, অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট সহ অন্যান্য ওষুধ। এই সকল ওষুধগুলিও চিকিৎসকই বলে দেন। তাই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে রোগীকে কেবল অক্সিজেন দিয়ে ফেলে রাখবেন না। চিকিৎসকের ক্লিনিকে যাওয়া সম্ভব না হলে টেলিমেডিসিন পরিষেবা নিন।
অক্সিজেন প্রেসক্রিপশন
প্রেসক্রিপশনে এই বিষয়গুলির উল্লেখ থাকবে—
 নেজাল প্রং, ফেস মাস্ক না নন ব্রিদিং মাস্ক— কোন ডিভাইসের মাধ্যমে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হবে।
 কত পরিমাণে বা বিজ্ঞানসম্মতভাবে বললে কোন ফ্লো রেটে অক্সিজেন দেওয়া হবে তা উল্লেখ করতে হবে। ফ্লো রেট বলতে হবে ‘লিটার প্রতি মিনিট’ হিসেবে।
 কতক্ষণ অক্সিজেন চালিয়ে যেতে হবে অর্থাৎ বিজ্ঞানের ভাষায় ফ্রিকোয়েন্সি ও ডিউরেশনেরও উল্লেখ থাকতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলি, ৩ লিটার/মিনিট বাই নেজাল প্রং ২০ আওয়ার/ডে। অর্থাৎ নেজাল প্রঙের মাধ্যমে প্রতি মিনিটে ৩ লিটার অক্সিজেন দিনের ২০ ঘণ্টা রোগীকে দিতে হবে যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোভিড রোগীর সারাদিনই অক্সিজেন লাগে।
বাড়িতে অক্সিজেন দিতে হলে এই কয়েকটি বিষয় জেনে নিন—
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, বাইরে থেকে প্রতি লিটার অক্সিজেন দিলে শরীরে অক্সিজেন পৌছয় ০.০৪ শতাংশ। এই হিসেবেই একজন চিকিৎসক রোগীকে কতটা অক্সিজেন দিতে হবে তা ঠিক করেন।
কী ধরনের সিলিন্ডার?
১. বি টাইপ অক্সিজেন সিলিন্ডার—বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়। ঘরের কোণে সহজেই এই মাঝারি আকৃতির সিলিন্ডার রাখা যায়। এর মধ্যে ১৫০০ লিটার অক্সিজেন থাকে।
২. টাইপ ডি বা জাম্বো সিলিন্ডার— এই সিলিন্ডারের আকার অনেকটাই বড়। ঘরের সিলিংয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে এর উচ্চতা।
৩. অক্সিজেন কনসেনট্রেটর— বিদ্যুতের সাহায্যে এই যন্ত্রটি বাতাস থেকেই অক্সিজেন তৈরি করে নিতে পারে।
সাধ্য এবং বাজারের সহজ লভ্যতা অনুযায়ী এই তিন দরনের মধ্যে যে কোনও এক ধরনের অক্সিজেন উৎস ব্যবহার করতে পারেন।
কী ধরনের ডিভাইস?
রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী তিন ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করা হয়—
১. নেজাল প্রং বা ক্যানুলা— রোগীর অক্সিজেনের চাহিদা কম হলে নেজাল প্রং দিয়ে অক্সিজেন দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে মিনিটে এক থেকে ছয় লিটার অক্সিজেন দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে নাকের নীচ দিয়ে একটি নল যায়। সেই নলের মধ্যে দিয়েই অক্সিজেন রোগীর শরীরে পৌঁছয়। মুখ ঢাকা থাকে না বলে রোগী নেজাল প্রং পরেই কথা বলতে পারেন, খেতে পারেন।
২. ফেস মাস্ক— শ্বাসের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা কার্বনডাই অক্সাইড যাতে ফেস অক্সিজেন মাস্ক পরার কারণে পুনরায় শরীরে না প্রবেশ করতে পারে (রি ব্রিদিং), তাই ফেস মাস্কে পাঁচ লিটারের বেশি অক্সিজেন প্রবাহিত করতে হয়। এই মাস্কের মাধ্যমে মিনিটে পাঁচ থেকে নয় লিটার অক্সিজেন দেওয়া যেতে পারে।
৩. নন রি ব্রিদিং মাস্ক— অত্যাধুনিক এই মাস্কের সাহায্যে মিনিটে আট থেকে ১৬ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া যায়।  
এফআইওটু মিটার
কত লিটার অক্সিজেন রোগীর কাছে পৌঁছবে তা এই মিটারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
ময়েস্ট অক্সিজেন
সিলিন্ডার থেকে সরাসরি আসা অক্সিজেন হয় শুষ্ক। মিনিটে দুই লিটার পর্যন্ত শুষ্ক অক্সিজেন দেওয়া যায়। কিন্তু মিনিটে দুই লিটারের বেশি অক্সিজেন দিতে হলে আর্দ্র বা ময়েস্ট অক্সিজেন দিতে হয়। সেক্ষেত্রে অক্সিজেন ‘হিউমিডিফায়র বটল’ যন্ত্রের ব্যবহার করতে হয়। অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে শুষ্ক অক্সিজেন নলের মাধ্যমে এই যন্ত্রে প্রবেশ করে আর্দ্র হয়। তারপর অপর একটি নলের মাধ্যমে সেই আর্দ্র অক্সিজেন রোগীর কাছে পৌঁছয়।
খাওয়া স্বাভাবিক
তেমন কোনও সমস্যা না থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো মাস্ক খুলে স্বাভবিকভাবেই খাওয়া যায়।
কখন অক্সিজেন নির্ভরতা কাটবে?
রোগী ভালো থাকতে শুরু করলে চিকিৎসক ডি এস্ক্যালেশন অব অক্সিজেন থেরাপির কথা বলেন। এরও নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। ধীর ধীরে রোগীর অক্সিজেন সাপোর্ট কমিয়ে আনা হয়।
লিখেছেন সায়ন নস্কর

5th     June,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ