বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

বৃহস্পতির চেয়েও বড় 
গ্রহকে আস্ত  গিলে খেল

মৃত নক্ষত্র

‘খোলো খোলো হে আকাশ স্তব্ধ তব নীল যবনিকা’। মহাশূন্যের বুকে প্রতিনিয়ত কত কিছুই না ঘটছে। কিন্তু তার কতটুকুই বা ধরা পড়ে? সবারই জানা, প্রত্যেক সৃষ্টির যেমন আদি রয়েছে, তেমনই রয়েছে অন্তও। আমাদের সৌরজগৎও তার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের পৃথিবীর সকল শক্তির উৎস সূর্য। সূর্যের আলো ও উত্তাপ ছাড়া পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব ছিল না। কিন্তু যে কোনও নক্ষত্রের মতোই সূর্যও এগিয়ে চলেছে নিশ্চিত ধ্বংসের দিকে। বিজ্ঞানীরা অঙ্ক কষেই তা বেরও করেছেন। তবে তা অবশ্য কয়েকশো কোটি বছরের ব্যাপার। শেষের সেদিন কেমন হবে, তারও পূর্বাভাস গবেষকরা দিয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন আগে বিজ্ঞানীরা এমনই একটি মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন। আস্ত একটা গ্রহকে গিলে ফেলল এক মৃত নক্ষত্র! ছোটখাট নয়, গ্রহটি প্রায় আমাদের সৌরজগতের বৃহস্পতি গ্রহের চেয়েও কয়েকগুণ বড়। এতদিন যে তত্ত্ব খাতায় কলমে ছিল, ঠিক তেমনটাই বাস্তবে চাক্ষুষ করলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।  পৃথিবী থেকে ১৫ হাজার আলোকবর্ষ দূরে এই ঘটনা ঘটল। আর মাত্র ১০ দিনে সুবিশাল গ্রহটি মিশে গেল লাল নক্ষত্রের বুকে। পৃথিবীর ভাগ্যেও নাকি ৫০০ কোটি বছর পর এমন পরিণতিই অপেক্ষা করছে। 
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি গ্রহেরই ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী। নক্ষত্রর শক্তিক্ষয় ঘটতে থাকলে সেগুলি টকটকে লাল বর্ণ নিয়ে ক্রমশ কলেবর বৃদ্ধি করে। তারপর একে একে গ্রহগুলিকে প্রবল টানে নিজের বুকে টেনে নেয়।  সূর্যেরও জ্বালানি যখন ফুরিয়ে যাবে, তখন তার আকার ক্রমশ বাড়বে। তারপর ধীরে ধীরে তার গ্রাসে চলে যাবে বুধ, শুক্র, পৃথিবীর মতো গ্রহগুলি। আকিলা নক্ষত্রপুঞ্জের এমনই ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ও ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জ্যোতির্বিজ্ঞানী কিশলয় দে এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সৌরজগতে গ্রহগুলিকে যে একদিন সূর্য গিলে ফেলবে, তার পূর্বাভাস তো বহুদিন ধরেই রয়েছে। কিন্তু এর আগে কখনও এধরনের ঘটনা দেখা যায়নি।’ 
ওই নক্ষত্রটির আয়ু ফুরিয়ে এসেছে। ক্রমশই ফুলেফেঁপে তার আয়তন বেশ কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিল। শিকারের সন্ধানে লালচক্ষু মেলে সে যেন অপেক্ষা করছিল। কিশলয় দে জানিয়েছেন, সমগ্র প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল বছর তিনেক আগে। হঠাৎ করেই উজ্জ্বল হতে শুরু করে নক্ষত্রটি। তারপর শেষদিনগুলিতে প্রবল বিচ্ছুরণ শুরু হয়। চক্কর কাটতে কাটতেই যখন গ্রহটি থেকে দূরত্ব অনেকটাই কমে যায়, তখন তাকে গিলে নেয় নক্ষত্রটি। জেডটিএফ ‘এসএলআরএন-২০২০’ নামে ওই নক্ষত্রটি গ্রহটিকে সম্পূর্ণ গিলতে সময় নিয়েছে প্রায় ১০ দিন। ইনফ্রারেড ডেটা বিশ্লেষণ করে এই ঘটনার সাক্ষী থাকতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। 
কিশলয় দে আরও জানিছেন, গ্রহটি অবশ্য বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করেনি। নক্ষত্রটির কবল ছিঁড়ে বেরতে সেটি নিজের মাধ্যকর্ষণ শক্তি ব্যবহার করেছিল। কিন্তু নক্ষত্রটি গ্রহের তুলনায় হাজার গুণ বেশি বড়। তাই তার শক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি গ্রহটি। ওই নক্ষত্রটির চারপাশে নিরাপদ দূরত্বে অন্যান্য গ্রহ ঘুরছে কি না, তা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানতে পারেননি। পরের কোনও গ্রহকে গ্রাস করতে নক্ষত্রটির হয়তো আরও কয়েক হাজার বছর লাগবে।

21st     May,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ