বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

উষ্ণ আন্টার্কটিকা!

শান্তনু দত্ত: আন্টার্কটিকা। নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ধবধবে সাদা বরফ। পুরো মহাদেশে বরফ ছাড়া আর কিছুই নেই। আন্টার্কটিকাকে বলা হয় বরফের মহাদেশ। পৃথিবীর দক্ষিণের এই মহাদেশের চারদিক কেবল সাদা তুষারের চাদরে ঢাকা। চরম ঠান্ডায় এখানে সমুদ্রের জলও জমে বরফ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তোমরা কি জানো, আগে আন্টার্কটিকায় এত বরফ ছিল না। বরং এখানকার আবহাওয়া ছিল বাসযোগ্য। সেসময় ঘন সবুজ জঙ্গলে ঢাকা ছিল আজকের আন্টার্কটিকার ভূখণ্ড। সেখানে থাকত ডাইনোসর ও আরও নানান প্রাণী। অবশ্য, কুমেরুর এই ধরনের পরিবেশ ছিল বহু যুগ আগে।
আজ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সমস্ত মহাদেশ প্যানজিয়া নামক একটি বিরাট ভূখণ্ডের অন্তর্গত ছিল। এক সময় সেটি ভেঙে যায় দু’টি ভূখণ্ডে— লরেশিয়া ও গন্ডোয়ানাল্যান্ডে। আন্টার্কটিকা ছিল এই গন্ডোয়ানাল্যান্ডেরই অংশ। তখন আন্টার্কটিকা ও সংলগ্ন অঞ্চলে ছিল অসংখ্য গাছ। এই মহাদেশ অবস্থান করত বিষুব রেখার কাছে। এর আবহাওয়া অত্যন্ত উষ্ণ ছিল। গড় তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেসময় আন্টার্কটিকায় সমুদ্রের তীরে দেখা মিলত পাম গাছের সারির। সাড়ে পাঁচ কোটি বছর আগে ভয়ঙ্কর জলবায়ু পরিবর্তনের টের পায় গোটা পৃথিবী। সমগ্র বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছিল প্রচণ্ডভাবে। পরে জলবায়ু তুলনামূলক শীতল হতে থাকলে অস্ট্রেলিয়ার পাশ থেকে ভেঙে যেতে শুরু করে আন্টার্কটিকা। একসময় চারপাশে সমুদ্রবেষ্টিত হয়ে পড়ে এই মহাদেশ। তখনই ধীরে ধীরে বরফ জমতে শুরু করে এই ভূখণ্ডে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, আন্টার্কটিকায় প্রথম বরফ জমা শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন কোটি বছর আগে। তাপমাত্রা কমে যায় প্রায় ১৫ ডিগ্রি। এর সঙ্গে শুরু হয় মেরুঝড়ের। অন্যদিকে, পৃথিবীর দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত হওয়ায় এখানে টানা ৬ মাস দেখা মেলে না সূর্যের আলোর। এখনও পর্যন্ত আন্টার্কটিকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ৮৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা কমে যাওয়া ও মেরু স্রোতের প্রভাব— এই দুই কারণে আন্টার্কটিকা পরিণত হয়েছে বরফ মেরুতে। এক সময় এখানে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় গাছ, পশু-পাখি থাকলেও চরম শীতে তারা আর টিকে থাকতে পারেনি। সেইসঙ্গে বিজ্ঞানীদের ধারণা, উল্কাপিণ্ডের আঘাতে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় সমস্ত প্রজাতির ডাইনোসর। এভাবেই ধীরে ধীরে প্রাণহীন, শীতলতম মহাদেশ হয়ে উঠেছে আন্টার্কটিকা। তবে শীতলতম ও শুষ্ক আবহাওয়া হলেও এই মহাদেশে এখনও দেখা মেলে একাধিক প্রাণীর। এখানে ঘুরে বেড়ায় পেঙ্গুইন, সামুদ্রিক সিলের মতো বরফচর প্রাণীরা। তবে, তোমরা তো জানো, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে বরফের মহাদেশের বরফও গলছে ক্রমশ। তাই আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে। বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে প্রকৃতির।

14th     May,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ