বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

যত ‘পাই’, 
তত বিস্ময়

গত ১৪ মার্চ ছিল ‘পাই ডে’। ক্লাসরুমে বৃত্তের পরিধি, ক্ষেত্রফল মাপার এই খটোমটো জিনিস ‘পাই’ (π)। এমন একটা জিনিস নিয়েই প্রতি বছর বিশেষ এই দিবস পালন করা হয়। প্রাচীন গ্রিক ভাষায় ‘পি’ একটি গুরুত্বপূর্ণ গাণিতিক ধ্রুবক। যার মান ২২/৭ অর্থাৎ মোটামুটি ৩.১৪। মার্কিন পদ্ধতিতে তারিখ গণনায় মাস আগে আসে, পরে দিন। এই হিসেবেই বছরের তৃতীয় মাসের ১৪তম দিনটিকে ‘পাই দিবস’ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পাই নিয়ে এত মাতামাতি কেন?
রহস্য-রোমাঞ্চই মানুষকে সবচেয়ে বেশি টানে। যে বিষয়ে যত রহস্য, সেই সকল বিষয়ে মানুষের আগ্রহও সবচেয়ে বেশি হয়। অঙ্কের এমন অনেক টপিক রয়েছে, যার পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে বিস্ময়। এমনই এক রহস্য ঘেরা গাণিতিক চিহ্ন— ‘পাই’ (π)। যার মান ৩.১৪১৫৯ ধরা হয়ে থাকে। ‘পাই’ গ্রিক বর্ণমালার ১৬তম বর্ণ। ইউক্লিডের জ্যামিতি অনুসারে ‘পাই’ হল বৃত্তের পরিসীমা ও ব্যাসের অনুপাত। বিষয়টি সহজ করে বুঝতে গেলে একটা বৃত্ত নিয়ে চিন্তা করতে হবে। বৃত্তের পরিধিকে যদি ব্যাস দিয়ে ভাগ করা হয়, সেটা হচ্ছে ‘পাই’।
আমরা জানি, কোনও বৃত্তের একটি বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে আবার সেই বিন্দুতে ফিরে এলে যে দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়, তা হচ্ছে বৃত্তের পরিধি। আর যদি ওই বিন্দু থেকে সোজা কেন্দ্র বরাবর বিপরীত দিকের বিন্দু পর্যন্ত যে সরলরেখা পাওয়া যাবে, এই রেখার দৈর্ঘ্যই হচ্ছে বৃত্তের ব্যাস। সুপ্রাচীন কাল থেকেই মানুষ জানতে পেরেছিল, বৃত্ত যে আকারেরই হোক না কেন, তা যত বড় বা ছোটই হোক না কেন, তার পরিধিকে ব্যাস দিয়ে ভাগ করলে মান সবসময় একই রকম হয়। ব্যাসের তুলনায় পরিধি সবসময়ই তিন গুণের একটু বেশিই হয়। যে কোনও বৃত্তের ক্ষেত্রেই এটা সত্যি। চোখের মণি থেকে সূর্য এই একই হিসেব মেনে চলে। এমনকী, আলোকতরঙ্গ, শব্দতরঙ্গের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। বোঝাই যাচ্ছে, প্রকৃতির বিভিন্ন বস্তুকে আর তাদের রহস্যকে বোঝবার জন্যে যত অঙ্ক রয়েছে, তাতে এই ম্যাজিক সংখ্যাটির বিশাল ভূমিকা রয়েছে! এর মান তিন গুণের বেশি তো ঠিক আছে, কিন্তু তা কত টুকু বেশি? বৃত্তের পরিধিকে ব্যাস দিয়ে ভাগ করলে প্রথমে আসবে তিন। তবে একটু ভাগশেষ থাকবে। ঠিক আছে। ভাগের নিয়মে দশমিক বসিয়ে ফের চেষ্টা করলেও ভাগশেষ থাকবে। আসলে এইভাবে ভাগ চালিয়ে গেলেও তা কোনওদিন শেষ হবে না। ভাগশেষ থেকেই যাবে। এই ম্যাজিক ফিগার প্রকৃতির সমস্ত কিছু মাপের ক্ষেত্রেই নিখুঁত মানে ধরা দেয় না। অর্থাৎ পাই অমূলদ সংখ্যা, যা কোনওদিনও শেষ হবে না। মানে এটিকে দু’টি পূর্ণ সংখ্যার ভগ্নাংশ আকারে প্রকাশ করা যায় না। সহজ কথায়,  এটিকে দশমিক আকারে সম্পূর্ণ প্রকাশ করা সম্ভব নয়। 
ফলে ‘পাই’ আদৌ তুচ্ছ কোনও বিষয় নয়। তা নিয়ে প্রাচীনকালেই চিন্তাভাবনা শুরু হয়। ভারত ও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের প্রাচীন গণিতজ্ঞদের এব্যাপারে চিন্তাভাবনার উল্লেখ রয়েছে। পাইয়ের মান নির্ধারণে ভারতের প্রাচীন গণিতজ্ঞ আর্যভট্টের ভূমিকাও এপ্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। এব্যাপারে প্রথম যে নিদর্শন পাওয়া যায়, তা প্রায় চার হাজার বছর আগের মিশরে। আর কম্পিউটার আবিষ্কার হওয়ার পর মানটা অনেক নিখুঁতভাবে বের করা গিয়েছে। দশমিকের পর ৫ ট্রিলিয়নখানা সংখ্যা পর্যন্ত পৌঁছনো গিয়েছে। কিন্তু ভাগশেষ থেকেই গিয়েছে। কে জানে, হয়তো মহাবিশ্বের কোনও বড়সড় ধাঁধা লুকিয়ে আছে ওর মধ্যে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো অনেকে দশমিকের পর  পুরো ১০০ ঘর পর্যন্ত মুখস্থ বলতে পারে? অনেকে পারে আরও বেশি। তোমরাও চেষ্টা করে দেখতে পার। তাহলে বন্ধুদের চমকে দিতে পারবে..।

19th     March,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ