বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

মাছেদের রঙিন দুনিয়া
শৌণক সুর

আদ্যিকালের দোকান। কাচের বড় বড় অ্যাকোরিয়াম। উপরে-নীচে করে সাজানো আছে প্রায় দশটিরও বেশি। তাতে ঝাঁকে ঝাঁকে খেলে বেড়াচ্ছে রেড মলি, ব্ল্যাক মলি। দামির মধ্যে রয়েছে সোর্ড টেল মলি। তাদের দেহের রং লাল কিন্তু লেজ আবার তলোয়ারের মতো একদিকে বেরিয়ে রয়েছে। কিছু জাতের আবার চোখ লাল। সেগুলির দাম কিছুটা বেশি। নীচে কোণের দিকে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি অ্যাকোরিয়ামে খেলে বেড়াচ্ছে গাপ্পি মাছ। এরা নাকি লার্ভা খেয়ে মশককুলের বংশবৃদ্ধি রোধ করে। অবশ্য মশাখেকো হলেও মাছগুলি দেখতে বড়ই সুন্দর। গায়ে হলদে কালোর ছোপ। লেজগুলি দেহের তুলনায় কিছুটা বড়। যেন প্রজাপতির ডানার মতো খেলে বেড়াচ্ছে। উপরের ডানদিকের দু’টি অ্যাকোরিয়ামে রয়েছে গোল্ড ফিশ। একটিতে রয়েছে অরেন্ডা প্রজাতির। দেহ সাদা বা কমলা। এদের মাথায় লাল বা কমলা রঙের উঁচু টিবির মতো রয়েছে। দেখতে খুব সুন্দর। পিছনে রয়েছে দুই জোড়া লেজ। হেলেদুলে গোটা অ্যাকোরিয়ামে ঘুরে বেড়াচ্ছে মাছগুলি। পাশের অ্যাকোরিয়ামে রয়েছে লিচু গোল্ড ফিশ। অরেন্ডার তুলনায় কিছুটা ছোট। কিন্তু পেট দেহের দু’দিকে বেশ খানিকটা করে বেরিয়ে রয়েছে। দেখে মনে হয় যেন পেটে লিচু বাঁধা রয়েছে। তবে এগুলির দাম অরেন্ডায় তুলনায় কম। একটি অ্যাকোরিয়ামে রয়েছে বহু অ্যাঞ্জেল প্রজাতির মাছ। চ্যাপ্টা ধরনের শরীর। গায়ে জেব্রার মতো দাগ। কয়েকটির দেহ আবার একরঙা। এগুলির পিঠ এবং পেটের দিক থেকে শুঁড়ের মতো বেরিয়ে রয়েছে। যা দেখে কোনও পরির কথাই মনে হবে। কোণের দিকে দেওয়ালে ঠেস দেওয়া দু’টি অ্যাকোরিয়ামে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে খেলে বেড়াচ্ছে কয়েকটি মাছ। কিছুর দেহ একেবারে সাদা। কয়েকটি আবার কালো, পেটের দিকে সামান্য সাদা রঙের ছোঁয়া রয়েছে। দেহের গঠন কতকটা ট্যাংরা মাছের মতন। এগুলি টাইগার শার্ক। সাদাগুলি অ্যালবিনো। তার পাশের জলাধারে খেলে বেড়াচ্ছে রুপোলি রঙের গোটা কয়েক মাছ। নাম সিলভার শার্ক। দেহ ও পাখনার সর্বত্র কোনও অদৃশ্য জাদুবলে যেন কালো স্কেচ পেন দিয়ে বর্ডার এঁকে দেওয়া হয়েছে। একটি কাঠের তাকে আলাদা আলাদা জারে রাখা রয়েছে কয়েকটি মাছ। প্রত্যেকটির গায়ের রং চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। কোনওটি গাঢ় লাল, কোনওটি গাঢ় নীল। কোনওটি আবার কালো কিন্তু লালের আভা রয়েছে। এগুলির নাম ফাইটার। একটি জারে একটিই রাখতে হয়। দু’টি রাখলেই মারামারি করবে। সেইজন্যই তো এর নাম ফাইটার। 
বল্টু অনেকক্ষণ ধরেই গোল গোল চোখে সব অ্যাকোরিয়ামগুলিকে নিরীক্ষণ করছিল। কিন্তু কোনটা নেবে তা সে বুঝতে পারছে না। কী মাছ নেবে খোকা? অমায়িক গলায় এগিয়ে এলেন দোকানের মালিক দীপুকাকু। কিন্তু বল্টুর মুখে তখনও উত্তর নেই। কী মাছ যে সে নেবে, তা বুঝতেই পারছে না। প্রথমে ঠিক করেছিল ছোট্ট এক বা দুই ফুটের একটি অ্যাকোরিয়াম কিনবে। রঙিন পাথর দিয়ে অ্যাকোরিয়ামের নীচের দিকটা সাজাবে। অ্যাকোরিয়ামের ভিতরে লাগাবে বেশ কয়েকটা গাছ। আসল বা নকল যেটাই হোক। জল পরিষ্কার রাখার জন্য কিনতে হবে পাম্প। জলের তাপমাত্রা কত রয়েছে তা জানার জন্য থার্মোমিটারের মতো যন্ত্রও দোকানে রয়েছে। এছাড়া ডুবুরির আকৃতির কিছু খেলনা রয়েছে। কিন্তু এখন দোকানের উপরের তাকে রাখা গোল গোল ফুটবলের মতো কাচের জার বল্টুর মন জয় করে নিয়েছে। অ্যাকোরিয়াম কিনবে না ওই গোল জার তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে সে। মুশকিল আসান করে দিলেন দীপুকাকুই। বললেন, খোকা গোল জার দেখতে ভালো ঠিকই। কিন্তু ওতে তো বেশি মাছ ধরবে না, বড়জোর গোটা তিন বা চার গোল্ড ফিশ। তার চেয়ে বরং তুমি দুই ফুটের অ্যাকোরিয়ামটাই নাও। এক্সপার্ট ওপিনিয়ন পেয়ে মন কিছুটা সুইং করে বল্টুর। এর কিছুদিনের মধ্যেই তার বন্ধুরাও সংক্রমিত হল এই রঙিন মাছ পোষার নেশায়। তোমরা কি কেউ যাও রবিবার শ্যামবাজারের কাছে গ্যালিফ স্ট্রিটের হাটে? সেখানে গেলে কিন্তু উপরের মাছগুলি ছাড়াও দেখতে পাবে অস্কার, প্যারট, ফেদার, ডিসকাস, অ্যারোনার মতো সুন্দর সুন্দর মাছ। যা তোমাদের মন ভরিয়ে দেবে।

26th     June,   2022
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ