বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

মাধ্যমিকের প্রস্তুতিতে এই
সময়টাকে কাজে লাগাও

কমবেশি আর সাড়ে চার মাস বাকি তোমাদের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা— মাধ্যমিক। তাই সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই পরিকল্পনা মাফিক জোর কদমে শুরু করতে হবে পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি। আজ তোমাদের জন্য মার্কশিট বিভাগে রইল বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, জীবনবিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান ও অঙ্ক পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার টিপস। আলোচনা করেছেন বিভিন্ন স্কুলের বিশিষ্ট শিক্ষক।

বাংলা 
পরামর্শে হিন্দু স্কুলের বাংলার শিক্ষক স্বাগত বিশ্বাস
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্যও সিলেবাস কমিয়ে দিয়েছে। প্রশ্নপত্রের ধরন ও নম্বর বিভাজন অপরিবর্তিত আছে। পাঠ্য প্রথম তিনটি গল্প, প্রথম পাঁচটি কবিতা, প্রথম প্রবন্ধের জন্য পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়। লেখক পরিচিতি, শব্দার্থ, উক্তির বক্তা-শ্রোতা, কারণ ও তাৎপর্য দেখে রাখ। ব্যাখ্যামূলক ও রচনাধর্মী প্রশ্নের জন্য বিভিন্ন সালের প্রশ্নপত্র ও পুরনো বছরের টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্ন দেখে এখন থেকেই উত্তর লেখা অভ্যাস করো। ‘সিরাজদৌল্লা’ নাটক থেকে সিরাজ চরিত্র, সিরাজের সঙ্গে বণিক প্রতিনিধি ও রাজকর্মচারীদের কথোপকথন, ঘষেটি বেগম ও লুৎফা চরিত্র ভালো করে পড়। ‘কোনি’ উপন্যাসের প্রতিটি পরিচ্ছেদে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ও সংলাপ কে, কাকে, কোন প্রসঙ্গে, কেন বলছে তাও খাতায় নোট করবে। কারক ও সমাস থেকে নানান শ্রেণিবিভাগ ও তাদের উদাহরণসহ সংজ্ঞা এবং প্রতিটি পাঠ্য কবিতা, গল্প, নাটক, প্রবন্ধ থেকে নেওয়া লাইন অনুশীলন করবে।
বেশি নম্বর থাকে নির্মিতি অংশে। বঙ্গানুবাদ, প্রতিবেদন অথবা সংলাপ রচনা টেস্ট পেপার দেখে অনুশীলন করো। প্রবন্ধের জন্য বিজ্ঞান ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় (বিজ্ঞান ও কুসংস্কার, দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান, পরিবেশ দূষণ ও প্রতিকার, বিশ্ব উষ্ণায়ন, বনসৃজন), নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বাংলার উৎসব, বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য, দেশপ্রেম, চরিত্র গঠনে খেলাধুলার ভূমিকা ইত্যাদি যে সাধারণ বিষয় থাকে এখন থেকেই এগুলি লিখে তৈরি হও। মনে রাখবে ঠিকমতো তোমার বক্তব্য লিখতে পারলে সব প্রশ্নেই পূর্ণমান দেওয়া হয়। নম্বর বিভাজন ও সময় তোমাদের সবারই জানা। যদি সময় ধরে এখন থেকে উত্তর লেখা অনুশীলন করো, তাহলে ৩ ঘণ্টাতে শেষ করতে পারবে।
ইংরেজি 
পরামর্শে হাওড়া জিলা স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক তন্ময় ভট্টাচার্য
সিলেবাসের বোঝা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবে তাতে নিষ্ঠার মূল্য কমেনি। প্রশ্নপত্রে গদ্যাংশ এবং পদ্যাংশ দুই-ই থাকবে। উত্তর লিখার আগে সেগুলো ভালো করে পড়ে বুঝে নেবে। তারপর উত্তর লেখা শুরু করবে। অযথা এটা ওটা না লিখে, ঠিক যতটুকু জানতে চাওয়া হয়েছে, ততটুকুই লিখবে। উত্তর লেখার পর বাক্যগুলির Tense আর শব্দগুলির বানান মিলিয়ে নাও। UNSEEN-এর ক্ষেত্রে, উত্তর শুরুর আগে অবশ্যই সবকটা প্রশ্ন (True-False, Filling the Chart, MCQ, Long Questions and Vocabulary) পড়ে নাও। এতে PASSAGE সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার হবে। 
UNSEEN থেকে নির্বাচিত সমার্থকগুলির Tense আর Parts of speech যেন প্রশ্নপত্রের Vocabulary Section-এ প্রদত্ত শব্দগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়। বারবার অনুশীলন করে Phrasal verb, Preposition, Verb-forms আত্মস্থ করে ফেল। Joining বা Sentence-transformation-এর ক্ষেত্রেও তাই। Writing Section-এ প্রশ্ন ভালো করে পড়ে বুঝে নাও ঠিক কী লিখতে বলছে। প্রদত্ত প্রত্যেকটা point-এ নম্বর আছে। তাই সেগুলো ব্যবহার করেই বাক্য নির্মাণ করো। শব্দসীমা মেনে প্রসঙ্গ ধরে লিখবে। আর খাতা যেন পরিচ্ছন্ন থাকে। 
ইতিহাস 
পরামর্শে সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক সঞ্জয় পাল
হাতে আর চার থেকে সাড়ে চার মাস সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে অন্য ছটি বিষয়ের মতো ইতিহাসের জন্য নির্দিষ্ট সময় বের করে প্রস্তুত হতে হবে। তোমাদের হয়তো অনেকেরই অনলাইনে পর্ষদ নির্ধারিত সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অর্থাৎ প্রথম পাঁচটা অধ্যায় পড়া শেষ হয়ে গিয়েছে। কারও হয়তো শেষ হওয়ার পথে। তাই এই মুহূর্তে তোমাদের কর্তব্য ওই পাঁচটি অধ্যায় তোমাদের পাঠ্যবই ছাড়াও আরও দু-একটি বই থেকে খুঁটিয়ে পড়া। তাহলে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার জন্য চিন্তা থাকবে না। ২ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য পাঠ্যবই অনুশীলনীর পাশাপাশি বিগত বছরের মাধ্যমিকের প্রশ্নগুলির উত্তর খাতায় লিখে অনুশীলন করতে হবে। যেমন উদাহরণ হিসেবে মেকলে মিনিট, উডের ডেসপ্যাচ, ইলবার্ট বিল, নব্য বেদান্তবাদ, খুৎকাঠি প্রথা কী? ইত্যাদি। এবারে আসি ৪ নম্বর প্রশ্নের ব্যাপারে। চার নম্বরের প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য প্রশ্নে যেটুকু চাওয়া হচ্ছে ঠিক সেটুকুই লিখতে হবে। যেমন ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সত্তর বৎসর গ্রন্থটির ভূমিকা কী? হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার ভূমিকা কী? 
পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ডেভিড হেয়ার, বিদ্যাসাগর, বেথুন সাহেব প্রমুখের অবদান কী ছিল? এছাড়াও মহারানির ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব, কোল বিদ্রোহের কারণ, ভারতমাতা চিত্রের অবদান, বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা, আইএসিএস-এর ভূমিকা, বিটিআই-এর ভূমিকা, বসু বিজ্ঞান মন্দিরের ভূমিকা কী ছিল? ইত্যাদি।
এবারে আসি ৮ নম্বরের প্রশ্নের প্রসঙ্গে। তোমরা জানো ৮ নম্বরের একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। প্রশ্নে যদি দুটো অংশ থাকে তাহলে উত্তর দেওয়ার সময়ও দুটো অংশই আলাদা করে লিখবে। যেমন ধরো বাংলার নবজাগরণের চরিত্র বিশ্লেষণ করো এবং এর সীমাবদ্ধতা কী ছিল? অথবা সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো। শিক্ষা বিস্তারে প্রাচ্যবাদী এবং পাশ্চাত্যবাদীর বিতর্ক কী? উচ্চ শিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো। আবার যদি মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো, এরকম সোজা প্রশ্ন আসে তাহলে সে ক্ষেত্রে খুব সংক্ষেপে ১৫-১৬টি বাক্যে উত্তর লিখতে হবে। 
ভূগোল 
পরামর্শে বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূগোলের শিক্ষক কিংশুক মণ্ডল
সম্প্রতি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মাধ্যমিক ভূগোলের সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রম এবং প্রশ্নের ধাঁচ জানিয়ে দিয়েছে। সে অনুসারে প্রাকৃতিক ভূগোল অংশে নদী, হিমবাহ  ও বায়ুর ক্ষয়জাত ও সঞ্চয়জাত  ভূমিরূপ অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকেই চারটি বড় প্রশ্নের (পাঁচ নম্বর) মধ্যে দু’টির উত্তর চিত্রসহ লিখতে হবে। এছাড়া এই অংশ থেকে পাঁচটি এমসিকিউ, সাতটি অতিক্ষুদ্র উত্তরধর্মী, দুটি দু’নম্বরের এবং দুটি তিন নম্বরের উত্তর লিখতে হবে। সেকারণে এই অংশের প্রতিটি লাইন বারংবার পড়তে হবে। ভূমিরূপ ড্রয়িং করতে হবে এবং উদাহরণ সহ বড় প্রশ্নের উত্তর তৈরি করতে হবে।
‘ভারতের ভূগোল’ অধ্যায়ে থাকবে বাকি প্রশ্নগুলি। এখানে ভারতের ভূপ্রকৃতি, জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক, মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণ, ফলাফল, অরণ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি, কৃষি অংশে ধান, গম, চা, কফি, আখ চাষের অনুকূল পরিবেশ, শিল্প অধ্যায়ে কার্পাস বয়ন, লোহা ইস্পাত খুব গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য বিষয়। এছাড়া ভারতে জনবণ্টনের তারতম্য, নগরায়ণের সমস্যা ইত্যাদি বিষয়গুলি খুব খুঁটিয়ে পড়তে হবে। সঙ্গে রাখ মানচিত্র বই, যা দেখে পড়লে পড়া তৈরি হবে তাড়াতাড়ি আবার ম্যাপ পয়েন্টিং- এর সমস্যার সমাধান হবে দ্রুত। 
এই সংক্ষিপ্ত পাঠক্রম ভালোভাবে রপ্ত করে নাও যাতে বিদ্যালয়ে যদি টেস্ট পরীক্ষা হয় তবে যেন নম্বর ভালো ওঠে। কারণ, টেস্টের নম্বর আবার কাজেও লেগে যেতে পারে।
    সুতরাং এই মহামারী সময়ে আমাদের দুটি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে— প্রথমত করোনা সংক্রমণ নিয়ে এবং দ্বিতীয়ত লেখাপড়ার বিষয়ে। কারণ, এই রোগ একদিন বিদায় নেবে অনেক ক্ষতির বিনিময়ে, তেমনই এই ম্লান সময়ে তোমাদের মার্কশিট যেন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তোমাদের মেধায়। 
জীবনবিজ্ঞান
পরামর্শে বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক অরণ্যজিৎ সামন্ত
২০২২-এর মাধ্যমিক পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হবে। প্রশ্ন থাকবে প্রথম তিনটি ইউনিট থেকে। ফলে অধ্যায়গুলি খুঁটিয়ে পড়ে, তারপর মাধ্যমিকের পুরনো প্রশ্ন ও বিভিন্ন বই থেকে প্রশ্ন বেছে উত্তর লেখা অভ্যাস করতে হবে। লেখার অভ্যাস পড়ার মতোই সমান গুরুত্বের। ক্রিকেটে যেমন ব্যাটিং আর বোলিং দুটো ভালো না হলে চলে না। এখানেও পড়া আর তার সঙ্গে লেখা দুটোই সমান ওজনের হওয়া চাই। প্রথম ভাবমূলের থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি হল—উদ্ভিদ ও প্রাণী হরমোন, স্নায়ুতন্ত্র এবং চলন ও গমন। হরমোনের নাম, উৎস কাজ, প্রভাবজনিত ফল উল্লেখ্য। স্নায়ুতন্ত্রের গঠন, স্নায়ুর গঠন, নিউরোন (ছবিসহ) ভালোভাবে দেখতে হবে। মস্তিষ্কের গঠন অংশটি ছক করে পড়ে রেখ। চোখ ও কানের গঠন ছবিসহ করে রাখা ভালো। প্রতিবর্ত ক্রিয়া অংশটিও যত্ন নিয়ে তৈরি করবে। মানুষের গমনের পেশি ও কঙ্কালের ভূমিকা জেনে রাখবে। এগুলি বিশেষভাবে বলা হল মানে এই নয় বাকি অংশের গুরুত্ব নেই। কমে যাওয়ার পর সিলেবাসের প্রতিটি অংশ থেকেই প্রশ্ন আসতে পারে। বিশেষ করে, প্রশ্নের ধাঁচ তো তোমরা জানো, ছোট প্রশ্ন নির্ভর।   
দ্বিতীয় ভাবমূলের কোষ, অঙ্গাণু, ক্রোমোজোম, ডিএনএ, আরএনএ, কোষ বিভাজন (ছবিসহ) অভ্যাস করতে হবে। মাইটোসিস ও মিয়োসিস বিভাজনের গুরুত্ব ও পার্থক্য উল্লেখ্য। জনন অধ্যায়টির প্রতিটি পর্যায় উদাহরণ সহ তৈরি করতে হবে। পার্থক্য নির্ণয়ের প্রশ্ন আসে এখান থেকে। বৃদ্ধি ও বিকাশ অংশটিও দেখে রাখতে হবে।
বংশগতি অধ্যায়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেন্ডেলিজম থেকে বহু রকম প্রশ্ন আসতে পারে। এক ও দ্বি-সংকরায়ন, সূত্র, বৈশিষ্ট্য নির্বাচন, লিঙ্গ সংযোজিত উত্তরাধিকার, মটরগাছ বেছে নেওয়ার ও সাফল্যের কারণ দেখে রাখবে। গিনিপিগের উদাহরণ ব্যবহার করেও উত্তর তৈরি করে রাখবে। বিভিন্ন রোগের মধ্যে থ্যালাসেমিয়ার কারণ ও ফলাফল গুরুত্ব দিয়ে দেখে রাখবে। বর্ণান্ধতা, হিমোফিলিয়া থেকেও নানারকম প্রশ্ন আসে। 
একটা কথা মনে রাখবে, যত বেশি প্রশ্ন দেখবে আর উত্তর লেখা অভ্যাস করবে, পরীক্ষায় ততটাই সুবিধা পাবে। কাজেই অনুশীলন করে যাও। সাফল্য আসবেই।   
ভৌতবিজ্ঞান
পরামর্শে মিত্র ইনস্টিটিউশনের (মেইন) ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষক সৌরভ দাশগুপ্ত
মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রমে। কিছু অধ্যায় বাদ দেওয়া হয়েছে, ফলে বাকি অধ্যায়গুলির অন্তত নম্বরের নিরিখে গুরুত্ব বেড়েছে। যেমন পদার্থবিদ্যা অংশে আলো এবং চলতড়িৎ এই দুই অধ্যায় থেকে আগে ১২ নম্বর করে আসত, এবার ১৭ নম্বর করে আসবে। তাই প্রথমেই এই দুটি অধ্যায় গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। 
আলোর ক্ষেত্রে আলোর গতিপথ চিত্র অঙ্কন করতে সর্বদা মনে রেখে তির চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে। সদবিম্ব নিরবচ্ছিন্ন রেখা বা Solid line এবং অসদ বিম্ব-বিচ্ছিন্ন রেখা বা Discrete line দ্বারা দেখানো হয়ে থাকে।  যেহেতু দীর্ঘদিন স্কুলে না যাওয়ার ফলে অনেকেই নিয়মিত পড়লেও, লেখার অভ্যাস করতে ভুলে যাচ্ছে। তাই যে কোনও সূত্র বারবার লিখে অভ্যাস করতে হবে। রোজ যদি নিয়ম করে কোনও নির্দিষ্ট বইয়ের দুটি পৃষ্ঠাও পড়া যায় তবে তা থেকে প্রশ্ন-উত্তর কী হতে পারে তা চিন্তা করে খাতায় লিখে প্রশ্ন-উত্তর আকারে অভ্যাস করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভৌতবিজ্ঞানের প্রশ্নে ১ বা ২ নম্বরের প্রশ্নই তুলনায় বেশি আসে। চলতড়িৎ অধ্যায়ের ক্ষেত্রে আমরা বিগত বছরের প্রশ্নগুলির পর্যালোচনা করে বুঝতে পারি ‘ওহমের সূত্র লেখ’, ‘জুলের সূত্র লেখ’ জাতীয় ‘সুত্র লেখ’ প্রশ্ন বেশি আসে।  রসায়ন অংশে পর্যায় সারণী অধ্যায়ের জন্য নির্ধারিত ১০ নম্বর (যা আগে ছিল ৬)। এক্ষেত্রে বিভিন্ন মৌলের ধর্মের তুলনামূলক আলোচনা করে পড়তে হবে। ‘আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন’ অধ্যায়ে বর্তমান নির্ধারিত নম্বর ১৫, অর্থাৎ এই অধ্যায়টির গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। ধাতু ও অধাতু গুলির যৌগ গঠনের ক্ষেত্রে ইলেকট্রন বিন্যাসের বিভিন্নতা কীভাবে কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করে দেখলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে যত বেশি সংখ্যায় যৌগের ইলেকট্রন ডট গঠন চিত্র অভ্যাস করা যাবে ততই পরীক্ষায় পরিচিত প্রশ্ন পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। তড়িৎ প্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায়টিতে বিভিন্ন তড়িৎ বিশ্লেষ্যের ব্যবহার এবং অ্যানোড ও ক্যাথোডে রাসায়নিক বিক্রিয়ার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বারংবার লিখে অভ্যাস করতে হবে। পরিশেষে বলা যায় লেখার অভ্যাস যেন হারিয়ে না যায় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
অঙ্ক
পরামর্শে রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম উচ্চ বিদ্যালয় (উচ্চ মাধ্যমিক)-এর অঙ্কের শিক্ষক সুব্রত মহন্ত
মাধ্যমিক পরীক্ষায় অঙ্কে ভালো ফলের জন্য তোমরা এখন থেকেই নিয়মিত মনোযোগ দিয়ে পড় ও অনুশীলন করো। তাহলেই আশানুরূপ ফল পাবে। অঙ্ক একটি মানসিক বিষয়, তাই শান্ত মাথায় অঙ্কের সঙ্গে একাত্ম হতে হয়। পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, পরিমিতি, ত্রিকোণমিতি ও রাশিবিজ্ঞান— এই ছয়টি উপবিষয়ে ‘অঙ্ক’-এর সিলেবাসটিকে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি উপবিষয় কীভাবে প্রস্তুত করলে তোমরা তোমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে তা এক-এক করে আলোচনা করছি।
পাটিগণিত: সরল সুদকষা ও চক্রবৃদ্ধি সুদ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান করতে হলে প্রথমে এই দুটি অধ্যায় সংক্রান্ত সূত্রগুলি ভালো করে বুঝে মুখস্থ করবে। শুধু তাই নয়, এর প্রয়োগ করার সময় অবশ্যই হিসেব সঠিকভাবে কষা বাঞ্ছনীয়। অংশীদারি কারবার সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের সময় প্রশ্নটা ভালো করে পড়ে, চিন্তা করে সমাধান করবে।
বীজগণিত: বীজগণিত প্রধানত সূত্র সংক্রান্ত সমস্যা। তাই বীজগণিতের সূত্র মুখস্থ করে তার প্রয়োগ নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যবহার করতে হয়। দ্বিঘাত সমীকরণ, অনুপাত-সমানুপাত, করণী ও ভেদ- এই চারটি অধ্যায়ের উদাহরণসহ অনুশীলনীর সমস্যাগুলি ভালো করে অভ্যাস করলে ভালো ফল পাবে।
জ্যামিতি: উপপাদ্য ও তাদের প্রয়োগ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য পাঠ্যপুস্তকে কষে দেওয়া সমস্যাগুলির প্রতিটি লাইন বুঝে বুঝে পড়বে বারবার। কখনও মুখস্থ করবে না। এতে ভালো ফল পাবে। সম্পাদ্য অঙ্কণের ক্ষেত্রে সঠিক মাপ খুবই জরুরি। তাই বাড়িতে বারবার এঁকে অভ্যাস করবে। সম্পাদ্যে ‘অঙ্কন চিহ্ন ও অঙ্কন পরিচিতি দিতে ভুললে চলবে না।
পরিমিতি: যেহেতু পরিমিতি একটি সূত্র নির্ভর বিষয়, তাই তোমাদের সিলেবাসের অন্তর্গত ‘আয়তঘন’, ‘চোঙ’, ‘শঙ্কু’, ‘গোলক’- সংক্রান্ত যাবতীয় সূত্রগুলি বুঝে মুখস্থ করবে। এই সূত্রগুলি উপযুক্ত স্থানে প্রয়োগের মাধ্যমেই ভালো ফল পাবে। সঠিক জায়গায় সঠিক একক লেখাটা বাঞ্ছনীয়। 
পরীক্ষার হল-এ ‘সময়’ একটা বড় বিষয়। তাই কম সময়ে যাতে সব প্রশ্নের সমাধান করা যায়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবে। মাথা ঠান্ডা করে ধীরে ধীরে সকল প্রশ্নের সমাধান করবে। দেখবে চিহ্ন সংক্রান্ত, দশমিক সংক্রান্ত ভুল যেন না থাকে। সেই সঙ্গে বাড়তি প্রস্তুতির জন্য বাড়িতে বিগত বছরের প্রশ্নপত্রগুলো নির্দিষ্ট সময় ধরে অবশ্যই অনুশীলন করবে। 

12th     September,   2021
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ