বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

আমাদের সবুজ পৃথিবী

স্বপ্নের পরিবেশ ফিরে পেতে চাই
 প্রভাতে পাখির কূজন, চাষিদের লাঙল নিয়ে মাঠে যাওয়ার দৃশ্য এখন আর গ্রামে দেখা যায় না। খোলা মাঠে গ্রামের ছোটরা খেলে না। পুকুরের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। তালগাছের সারি আর তেমন চোখে পড়ে না। গ্রামের বাড়িতে শাক তুলতে যাওয়ার ঝুড়ি থাকত, এখন আর সেসব নেই। এসব যে আমি নিজে দেখেছি, তা নয়। তবে বড়দের মুখে গল্প শুনে মনে হয়েছে, আগের সবকিছুই কত ভালো ছিল। কত আনন্দের ছিল। শহর গ্রামকে গিলে খেয়ে নিচ্ছে। শহর মানে যন্ত্র। সেটাকে ঘিরে সভ্যতার বিস্তার ঘটছে। ফলে সবকিছু যান্ত্রিক হয়ে পড়ছে। যন্ত্রের মন নেই। মানুষও তার মনকে মেরে ফেলছে। মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে প্রকৃতি থেকে। একা হয়ে যাচ্ছে। আমার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ খুব ভালো লাগে। গাছপালা পশুপাখি খোলা মাঠ ঘাট থাকলে সেখানে বসে আমি সময় কাটাতে পারব। ছোটরা খেলতে পারবে। নিয়ম আমার বেশি ভালো লাগে না। রুটিন বাধা যন্ত্রের জীবন আমি পছন্দ করি না। প্রকৃতির মাঝে সবাই আমরা মিলেমিশে থাকব আর আনন্দে নিজের নিজের কাজ করব, এটাই আমি চাই। আমার চারপাশের পরিবেশ সেভাবেই যেন সেজে ওঠে। কোনও একদিন সকালে উঠে যেন আমি দেখি আমার সেই স্বপ্নের পরিবেশ গড়ে উঠেছে।   
দেবজিৎ দে, দশম শ্রেণি
পুরুষোত্তমপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁকুড়া
সর্বত্র যদি পাহাড়ের মতো পরিবেশ হতো
 প্রাকৃতিক পরিবেশের কথা আমি বিজ্ঞান বইতে পড়েছি। এই পরিবেশ নিজে থেকেই তৈরি হয়। মানুষ তৈরি করতে পারে না। বিভিন্ন জায়গার প্রাকৃতিক পরিবেশ বিভিন্ন রকমের হয়। শুষ্ক মরুভূমি, পাহাড়, নদী, সমুদ্র, জঙ্গল নিজে থেকেই তৈরি হয়েছে। আমার মনের মতো প্রাকৃতিক পরিবেশ হল পাহাড়। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা আমার খুব ভালো লাগে। রাস্তার দু’ধারে ওক, পাইন, ফার গাছগুলো কী ভীষণ সুন্দর দেখতে লাগে আমার। রংবেরঙের পাহাড়ি ফুল দেখে মন ভরে যায়। খাদ পেরিয়ে যখন ওপরে উঠে দেখি চা বাগান-মহিলারা পিঠে ঝুড়ি নিয়ে চা পাতা তুলছে। দূরের পাহাড়গুলো সবুজ আর সবুজ, ছোট্ট ছোট্ট কত কাঠের বাড়ি, কী সুন্দর লাগে দেখতে। মেঘ যেন গায়ে, মুখের ওপর দিয়ে ছুটে যাচ্ছে। চিৎকার-চেঁচামেচি কিচ্ছু নেই। ঠান্ডা আর ঠান্ডা। মাথায়, গায়ে, পায়ের তলাতেও বরফ। কখনও রোদ, কখনও বৃষ্টি, কখনও বা সরলবর্গীয় বৃক্ষের মাথায় বরফের স্তর। আহা! কী সুন্দর প্রকৃতির রূপ। এই রকম প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে মন যেন আর ফিরতে চায় না। পাহাড়ের মতো এমন দূষণমুক্ত পরিবেশ যদি বাকি সব জায়গায় পাওয়া যেত তাহলে কী ভালোই না হতো! যেখানে ছয়টি ঋতু নিয়ম মেনে আসবে। অবাঞ্ছিতভাবে গাছ কাটা যাবে না। নিয়মিত বৃক্ষরোপণ করতে হবে। যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা যাবে না।  অহেতুক জল অপচয় করা যাবে না। অবশ্য এমন দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে আট থেকে আশি সবাইকে একত্রিত হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সবাইকে শপথ নিতে হবে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার। 
আদৃতা মুখোপাধ্যায়, চতুর্থ শ্রেণি
রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুল
চারদিকে শুধু সবুজের সমাহার
 আজ হঠাৎ খুব ভোরবেলায় ঘুম ভেঙে গেল। জানালায় দাঁড়িয়ে দেখি এই প্রকৃতিতে প্রভাতটা কত মনোরমভাবে পাখির কণ্ঠের কলকাকলির সঙ্গে শুরু হয়। সূর্যদেব তাঁর আলোকরশ্মির স্রোত ঢেলে দেন এই সবুজ সারথি পৃথিবীর বুকে। সেই প্রথম আলো মেখে ধরণী হেসে ওঠে এক নতুন সাজে অপরূপ মহিমায়। 
কী মাধুর্য সেই ধনধান্যে পুষ্পে ভরা বসুন্ধরার! পাখিরা তাদের ডানা মেলে মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ায়। গাছেরা বাতাসের সান্নিধ্যে ডালপালা নাড়িয়ে জানান দেয় এক সুন্দর প্রভাতের। বাতাসের মধ্যে দিয়ে জগতের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা পুষ্প তাদের অপূর্ব সুবাস-এর মাধ্যমে পুরো পৃথিবীকে যেন ভরিয়ে তোলে। রাতের বেলা আকাশে প্রস্ফুটিত চাঁদ তারা পৃথিবীর সৌন্দর্যকে আরও উদ্দীপিত করে তোলে। তবে, চন্দ্রমা এবং নক্ষত্রপুঞ্জের যে অপরূপ মহিমা তা নগরবাসীদের চোখে তেমন ভাবে আকৃষ্ট না হলেও, বেশিরভাগ গ্রামের বাসিন্দারা এই দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। যদি এমন হতো যে এই কংক্রিটে ঘেরা নগরের মধ্যে দিয়েও উপভোগ করা যেত, উপভোগ করা যেত সেই আকাশ যা কোটি কোটি নক্ষত্রপুঞ্জে ভরা যা গুনে শেষ করার উপায় নেই। ছোটবেলায় দেখতাম, প্রচুর চড়াই পাখিরা এসে বাড়ির ঘুলঘুলিতে বাসা বাঁধত, দাঁড়কাকেরা সারিবদ্ধভাবে ইলেক্ট্রিক তারের ওপর বসে থাকত। কোকিলের ডাক জানান দিয়ে যেত যে বসন্ত এসে গিয়েছে। 
এখন কি আর সেই মিষ্টি মধুর ডাক আদৌ শুনতে পাওয়া যায় এই ব্যস্ত শহরের মাঝে?
সেই সময়টা যদি আবার ফিরে আসত, যেখানে চলবে না কোনও ঘন কালো ধোঁয়া ওড়ানো গাড়ি, থাকবে প্রাণ জুড়ানো মনভোলানো শীতল হাওয়া, চারদিকে সবুজ গাছের সমন্বয় যা পরিবেশকে আরও সবুজ করে তুলবে। থাকবে না অক্সিজেন-এর বিন্দুমাত্র ঘাটতি। মানুষ বাঁচবে নিজের স্বাচ্ছন্দ্যে। রাস্তায় লুটোপুটি খাবে আনন্দ।
রিনিতা চক্রবর্তী, নবম শ্রেণি
বিধাননগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঋতু পরিবর্তন
 সমগ্র প্রাণীজগৎকে পরিবেষ্টন করে আছে জল, স্থল ও অন্তরীক্ষ। এই তিনটি নিয়েই আমাদের পরিবেশ। সেই প্রিয় পরিবেশকে অবলম্বন করেই আমরা বেঁচে আছি। ছোটবেলায় শুনেছি ছয় ঋতু নিয়েই আমাদের বারোটা মাস সম্পূর্ণ হয়। একটু বড় হয়ে এই ছয়টি ঋতু সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে  পড়েছি। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত — এই ঋতুগুলির বৈচিত্র্য ও পরিবর্তন যেন পরিবেশকে অপরূপভাবে সাজিয়ে তোলে। কিন্তু বর্তমানে ঋতুর পরিবর্তন তো দূরের কথা পরিবেশ যেন নিজের রূপকেই বদলে নিয়েছে।
এখন যেন গোটা বছরটাতেই গ্রীষ্ম ঋতু বিরাজ করে। এই পরিবর্তনশীল পরিবেশকে আমি দেখতে চাই না, আমি পরিবেশের মধ্যে চাই সেই ছয় ঋতুর সমাহার। আমি অনুভব করতে চাই গ্রীষ্মের পাকা আম কাঁঠালের গন্ধ, বর্ষার সোঁদা মাটির ঘ্রাণ। দেখতে চাই বৈশাখের কালবৈশাখীকে, শরতের কাশফুলকে। গ্রহণ করতে চাই শীতের খেজুর রসের স্বাদ। আর শুনতে চাই বসন্তের কোকিলের ডাক। শুধু এটাই না, আমি পরিবেশকে আরও সুন্দর ভাবে দেখতে চাই। সেই মাছ ভর্তি খাল, বিল, পুকুর, নদী, নালা। সেই ছড়িয়ে থাকা সবুজ ও কোমল গাছপালা। ঝিলের ধারে উড়ে এসে বসা রং-বেরঙের পাখির সমাহার। নদীর নির্মল জলের ওপর দিয়ে বয়ে চলা শীতল ও স্বচ্ছ বাতাস —এই সবটাই আমি পরিবেশের কাছ থেকে ফিরে পেতে চাই। তাই, পরিবেশের এই রূপসী রূপ ফিরে পাওয়ার জন্য আমাদেরকে লাগাতে হবে অনেক অনেক গাছ। যাতে পরিবেশ কোমল শ্যামলতায় ভরে ওঠে এবং বর্জন করতে হবে বিভিন্ন অপরিবেশ বান্ধব ক্রিয়াকলাপ। তাহলেই পরিবেশ থাকবে সুস্থ, সুন্দর ও সবুজে ভরা। তাই আমি প্রার্থনা করি আমাদের পরিবেশ যেন বিশ্বমাতার কোলে সর্বদাই চিরসবুজে সমৃদ্ধ থাকে।
জেবা রামিসা, দশম শ্রেণি
হাড়োয়া সফিক আহমেদ গার্লস হাই স্কুল (উঃ মাঃ)
পৃথিবীটা সকলের, মানুষের একার নয়
 মানুষের নানা কাজে প্রকৃতির রূপ পরিবর্তিত হয়েছে এবং পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়েছে। একথা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। একাধিক বিধ্বংসী দুর্যোগ, ধ্বংসাত্মক ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প বা মহামারীর মতো আতঙ্ক মানবসভ্যতাকে বিপদগ্রস্ত করে তুলেছে। আমার বাড়ি মফস্সল এলাকায়। ছোট থেকেই তাই প্রকৃতিকে দেখার কিছুটা সুযোগ আমার হয়েছে। আমাদের বাড়ির আশপাশে রয়েছে নানারকম ফল, ফুল ও ভেষজ গাছের বন। শুধু প্রকৃতিকে সুন্দর করে তোলা নয়, আমাদের এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সেইসব গাছগাছালি। আমি চাই আজীবন আমার চারপাশের জগৎটা যেন এইরকমভাবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা থাকে। তারা যেন এভাবেই প্রকৃতিকে সাজিয়ে রাখার সুযোগ পায়। বেঁচে থাকার জন্য সুস্থ পরিবেশ আমাদের সকলের দরকার। সবুজ গাছের সারি, স্বচ্ছ পানীয় জল, নির্মল বাতাস, পাখির ডাক আর পরিচ্ছন্ন থাকা চাই। সেখানে অক্সিজেনের অভাব থাকবে না। বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য বোতলবন্দি জল কিনতে হবে না। খাদ্যের অভাব থাকবে না। সেই পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সকলের। গাছ লাগানোর অভ্যাসটাকে আবশ্যিক ও বাধ্যতামূলক করে তুলতে শিখতে হবে। যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলার বদভ্যাস ছাড়তে হবে। চারপাশের সব জায়গাটাই ডাস্টবিন, এটা কোনও সুস্থ ভাবনা নয়। নিজের বাড়ির পোষা কুকুর বিড়ালের মতো প্রতিটি গাছ ও প্রাণী, পোকামাকড়কে তার জায়গায় থাকতে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে এই পৃথিবী সকলের, মানুষের একার নয়। 
অভিষেক ভট্টাচার্য, দশম শ্রেণি
আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়, আসানসোল
দূষণমুক্ত পরিবেশ চাই
 সেদিন ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলতেই অবাক হলাম। সমস্ত বাড়িগুলো চকলেট রঙের। একটু কাছে গিয়েই বুঝলাম দেওয়ালগুলো সত্যি চকলেট ইট দিয়ে তৈরি। চোখ খুলে বাইরে তাকালাম, এ কী কাণ্ড! বড় বড় বৃক্ষতে এ কী অসাধারণ ফল — হলুদ, কমলা, লাল, গোলাপি রঙের। ব্রাশ করতে গিয়ে সে তো আর এক কাণ্ড! জলগুলো সব ঝর্ণার জলের মতো নীল।
অবাক হতে হতে বাইরে বেরলাম। ছোট ছোট গাছে এগুলো ক্যাপসুলের মতো কী? ছুটে বাবার কাছে গেলাম। শুনলাম সব বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। আজ থেকে কাউকে ওষুধ কিনতে হবে না। গুল্ম গাছের ক্যাপসুল হল রোগ প্রতিরোধক। বড় গাছের চিত্তাকর্ষক ফলগুলো পাখিদের আর মানুষের  খাবার।
বিভিন্ন নদীতে, ঝর্ণায় এত মাছ — বন্যপ্রাণীরা খুব খুশি। গঙ্গা নদীর দু’পাড়ে প্রচুর জলজ প্রাণী ও তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে – কচ্ছপ, ডলফিন, রঙিন মাছ। গঙ্গা নদী আজ কলুষমুক্ত। গঙ্গা নদীর জল প্রায় পানীয় জলের মতো স্বচ্ছ। 
বিজ্ঞান আজ এতটাই এগিয়ে গিয়েছে যে কৃষি ও শিল্পে তার প্রতিফলন ঘটেছে। খেতে প্রচুর সব্জি ও শস্য। অত্যন্ত সুষ্ঠভাবে গবাদি পশুদের দেখাশোনা করা হচ্ছে। গোরু, ছাগল, মুরগি, টার্কি এদের কোনও মড়ক নেই। বাগিচা ভর্তি ফুল। দেশে চুরি নেই, ডাকাতি নেই। পুলিসের প্রয়োজন অনেকটা ফুরিয়েছে। 
রাস্তায় দুর্ঘটনা প্রায় নেই। জ্বালানির সমস্যা মেটাতে  সকলে সাইকেল ব্যবহার শুরু করেছে। প্রকৃতি আজ দূষণমুক্ত। আজ ধনধান্য প্রকৃতি মাকে জড়িয়ে ঘন নীল আকাশের নীচে সবাই খুশি ও নিরাপদ। সত্যিই পরিবেশটা যদি এমন হতো! 
ঈশিতা যাসু, নবম শ্রেণি
বেগম রোকেয়া স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়
সৌরশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে
 প্রকৃতি বলতেই একটা ধ্বংসের ছবি ভেসে ওঠে এখন। ফণী, আমফান এবং অতিসম্প্রতি ইযশ ঘূর্ণিঝড় জনজীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই ঘূর্ণিঝড়গুলির উৎপত্তি হয়েছে সমুদ্রতল তথা ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে, যার অন্যতম কারণ পরিবেশ তথা বিশ্ব-প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া। এই ভারসাম্য নষ্ট করেছি আমরাই। তাই মানবজাতির রক্ষার্থেই পরিবেশের প্রতি যত্নবান হওয়া অতিআবশ্যক। এটা করতে গেলে আমাদের পরিবেশ বান্ধব কাজ করতে হবে। শক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন হতে হবে। অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। বিভিন্ন অফিস, রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট, বিমানবন্দর, রেলস্টেশনের মতো জায়গাগুলিতে সোলার প্যানেল লাগিয়ে শক্তির জোগান দেওয়া যায়। পাহাড়ি অঞ্চলে জলশক্তি এবং উপকূলীয় এলাকায় বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে জীবাশ্ম জ্বালানির দহন কমবে, যা দূষণের মাত্রা কমাবে। তাছাড়া ভূমিক্ষয় রদ করতে বাতাসে অক্সিজেন বাড়াতে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা থেকে পার্বত্য অঞ্চল— সর্বত্রই গাছ বসাতে হবে। লোকালয়ের বাতাস দূষণমুক্ত রাখতে লোকালয় থেকে কলকারখানাকে ধীরে ধীরে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যত্রতত্র বর্জ্য পদার্থ ফেলার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বর্জ্য প্লাস্টিক থেকে যানবাহনের বিকল্প জ্বালানি তৈরি নাকি সম্ভব। রোগজীবাণুর সংক্রমণ এড়াতে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও জীবনযাপনের গুরুত্ব সর্বাধিক। একথা যেন আমরা ভুলে না যাই।
অর্কপ্রভ ঘোষ, নবম শ্রেণি
বালিগঞ্জ গভঃ হাই স্কুল
আমাদেরই পরিবেশকে সুন্দর 
করে তুলতে হবে
 যে মানুষ পরিবেশকে দূষিত করেছে তাকেই ভার নিতে হবে একে দূষণমুক্ত করার। কী কী ভাবে সে কাজ আমরা করতে পারি? প্রাকৃতিক উপাদান, আমরা যাকে ‘প্রকৃতির দান’ বলে মনে করি তাদের নিজের জায়গায় ফিরিয়ে দিতে পারি আমরা। সর্বাগ্রে আমরা গাছ লাগাতে পারি। কারণ এরমধ্যে প্রচুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে। একইভাবে অনেক জলাশয় হারিয়ে গিয়েছে। পরিবর্তে, প্লাস্টিক, থার্মোকল, সস্তা পাউচের ঠোঙার মতো পরিবেশ শত্রুদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে প্রতিদিন। গাছ লাগানোর অভ্যাসটাকে আমাদের আচরণের মধ্যে আনতে হবে। একদিন ‘বৃক্ষরোপণ’ নয়, প্রতিদিন গাছ বাঁচানোর কথা ভাবতে হবে। জন্মদিনে বন্ধুদের গাছের চারা উপহার দিতে পারি আমরা। প্রাকৃতিক বা কোনও কারণে একটি গাছ নষ্ট হলে তার বদলে পাঁচটি গাছ যেন আমরা বসাই। শহরে, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের বারান্দার কোণে, বহুতল বাড়ির সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ে, ছাদে গাছ বসানো যায়। গাছ শুধু গ্রামে থাকবে, আর শহর হবে রুক্ষ, এই ধারণা থেকে আমাদের বের হতে হবে। জলদূষণ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীকে বাঁচাতে হবে। প্লাস্টিকের ব্যবহার যথাসাধ্য কম করতে হবে। করছি, করব ভাবলে হবে না। সস্তা প্লাস্টিক আগে বন্ধ করতেই হবে। আর একটি দিক হল, পরিবেশ রক্ষার কাজকে ‘সামান্য কাজ’ ভেবে আমরা অনেকেই এড়িয়ে যাই। অনেকে ভাবেন, ‘আমি একা আর কী করব!’ এই মানসিকতা ছেড়ে তৎপর হওয়া প্রয়োজন। ছোটরা উদ্যোগ নিতে পারে সমাজকে সচেতন করার। গাছ চিনিয়ে দেওয়া থেকে সে কাজ শুরু হতে পারে। আমরা জানি না বলে, চিনি না বলেই তো আমাদের পরিবেশের বন্ধুদের ভূমিকা বুঝতে পারি না। আর যাঁরা বৃক্ষ-হত্যা করেন তাঁদের এই ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যাবতীয় সমস্যার মূল উৎস হল অশিক্ষা। তাই মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা এই সমস্যার প্রতিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম।
অনির্বাণ ভট্টাচার্য, দশম শ্রেণি
বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়(উ. মা)
 ছবি ও গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল

13th     June,   2021
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ