বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
গল্পের পাতা
 

সিকি মানবী

চিরঞ্জয় চক্রবর্তী: আমরা কেউ মায়ের সঙ্গে থাকি না। আমার অন্য তিন ভাই অনেক আগেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। সংসারের গল্পগাথা যেরকম হয়। সব সংসারেই ছেলেরা বিয়ে করলে নাকি অন্যরকম হয়ে যায়। অন্য সব চিত্রনাট্যের মতোই আমাদের বাড়িতেও কোনও বউ থাকতে পারেনি! একদিন কথায় কথায় বাবা বলেছিলেন, ‘তুমি বোকা, তোমার কোনও স্বপ্ন নেই, তাই তুমি আমাদের সঙ্গে আছ।’ আমি উত্তর করতে পারিনি। বাবার দিকে শুধু তাকিয়েছিলাম। আমি অবিবাহিত বা বলা যেতে পারে বিয়ে করে উঠতে পারিনি। তাই আমি বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকতাম। বছর দশেক আগে বাবা হঠাৎ চলে গেলেন। বাজারে গিয়ে আমি সব্জি কিনতাম কিন্তু মাছটা তিনি পছন্দ করতেন। একসঙ্গেই বাজারে যেতাম, বাবা মাছের বাজারে ঢুকতেন। আমি অন্যদিকে। সেদিন সুস্থ মানুষটা বাজারে মাছ কিনতে গিয়ে নিতাইকে বলেছিলেন, তুই বড্ড ছোট ছোট মাছের পিস করিস, একটু বড় রাখবি। বাড়িতে তো আমরাই...। আর কোনও কথা কেউ শোনেনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তারবাবু বাবাকে দেখে মাথা নাড়ালেন। তারপর বললেন, ‘নিয়ে যান, পাড়ার ডাক্তারবাবুর কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে নিন। এখানে থাকলে পোস্টমর্টেম করতে হবে।’ এই ঘটনার প্রায় আট বছর পর আমার বদলি হল জলপাইগুড়িতে। মা প্রথম কয়েকমাস আমার সঙ্গে ছিল। আমার ওখানে সংসার সাজানোর পর কলকাতায় চলে এসেছে। আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম বদলিটা আটকানোর। পারিনি। বাড়িটাও মা ফাঁকা রাখতে চাইছিল না। নিজের উপার্জনে এবং তত্ত্বাবধানে করা বাড়ি, বুক দিয়ে আগলে রাখতে চাইত। আমি জলপাইগুড়ি থেকে প্রতি সপ্তাহে বাড়ি আসি। ওখান থেকে শুক্রবার রাতে ট্রেনে চাপি শনিবার ভোরে শিয়ালদায় নেমে বাজার করে বাড়ি ফিরি। কোনও কোনও সপ্তাহে অর্গানিক তরকারি, সর্ষের তেল কেনার জন্য রবিবারেও বাজার করি। মায়ের কথা অনুযায়ী আমি কেনাকাটা করি। মা ফ্রিজে গুছিয়ে রাখে। মাকে সারা সপ্তাহ আর বাজারের চিন্তা করতে হয় না।
...
মা কিছুতেই বাড়ি ছেড়ে জলপাইগুড়ি থাকতে চাইত না। এ বাড়িটা মায়ের বাড়ি। এ বাড়ি মায়ের পঞ্চম সন্তান। সপ্তাহে একদিন সারেঙ্গদা বাড়িটা ঘুরে দেখে, তারপর মায়ের হাতের গরম রুটি খেতে খেতে বলে কোথায় কী হয়েছে এবং কীভাবে করতে হবে। এ বাড়ি হওয়ার সময়ে সারেঙ্গদা জোগাড়ে ছিল। তারপর ধীরে ধীরে মিস্ত্রি হয়ে গেল। আমাদের ছোটবেলায় সারেঙ্গদা বাগানের গাছপালা দেখত, বাড়িঘর পরিষ্কার করত। বাবার ডান হাত ছিল। বাড়িতে কিছু করতে হলে সারেঙ্গ। প্রায় দিনই দুপুরে খেত। ধীরে ধীরে মিস্ত্রি হয়ে গেল। তারপর থেকে সপ্তাহে একদিন আসা শুরু করল। কোথাও কাজে যাওয়ার আগে সব কিছু দেখে যায়। সারেঙ্গদাও এসেছে। এককোণে চুপচাপ বসে আছে।
আজ শনিবার, সকালে এসে দেখি অনেক লোক আমাদের বাড়িতে। আসার পথে মেজভাই দু’বার ফোন করেছে। আমি আসছি কি না জানতে চেয়েছে। ‘ট্রেনে আছি’ বলে ছেড়ে দিয়েছি। ভাইরা, তাদের বউয়েরা সবাই এসে গিয়েছে। এদের দেখে মনের মধ্যে একটা খারাপ খবর উঁকি মারছে। কিন্তু কাল রাতেও তো কথা হল। ট্রেন ছাড়তেই বললাম, ‘ট্রেন ছেড়েছে’। মা বলল, ‘দুগ্গা, দুগ্গা’। আমি বাজারের ব্যাগটা নীচের ভাড়াটের বারান্দায় রেখে উপরে গেলাম। মায়ের ঘরের দরজাটা ভাঙা, একটু অবাক লাগল। ঘরের মধ্যে মা মেঝেতে শুয়ে। শুধু মেঝেতে শুয়ে কেন? মায়ের জন্য একটা চাদরও পাতা হয়নি। জুতো খুলে মাকে খাটে শোয়ালাম। মা নিথর হয়ে গিয়েছে। মা আর বলছে না, ‘বাবু এসেছিস! আজ কি ট্রেন লেট ছিল?’
-২-
মা বিয়ের পর কোন বাড়িতে এসেছিল জানি না। বলার মতো কেউ আর বেঁচে নেই। এ বাড়িটা নিজের উপার্জনে বানিয়েছিল। বাবার টাকায় সংসার চলত, মা বাড়ি বানাত। মায়ের একটা নিজস্ব কলঘর ছিল। মা বাথরুম বলত না। কলঘর আর বাথরুম যে এক নয়, মা সেটা ভালোই জানত, তবুও বলত না। কারণ জিজ্ঞাসা করলে হাসত। মায়ের কলঘরে কারও প্রবেশাধিকার ছিল না। জলপাইগুড়িতে না থাকতে পারার এটা একটা বড় কারণ।
আলফা ডাকল, ‘দাদা নীচে আয়।’
‘তোরা কখন জানলি?’
আলফা বলল, ‘মিনু ফোন করেছিল, ঠাকুমা দরজা খুলছে না।’ ভাইদের মধ্যে একমাত্র ও মাঝে মাঝে মায়ের কাছে আসে খোঁজখবর নেয়। ও এসে দেখে দরজা বন্ধ, মা মোবাইল বা ল্যান্ডফোন কিছুই ধরছে না। ও বিটা আর গামাকে খবর দেয়। তারপর দরজা ভেঙে দেখে মা মাটিতে পড়ে আছে। তখনও নাকি প্রাণ ছিল। ওরা বিটার গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। ডাক্তার দেখে শুধু মাথা নেড়েছিল। হাতের ইশারায় বলেছিল, নিয়ে যান। তারপর ওরা মাকে বাড়িতে এনে মেঝেতে শুইয়ে রেখেছে। একটা মাদুর বা চাদরও পাতেনি। এত অভাব? শেষ সময়ে মায়ের জন্য একটা চাদর পাওয়া গেল না? এসব কথা বলা যায় না, বললে নাটক পাল্টে যায়। মা বলত, সংসারে কিছু কথা ভাতের মতো গিলে ফেলতে হয়। আমি  চারদিকের লোকজনদের ঠিক চিনতে পারছি না। চশমাটা মুছলাম। তবুও সবাই অস্পষ্ট। মাকে নিয়ে যেতে হবে, তার প্রস্তুতি চলছে। গামার বউ বলল, ‘বড়দা, আলমারির চাবিটা দিন।’
‘আমার কাছে তো থাকে না। ঘরেই আছে, দেখ।’
‘পাচ্ছি না। অনেকক্ষণ ধরে খুঁজছি।’
‘একটা ছোট পাউচ ব্যাগে মা রাখত। কোথায় রাখত আমি জানি না।’ ‘একবার আপনি আসুন না!’
আমার মায়ের তিনটে আলমারি, একটা স্টিলের দুটো কাঠের। মনে আছে আমরা আলমারি অগোছালো করতাম বলে মা স্টিলের আলমারিটা কিনেছিল। ওই আলমারিটায় আমাদের ভাইদের জামা-কাপড় থাকত। একদম উপরের তাকে থাকত সোয়েটার, মাফলার। তার নীচেরটায় ভালো পোশাক, বিয়েবাড়ি যাওয়ার। নীচের দুটোয় স্কুল ড্রেস আর রোজকার ব্যবহারের জামাকাপড়। এই আলমারিটার চাবি সব সময়ে ঝুলত। মা চাবি দিতে বারণ করত। আমাদের ভাইদের ব্যবহারে হ্যান্ডেলটা অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল। যার হাতে ভেঙেছিল, সে অন্য কাউকে দেখায়নি। আমাদের চারজনের মধ্যে একজন ভেঙেছে। সে কে? আলমারির হ্যান্ডেল ভাঙার জন্য বাবা-মা রাগ করেনি, কিন্তু কে ভেঙেছে এবং হ্যান্ডেলের অবশিষ্ট কোথায় গেল, এটাই বিচার্য বিষয় ছিল। সেই হ্যান্ডেলটা এখনও অর্ধেক। আমি ভেবেছিলাম, তালা দেওয়া নেই। কিন্তু খুলতে পারলাম না। তালা দেওয়া। আমরা চার ভাই একটু অবাক হলাম, তার মানে আমরা বড় হওয়ার পর, মা তালা দিয়ে রাখত। আলমারি খুলতে না পারলে নতুন শাড়ি কিনতে হবে। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, অনেক কিছুই তো কিনতে হবে, তার সঙ্গে মায়ের জন্য যা যা লাগবে নিয়ে এলেই হবে। আলফার বউ উশখুশ করছিল, জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কিছু বলবে?’
সে বলল, ‘মায়ের আলমারিতে নতুন শাড়ি থাকা উচিত। পয়লা বৈশাখেও তো আমরা সবাই দিয়েছি। মা সেদিন আপনার দেওয়া শাড়িটাই পরেছিলেন। বরাবরই সেটা পরেন।’
‘চাবিটা পাওয়া যায় কি না দেখ।’
‘কোথায় দেখব?’
‘আমরা শ্মশানে চলে যাওয়ার পর ঘরটা তো পরিষ্কার করতে হবে, তুমি তখন মিনুকে নিয়ে খুঁজে দেখ।’
‘মিনু বোধহয় বাড়ি গিয়েছে।’
‘ও তো আসবেই।’
-৩-
মা বলতেন, মেয়েদের শ্মশানে আসতে নেই। সেই মাকে রাজবেশে নিয়ে এলাম, খুব খারাপ লাগছিল। ফুলে ফুলে মা ঢাকা পড়েছে। পাশের বাড়ির মনুর বউ মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিল, ‘আপনাদের তো মা গেলেন, আমার তো সব গেল।’ আমি জানতাম না, বিটার সমবয়সি মনুর চাকরি চলে গিয়েছে মহামারীর কারণে। দুটো শিশু নিয়ে মনুর বউ মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকত। মনুর বউ বলায় বুঝতে পেরেছি, আমাদের চাল-আটার খরচ কেন বেড়ে গিয়েছে। এইসব ভাবতে ভাবতে মাকে আগুনের বিছানায় শুইয়ে দিলাম। আগুনঘরের দরজা বন্ধ হতেই মা হারিয়ে গেল। মা নেই মানে নেই। মাকে আর দেখতে পাব না। সকাল থেকে মা শুয়েছিল, একটাও কথা বলেনি, আমি বার বার যেন শুনছিলাম, ‘বাবু’ বলে মা ডাকছিল। মনের ভিতরটা হঠাৎ ফাঁকা হয়ে গেল। বড় একটা শ্বাস নিয়ে বাইরে এসে বসলাম। অনুভব করলাম শ্মশানের একজন কর্মী আমাকে ধরে বসিয়ে দিয়ে গেল। মৃদু হেসে বলল, ‘বাবু, মাথা ঘুরছে?’ মাথা নেড়ে না বললাম। সবাই একে একে দেখা করে গেল। বলে গেল তুমি এখানে বসে থাক, আমরা ডেকে নেব।
আমার ছাড়া তিন ভাইয়ের ডাক নামই অঙ্কের— আলফা, বিটা, গামা। মা রেখেছিল নামগুলো। মায়ের ইচ্ছা ছিল, তাঁর চার ছেলে অঙ্ক নিয়ে পড়ুক। আমি ছাড়া কেউ অঙ্ক পড়েনি। ফলে মায়ের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ট হওয়ার আরও একটা কারণ অঙ্ক। মা অঙ্ক করতে ভালোবাসতেন। অবসরে মা বই পড়তেন বা অঙ্ক কষতেন। একদিন কথায় কথায় বলেছিলেন, ‘আমি সিকি মানবী’। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়েছিলাম। বুঝতে পেরে বলেছিলেন, ‘আমার ইচ্ছার সিকিভাগ পূর্ণ হয়েছে।’
-৪-
মাকে গঙ্গায় রেখে এলাম। মা ভাসতে ভাসতে মোহনার দিকে চলে গেল। বাড়িতে ফিরে চারদিকে মাকে দেখছি। ভাড়াটেদের খোলা বারান্দায় বসে পড়লাম। বাড়িতে থেকেও মনে হচ্ছিল বাড়িতে নেই। মা নেই মানে বাড়ি নেই। ওরা সবাই কলকল করছে। কানে আসছে না। এরমধ্যে মিনু এসে বলল, ‘চাবি পাওয়া যায়নি।’
‘সব জায়গা দেখা হয়েছে?’
‘কোথাও পাইনি।’
ধীরে ধীরে উপরে গেলাম। মায়ের ঘরের দরজা মেরামত হয়ে গিয়েছে! আমরা তো শ্মশানে ছিলাম, কে করাল? কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই ছোটবউ বলল, ‘আমরা সুনীলদাকে ডেকে ঠিক করে নিয়েছি।’ আমি ভাবছি এরা কত বুদ্ধিমান এবং তৎপর, শুনলাম সে বলছে, ‘মায়ের তো ব্যাঙ্ক ব্যালান্স অনেক, সব কাগজ তো আলমারিতে। তাই আমরা বউয়েরা ভাবলাম দরজা না সারালে বিপদ হতে পারে। তাই... আপনি তো সবই জানেন।’
মাথা নাড়লাম, ‘আমি কিছুই জানি না।’
‘আপনাকেও বলতেন না? আর লকারটা কার সঙ্গে?’
‘আমার নাম আছে ওখানে। তবে আমি যাইনি কখনও।’
‘শুনেছি, মায়ের নাকি অনেকগুলো পাস বই। হবে নাইবা কেন? দু-দুটো পেনশন।’
‘মা অবসর নেওয়ার পর উইডো পেনশনটা নিতেন না। সরকারকে ফেরত দিয়েছিলেন।’
‘এটা ঠিক করেননি। দুটোই তো ওঁর প্রাপ্য। জমলে তো ওঁর সন্তানরাই পেত।’
এসব কথা বলতে ভালো লাগছিল না। সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। তাই ধীরে ধীরে নিজের ঘরের দিকে যেতে যেতে শুনলাম, বড়বউ বলছে, ‘দাদা যাওয়ার আগে লকারটা খুলতে হবে কিন্তু।’ ঘরে ঢুকে মেঝেতে বসলাম। বিছানায় তো এখন বসা যাবে না। গত শনিবার রাতে খেতে খেতে মা বলেছিল, ‘বাবু, আমি মরে গেলে তুই এরকম আসবি?’ তখন যদি বুঝতে পারতাম মা চলে যাবে, তাহলে কি রবিবার উত্তরবঙ্গ যেতাম? মা আমাকে আভাস দিল আমি ধরতে পারলাম না। মা কি আরও কিছু বলতে চেয়েছিল? আমি মায়ের কথাটা এড়াতে চাইছিলাম। মা ঘুরেফিরে মৃত্যুর কথাই বলছিল। আমি কী বোকা, একদম ধরতে পারিনি। রবিবার  সকালে রাবড়ি দিয়েছিল। হাসতে হাসতে বলেছিল, ‘বাঁধাকপির পাতা দেওয়া রাবড়ি নয়, দুধের সরের।’
‘আপনি বানিয়েছেন?’
‘আর কে আছে?’
মাকে আমি আপনি করে বলতাম। অন্য ভাইয়েরা তুমি। কেন আপনি বলতাম জানি না। তবে ছোটবেলায় মাকে খুব ভয় পেতাম।
-৫-
মায়ের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মেঝেতেই টান টান হয়ে শুয়েছিলাম। দরজা খোলা ছিল, দরজা দেওয়ার কথা মনে হয়নি। রাতেও আমি কোনওদিন দরজা দিই না। বলতে গেলে আমার অভ্যাস নেই। গামার ডাকে ঘুম ভাঙল, ‘রাত হয়ে গিয়েছে, কিছু খাবি না?’ ঘুম ভাঙতে জল তেষ্টা পেয়েছিল। নিজে উঠে গিয়ে ওয়াটার পিউরিফায়ার থেকে তিন গ্লাস জল খেলাম। ভাইয়েরা ও ঘনিষ্ঠরা বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমার জন্য ফল, সাবু, সন্ধব লবণ— সব গুছিয়ে দিয়েছে ভাইয়ের বউয়েরা। অন্য সবাই খেয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করা হয়নি। জিজ্ঞাসা করতে হল না। ওরাই জানাল, ওদের খাওয়া হয়ে গিয়েছে। মেজবউ সামনে এসে বলল, ‘দাদা, আপনার সাবুটা মেখে দেব?’ মাথা নাড়লাম, ‘যদি খাই মেখে নেব।’
ভাইপো-ভাইঝিরা নীচে নেমে গিয়েছে, বউমারা কথা বলতে বলতে নামছে। ভাইয়েরা আমার সামনে দাঁড়িয়েছিল, বললাম, ‘কাল সকালে তোরা আয়, ঠাকুরমশাইকে দশটায় আসতে বলেছি। আর শোন মায়ের কাজ হওয়া পর্যন্ত এখানেই সবাই থাকবি। আজকে যা, কাল থেকে আর যাবি না।’ ওরা কেউই কোনও উত্তর দিল না। গামা আমার হাতে একটা চাবি দিল। নতুন চাবি।
‘কীসের চাবি।’
‘মায়ের ঘরের।’
‘তোদের কাছেই রাখ।’
‘সবাই একটা করে রেখেছি, এটা তোমার।’
‘মানে?’
এই তালাটার চারটে চাবি। যেকোনও একটা চাবি দিয়ে বন্ধ করা যায়, কিন্তু খুলতে গেলে এক-দুই-তিন-চার, চারটে চাবিই লাগবে। এটা এক নম্বর। এটা তোমার।
অঙ্কন : সোমনাথ পাল

16th     July,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ