বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
গল্পের পাতা
 

হারিয়ে যাওয়া যৌথ পরিবার
সমৃদ্ধ দত্ত

হেরে গিয়েছে গণতন্ত্র। জিতেছে স্বৈরতন্ত্র। সেইসব একান্নবর্তী পরিবারে বহু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই ছিল আলোচনার পরিসর। সেজো মামার নাতনির অন্নপ্রাশনে কী দেওয়া হবে? নূপুরের জন্য এই শ্যামনগরের পাত্রটি কি মানানসই? নাকি কসবার এই ডাক্তার ছেলেকেই বাছাই করা হবে? বাড়ি রিপেয়ারিংয়ের সময় এবার কী রং হবে বাইরে? তিনতলায় একটা ঘর না কর঩লেই চলছে না! সকলে কিছু কিছু দিলে তো হয়ে যায়। তোমরা কী বল? এই যে ‘তোমরা কী বল’ প্রশ্ন অথবা ওই যে সকলের অভিমত চাওয়া কিংবা মতামতগুলি স্বতঃস্ফূর্তভাবে উঠে আসা, এই সংলাপগুলি বালিগঞ্জ থেকে রানাঘাট সর্বত্রই শোনা যেত একান্নবর্তী পরিবারে। যৌথ পরিবারে ছিল এই গণতন্ত্র। মতামত নিয়ে ঝগড়া হবে। সিদ্ধান্ত নিয়ে টানাপোড়েন হবে। তিক্ততা হবে কয়েক ঘণ্টার। একজন কেউ আলোচনার ঘর ছেড়ে দ্রুত বেরিয়ে যাবে রেগে গিয়ে, যার নিশ্চিত শেষ বাক্যটি হবে, ‘তাহলে তোমরা যা ভালো বোঝ কর, আমাকে এসবের মধ্যে রেখো না। আমার যা বলার বলে দিয়েছি। এখন তোমাদের ব্যাপার’। বড় বউদির টিউমার হয়েছে শুনে হঠাৎ গোটা বাড়িতে নেমে আসবে নীরবতা। সকলেই হঠাৎ হঠাৎ বড় বউদির সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে শুরু করবে। কোনও এক মেজদা বলবেন, ‘আমার মনে হয় এককথায় অপারেশন করার আগে আমাদের একটা সেকেন্ড ওপিনিয়ন নেওয়া দরকার অন্য কোনও ডাক্তারের।’ আমরা আজ এতদিন পর লক্ষ করলে দেখব এই বাক্যটির মধ্যে থাকা ‘আমাদের’ শব্দটি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অর্থাৎ এই যে বড় বউদির অপারেশন হবে, এটা ‘আমাদের’ চিন্তা সকলের। মিলিত ভাবনা। সিদ্ধান্ত যা হবে সেটা হবে আমাদের। শুধু বড়দার নয়। অর্থাৎ বড়দাকে ভাবার সুযোগই দেওয়া হবে না যে, আমার যা মনে হয় করব।
যৌথ পরিবার চলে গিয়ে বাঙালি জীবনে সবথেকে বেশি গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র। পৃথক পরিবারের যুগ যেদিন থেকে শুরু হল, সেদিনই স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মতামত নিয়ে একটি গোপন লড়াইয়ের সূত্রপাত হয়ে গেল। কখনও স্বামী কখনও স্ত্রী। ক্ষুদ্র পরিবারে তারাই এখন সিংহভাগ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। আলোচনা হয় না? অবশ্যই হয়। কিন্তু অধিকারবোধ আর অতিরিক্ত আত্মসম্মানবোধের বলয় ঘিরে থাকে প্রতিনিয়ত। কখনও স্ত্রীকে স্বামীর কাছে শুনতে হয় জীবনের সবথেকে আত্মধিক্কারের একটি বাক্য, ‘রোজগার আমি করি। আমি যা বলব শুনতে হবে’! এই নিউক্লিয়াস ফ্যামিলির স্বামী ও স্ত্রী কিংবা স্বামী অথবা স্ত্রী ঠিক করেন কোন বিয়েতে কী উপহার দেওয়া হবে। পুজোয় কাকে কী দেওয়া হবে অথবা আদৌ আর দেওয়া হবে কি না। 
যৌথ পরিবার চলে যাওয়ার আভাস কবে থেকে পাওয়া গেল? বাংলার দেওয়ালে দেওয়ালে স্লোগানের মাধ্যমে। ১৯৬৭ সালের পর ইন্দিরা গান্ধী সরকারের  পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে একটি স্লোগান জনপ্রিয় হল— ‘হাম দো হামারে দো’। দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এহেন একটি বুদ্ধিদীপ্ত ক্যাচলাইন এরপর একটানা দশ থেকে পনেরো বছর ভারতের সর্বত্র দেখা গিয়েছে। স্লোগানের সঙ্গেই কার্টুনের ধাঁচে একটি সুখী পরিবারের ছবি দেওয়া হতো। হাস্যরত স্বামী-স্ত্রী এবং তাদের দু‌ই সন্তান। কিন্তু বাংলায় সেই স্লোগানটি যখন অনূদিত হয়ে প্রচার করা হল, সেটি যেন সমাজ বদলের একটি অমোঘ পূর্বাভাস হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যা তখন হয়তো কেউ বুঝতেই পারেনি। স্লোগানটি ছিল ‘ছোট পরিবার সুখী পরিবার’। আজ আধুনিক ভারত উপলব্ধি করছে যে, ওই স্লোগান সম্পূর্ণ অন্য রূপে সমাজকে গ্রাস করতে শুরু করেছে। জনসংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে কতটা কার্যকরী হল সেটা নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন, কিন্তু যা নিয়ে সন্দেহ নেই, সেটি হল, এই স্লোগান বাংলার পরিবার আত্মস্থ করে নিল ভিন্ন কারণে। সেটি হল প্রাইভেসি। একান্নবর্তী পরিবারে আবর্তিত হতো সমষ্টি। ছোট  পরিবারে অনেক বেশি স্থান করে নিল ব্যক্তি। 
সঞ্জয় গান্ধী রাজনীতিতে বিতর্কিত ছিলেন। কিন্তু সত্যদ্রষ্টা হিসেবে ছিলেন সফল। তিনি মারুতি নামক একটি গাড়ির স্বপ্ন দেখেছিলেন। যার প্রচারে প্রথম বিজ্ঞাপন থেকেই দেওয়া হয়েছিল ফ্যামিলি কার। সেই প্রথম মারুতিতে ক’জন বসতে পারবে? চারজন। স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তান। সুতরাং নিছক জন্মনিয়ন্ত্রণ নয়, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের আত্মায় থাকা পরিবারতন্ত্রকে বদলে দিয়ে প্রবেশ করল ‘ছোট পরিবার সুখী পরিবার’ বীজ। তাই মারুতি আটের দশকে এল এবং ভারতজয় করল। কে হেরে গেল? অ্যাম্বাসাডর। যে আসলে যৌথ পরিবারের গাড়ি। একসঙ্গে আটজনও ঢুকে গিয়েছে সেইসব গাড়ি অথবা ট্যাক্সিতে। অতএব আটের দশক থেকে একইসঙ্গে দুই ব্র্যান্ডের সাফল্য যাত্রা শুরু হল। ফ্যামিলি কার ও ফ্ল্যাট কালচার। বাড়িকে বাঙালি পরিবার বলতে শুরু করল, ফ্ল্যাট!   
যৌথ পরিবারের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ক্ষুদ্র পরিবারের অন্যতম প্রধান পার্থক্য কী? যৌথ পরিবারের শিশু-কিশোরদের কোনও একাধিক জেঠুর বাড়ি, একাধিক কাকুর বাড়ি, ঠাকুমার বাড়ি ছিল না।  কীভাবে থাকবে? জেঠুরা, কাকুরা, ঠাকুমা-ঠাকুরদারা তো একটি বাড়িতেই থাকেন। আর সেইসব সন্তানদের কাছে সেই বাড়ির নাম হতো, ‘আমাদের বাড়ি’। ছোট ভাইয়ের মেয়ের বিয়ে হবে। সেই বিয়েতে ছোট ভাই আর তার স্ত্রী বড় অথবা মেজভাইয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণের কার্ড নিয়ে এসে বলবে, ‘একদিন আগেই চলে যাস কিন্তু তোরা?’ এসব দুঃস্বপ্ন যৌথ পরিবারগুলি দেখেছে কখনও! কারণ সেইসব বিয়ে তো ছোটভাইয়ের মেয়ের হতো না! সেইসব বিবাহযোগ্যা মেয়েদের নাম হতো ‘আমাদের বাড়ির মেয়ে।’ তাই তাদের বিয়ে মানে হল,  আমাদের বাড়ির মেয়ের বিয়ে। সেখানে কে কাকে নিমন্ত্রণ করবে? কে কাকে উপহার দেবে? ওসব কিছু না। যা যা লাগবে সেটাই ঠিক করে নেওয়া হবে। 
ঠিক এরকমই ‘আমাদের বাড়ির মেয়ে’দের বিবাহ সব ঠিক হয়ে গেলেও যদি অকস্মাৎ ছোটভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়? তাহলে কী হবে?  বিয়ে আটকাবে না। আমাদের বাড়ির মেয়ের বিয়ের জন্য ছোটভাই যা যা আয়োজনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, ঠিক সেই আয়োজন করবে বাড়ির অন্যরা।
আধুনিক এই সমাজের সবথেকে বড় ভাইরাসের নাম কী? একাকিত্ব! ফেসবুক আছে। হোয়াটসঅ্যাপ আছে। যখন তখন বেরিয়ে যাওয়া আছে। কিন্তু এতকিছু সত্ত্বেও একাকিত্ব মহামারীর মতো গ্রাস করছে মানুষকে। কারণ ফিজিক্যাল কেয়ার নেই। মেসেজ অথবা ফোনে খবর নেওয়া আছে। পাশে থাকার আশ্বাস আছে। কিন্তু যে বন্ধু আর আত্মীয় থাকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সে কীভাবে যখন তখন সশরীরে আসবে পাশে? যৌথ পরিবারে কিন্তু দীর্ঘ সময় সেজ বউয়ের সাড়াশব্দ না পেলে কয়েকজন উদগ্রীব হতো। দোতলা থেকে নেমে এসে আলো বন্ধ করে শুয়ে থাকা সেজ বউকে প্রশ্ন করত, কীরে, কী হয়েছে? এভাবে শুয়ে আছিস? তারপর জানা যেত জ্বর অথবা মনখারাপ। হয় তাড়াতড়ি ওষুধ দেওয়া কিংবা হু হু কান্না। বেদনার বাষ্প কিছুটা আশ্রয় পেত, ‘কী হয়েছে! এভাবে শুয়ে আছিস’ বাক্যে। 
যৌথ পরিবারের সবই ভালো? সর্বাঙ্গীণভাবেই এরকম তরুণ মজুমদার অথবা রাজশ্রী প্রোডাকশন্সের সিনেমাগুলির মতো কান্না হাসি গান মিলিয়ে আনন্দময়? মোটেই নয়। ঈর্ষা থাকে। ভুল বোঝা থাকে। ঝগড়া থাকে। কথা বলা বন্ধ হওয়া থাকে। নীচতা থাকে। পরিবারের মধ্যেই বিশেষ একটি উপদল গড়ে ওঠা থাকে। অন্যের ক্ষতিতে খুশি হওয়া থাকে। অন্যের দারিদ্র্য সন্তোষ প্রদান করে। অন্যের সন্তানের সঙ্গে রেষারেষি থাকে পড়াশোনা অথবা কেরিয়ার নিয়ে। কেন থাকবে না? এসবই তো সাধারণ গৃহী মানুষের  স্বাভাবিক মানসিকতা। সমস্যা থাকে প্রাইভেসির। একটা অথবা দুটো মাত্র ঘর বরাদ্দ। ইচ্ছামতো খরচ করা যায় না। ইচ্ছামতো বিলাসিতাও করা দৃষ্টিকটু। এসব তো সত্য ও বাস্তব। 
কিন্তু বাড়িতে একজন অসুস্থ হয়ে গেলে দিশাহারা হতে হয় না। অফিস অথবা ব্যবসায় যাওয়া বন্ধ করে দিতে হয় না। কিছু দরকার হলে কে দেখবে? এই চিন্তায় চরম অনিশ্চয়তার দিন কাটাতে হবে না। যৌথ পরিবারের ক্ষেত্রে সংবাদপত্রে কখনও হেডলাইন হবে না ‘বন্ধ ফ্ল্যাটে সাতদিন ধরে মৃত বৃদ্ধ দম্পতি’। 
কে তাদের আসল মা? কে তাদের পালনকারী? কে তাদের জন্য  বেশি আকুল? মা নাকি বড়মা? কে বড়মা? কেন জেঠিমা? কেই বা ছোটমা? কেন কাকিমা? স্বপ্নের যৌথ পরিবারগুলিতে এভাবেই আপনজন বাছাই করতে ধন্দের মধ্যেই থাকতে হতো সন্তানদের। কে দেখাবে অঙ্কের ঐকিক নিয়ম? কেন দাদাভাই? কে দাদাভাই? 
মেজজেঠুর ছেলে! কার সঙ্গে ছাদে গিয়ে প্রথম সিগারেট খাওয়া? ছোড়দার সঙ্গে। গোপন অ্যাডভেঞ্চার কীভাবে শেখা গেল! লুকিয়ে মিলন সমিতির শানুদাদার চিঠি বড়দিভাইয়ের কাছে নিয়ে আসায়। কে তোকে চিঠি পৌঁছে দিয়েছে? 
হাজারটা চড়থাপ্পড় খাওয়া সত্ত্বেও যে বড়দিভাই কখনও উচ্চবাচ্য করবে না সূর্যকে মার খাওয়া থেকে রক্ষা করতে। বাইরের মানুষের কাছে এইসব যৌথ পরিবারের সন্তানদের তারা কতজন ভাইবোন সেই উত্তর দেওয়ার সময় কোনওদিন ভাবেনি নিজের বোন আর সে অথবা দুই ভাই। তারা সর্বদাই বলেছে চারভাই, চার বোন। কারণ ‘আমাদের’ বাড়িতে যত নতুন প্রজন্ম আছে তারা সক঩লেই তো আমাদেরই ভাইবোন! তাই আমার বড়দা এবার ডাক্তারিতে গোল্ড মেডেল পেল শুনে কেউ যদি প্রশ্ন করত তোমার নিজের দাদা? 
তুমিই তো বড়ভাই? তখন হেসে উত্তর দিতে হয়, জেঠুর ছেলে। আমাদের সকলের বড়দা! 
কীভাবে মুখস্থ হয়ে যেত সেই যৌথ পরিবারগুলির কিশোরদের রবীন্দ্রসঙ্গীত? কারণ দুবেলাই যৌথ পরিবারের অসংখ্য টাপুর আর অন্তহীন ঝুমুরা রেওয়াজ করত গানের।  নিত্যনতুন গানের সঙ্গে পরিচয় হতো। রাতে সেইসব ঘর থেকেই পাশের গলিতে ভেসে যেত পাণিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ আর অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশের মুখস্থ স্রোত। সেইসব সেজো কাকিরা সারাক্ষণ রেডিও  চালাতেন।  একদিন যৌথ পরিবারে প্রবেশ করেছিল টেলিভিশন। যেখানে নিজেদের পরিবারকেই দেখা গিয়েছিল ‘হামলোগ’ আর ‘বুনিয়াদ’ নামের সিরিয়ালে। রবিবার দুপুরে রামায়ণ ও মহাভারত দেখতে বসার ঘরে কিংবা ছোটকাকার ঘরে জমায়েত হতো সকলে। 
একটি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমিক প্রতারণা করেছে। অন্য এক মেয়ের সঙ্গে পার্ক স্ট্রিটে সে দেখেছে সেই প্রেমিককে লাস্যময় এক মুহূর্তে। তারপর থেকে এক গভীর ডিপ্রেশন গ্রাস করেছে সেই মেয়েকে। সে কথা বলে না। ভালো করে খায় না। কারও সঙ্গ পছন্দ করে না। তাকে নিয়ে চার মহিলা চলেছেন পুরী। ট্রেনে দেখা হল এক যুবকের সঙ্গে। সে একা একা ঘুরে বেড়ায় কাঁধে একটা ঝোলা নিয়ে। সেই মেয়েটিকে আগলে রেখে, তার মন খারাপকে অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করছে এই চার বিধবা নারী। তাদের স্বামীদের কেড়ে নিয়েছে মৃত্যু। আর এই অনূঢ়া মেয়েটির পুরুষ তাকে পরিত্যাগ করেছে। যন্ত্রণা একই। তপন সিংহের অবিস্মরণীয় সেই সিনেমা ‘নির্জন সৈকতে’ আমাদের দেখিয়েছিল যৌথ পরিবারের চার নারীর একাকিত্ব বেদনাকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার আখ্যান। তাদের কন্যাসম পরিবারের মেয়েটির প্রবল অসম্মানিত বোধ করার হাহাকারের কাঁধে হাত রাখা দেখেছিলাম আমরা। 
একান্নবর্তী পরিবারের ছবি ধরা পড়েছিল এই পরিচালকেরই ‘গল্প হলেও সত্যি’তে। যৌথ পরিবারগুলি এভাবেই বছরের পর বছর শক্তি দিয়েছিল পরস্পরকে। ঘোষিত অথবা অঘোষিত দৃপ্ত আশ্বাস ছিল, ভাবছিস কেন? আমরা তো আছি!
তারপর এসেছিল ব্যক্তিগত সুখের প্রাধান্য যুগ। সেই পুরনো স্লোগান হয়েছিল জীবনের প্রধান চালিকাশক্তি।  ছোট পরিবার সুখী পরিবার। এসেছে এসি। এসেছে গিজার। এসেছে মোবাইল। এসেছে ফ্রিজ। এসেছে গাড়ি। এসেছে প্রাইভেসি। এসেছে একাকিত্ব। এসেছে ইগো। এসেছে সব কাজ একা করার, সব ভাবনা একা ভাবার, সব দুঃখের একা মোকাবিলা করার ক্লান্তি। এসবের আড়ালে বেড়েছে শুধু রক্তের মধ্যে দূরত্ব। বেড়েছে আত্মীয়বাড়ি। যারা পরিবার ছিল, তারা এখন আত্মীয়। আত্মীয়দের নাম কী? 
কাদের বাড়িতে যেতে হয় এখন আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে? বছরে দুয়েকবার যেতে হয় জেঠুর বাড়ি...কাকুর বাড়ি...ঠাকুমার বাড়ি...। তোমরা ক’ভাইবোন? এই প্রশ্নের উত্তরে এখন বলতে হয়, ‘আমি একা’! যৌথতা পরাস্ত। জয়ী হয়েছে একা। তাই এসেছে একার জীবন!
‘গল্প হলেও সত্যি’ ছবির একটি দৃশ্য

2nd     July,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ