ধ্রুব মুখোপাধ্যায়: আমি বাপন ‘সময় বহিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়’ কথাটা সত্যি হলেও নদীর স্রোতকে কিন্তু আটকেও রাখা যায়। আর ঠিক একইভাবে সময়কেও। কিছু কিছু সময়কে নদীর স্রোতের-ই মতো এক একটা ড্যামের সামনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে আমি নিজের চোখে দেখেছি। উপভোগও করেছি। আসলে ঠিক এইরকমই একটা সময় আমারও আছে। রিটায়ারমেন্টের পর এই শেষের দু’বছর সকালের খবরের কাগজ আর নিজে থেকে বের করা কাজ নিয়েই দিন কাটাচ্ছি। অদ্ভুত স্বাধীনতা। জীবনের বেশিরভাগটাই রাজত্ব করল বিভিন্নজন। মা-বাবা, অল্প সময়ের জন্য নিজে এবং তারপর আবার স্ত্রী-সন্তান-সন্ততি। আর শেষকালটা তো আপনারা জানেনই। সে যাই হোক আমি কিন্তু কিছুটা হলেও ভাগ্যবান। ওই যে বললাম, জীবনের একটা সময়কে আমি নিজে বানানো একটা ড্যামের সামনে চুপচাপ দাঁড় করিয়ে রাখতে পেরেছি। আর সেই সময়ের রাজা স্বয়ং আমি। না, আমি তখন আর শতরূপ ব্যানার্জি নই। আমি তখন বাপন।
আমি উমা
আমি উম্মে ফতেমা। আজন্ম এই দর্শনাতেই। বাংলাদেশের এক প্রান্তে ভারতের গা ঘেঁষা দর্শনা-ই আমার গ্রাম, জেলা, রাজ্য, দেশ। আসলে দেশটার নাম এতবার বদল করল সবাই যে, ভিতরে একটা ভয় ধরে গিয়েছে। তার থেকে দর্শনা-ই ভালো। তাই মনে প্রাণে আমি বরাবর দর্শনারই। আগে এই ভারত-বাংলাদেশের ব্যাপারটা সেভাবে বুঝতাম না। তবে, এখন বুঝি। মানুষ–দেশ–জাতি যত বুড়ো হয় তার মান-অপমান-ভেদাভেদ বোধ তত বাড়ে। আসলে ছোঁড়ার থেকে বুড়োর ভুল অনেক অনেক ভয়ঙ্কর। সেই কোন ছেলেবেলায় আমার নাম ছিল উমা। বাপ, রহমত মিয়াঁ যাদের জমিতে চাষ করত, তারা আমাকে উমা বলত। আমার মুখটা নাকি তাদের ঠাকুরের মতো। কিন্তু মাঝে কী যে হল! হুট করে যুদ্ধ লেগে গেল। যদিও আমার বেশ মজাই লেগেছিল। আসলে যুদ্ধের আঁচ গায়ে না লাগা পর্যন্ত যুদ্ধ বেশ ভালোই লাগে। কে যে কার সঙ্গে লড়ছে সেটাই বুঝিনি। যাইহোক অত ভেবে কাজ নাই। মোটকথা যুদ্ধ করে আমরা আবার স্বাধীন হলাম। কিন্তু কী যে হল বুঝলামই না। আমাদের মতো মানুষদের অধীন থাকাটাই ভালো ছিল। বাপ মুনিবের অধীনে জমিতে চাষ আবাদ করে যাইবা খেত, সেটাও গেল। মুনিবরা সব ঘটিবাটি বেচে পালাল ওপাশে। সেই সঙ্গে পালাল ওই বাপনও। কী জানি, ওর কথা ভাবলে আজও আমার বয়সের কথা মাথায় থাকে না। মনে হয় এই তো শুরু হল সব।
আমি সময়
মিনা গত হওয়ার পর জীবনটা অদ্ভুত রকমের হয়ে গিয়েছে। কোনও কিছুতেই বারণ না থাকলেও করার মতো কিছুই নেই। তবে স্বামী-স্ত্রী’র একজন সরে গেলে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কটা আপাত দৃষ্টিতে দৃঢ় হলেও আসলে ওটা একটা ফাটল। তারপর আবার এই বয়সে! তবে জীবনের এরকম অদ্ভুত হওয়াটা নতুন কিছু নয়। ওই তো সেবার যখন বাবা-মা-ভাইদের সঙ্গে রাতারাতি দর্শনা থেকে গেদেতে এলাম তখনও হয়েছিল। তবে, শখটা আজও আছে। ঘুড়ির শখ। সেই যেবার যুদ্ধ হল সেবার থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটা পঁচিশে ডিসেম্বরে আমি সেই বারো বছরের বাপন বনে যাই। ওপাশে আমাদের একটা দল ছিল। ইস্কুলের ফিরতি পথে পায়ে-পায়ে ঢিল ছুড়তে ছুড়তে যে বন্ধুত্বটা হয় ঠিক সেই বন্ধুদের দল। কোনও চাওয়া নেই, পাওয়া নেই শুধু সময় মতো পায়ের ঢিলটা ঠিক জনের পায়ে দিতে পারলেই হতো। তবে উমা কিন্তু ইস্কুলে পড়ত না। আসলে রহমত চাচা আমাদের জমির দেখভাল করত আর উমা ওর বাবার সঙ্গে আমাদের বাড়িতেই থাকত। বাবা উমার পড়ার কথা বললেই চাচা এমন একটা সুর করে ‘বিটি ছিইল্যা’ বলত যে আমরা সবাই হাসতাম। সেই সঙ্গে হাসত উমাও। পড়াশোনা না পারলেও ও ঘুড়ি বানাত অসাধারণ।
আমি ঘুড়ি
আমি সব রকমের ঘুড়ি বানাতে জানতাম। বড়চাচা মানে ওই বাপনের আব্বা আমাকে অনেক রঙের কাগজ এনে দিত। আর আমার আব্বা এনে দিত এক ফালি বাঁশের টুকরো। বাপনরা ইস্কুলে গেলে আমি প্রথমে বাঁশ কেটে কঞ্চি আর তারপর সাবুর আঠা দিয়ে ঘুড়ি বানাতাম। এক-একজনের এক-একটা ঘুড়ি। পরানের চাঁদিয়াল, দেবুর পেটকাটি, রহিমের মোমবাতি, স্বপনের চাপরাশ, স্বপনের ভাইয়ের হাফ চাপরাশ, রক্তিমের বলমার, দেবেশের গ্যালা, ইকবালের ভেড়িয়াল, বাপনের ময়ূরপঙ্খী আর আমার মুখপোড়া। এখনও সবক’টা নাম মনে আছে। যদিও বাপনের ঘুড়িটা একটু যত্ন করেই বানাতাম। সঙ্গে একটা লেজও জুড়ে দিতাম। তারপর হতো মাঞ্জা। যদিও ওটা ছিল শুধু আমার আর বাপনের জন্য। বাকিদের কেউ জানতই না। গোয়াল ঘরের একটা দেয়াল জুড়ে কাচ গুঁড়ি, সাবুর আঠা, আলতা এসব দিয়েই তৈরি হতো মাঞ্জা। শীতে হাওয়ার টানটা একটু কমলে আমরা সব আম কাঠের লাটাই আর ঘুড়ি নিয়ে পাড়ি দিতাম আকাশে। ঘুড়িটা যখন উড়ত মনে হতো আমিই যেন উড়ছি। ওই তো আমার বানানো লেজটা কেমন অনেক অনেক দূরে দুলছে। মাঝে মাঝে ভাবতাম কেমন দেখায়? ওখান থেকে আমাদের দেশটাকে কেমন দেখায়? ওখান থেকে কী দেশের সঙ্গে দেশের, মানুষের সঙ্গে মানুষের যুদ্ধ দেখা যায়?
আমি যুদ্ধ
যুদ্ধটা আর কিছু দিক বা না দিক আমাদের দলটাকে বেশ মজবুত করে দিয়েছিল। ফিরতি পথে পায়ে ঠেলা ঢিলের আবেগ যে কতখানি সেটা আমরা হাড়ে হাড়ে বুঝেছিলাম। কিন্তু যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধই জেতে। মানুষগুলোকে হারতেই হয়। আমাদের দলটাও তাই ভেঙে গেল। প্রথমে মনে হয়েছিল দেশে-দেশে যুদ্ধ। তারপর বুঝলাম যুদ্ধটা মানুষের। আমরা তখন প্রতিবছর পুজোর ছুটিতে ঘুড়ি বানাতাম। আর শীত এলেই সেগুলোকে সব ভাসিয়ে দিতাম আকাশে। সে শীতেও ওড়াচ্ছিলাম। ঠিক তখনই যুদ্ধটা লাগল। বড় বড় যোদ্ধাদের সঙ্গে আমরাই তখন যেন যোদ্ধা। বিমানের আওয়াজ উঠলেই সুতোয় ছাড় দিতাম। ওড় ব্যাটা। যত উঁচুতে পারিস ওড়। তারপর একটা একটা করে ঘুড়ি কাটলেও শেষে পড়ে থাকত শুধু দুটো। আমার আর উমার। আসলে মাঞ্জাটা ওর মতো আর কেউ বানাতেই পারত না। এখনও খুব মিস করি। কে জানে বেঁচে আছে কি না! গেদেতে আসার পর ওর ওই মুখপোড়া একবারও ওড়েনি। যতদিন বাবা বেঁচে ছিল প্রতিবছর পঁচিশে ডিসেম্বরের রাতে জিজ্ঞেস করত ‘ক্যইরা! শেইষ অবধি ছিইল্যা?’ আর সব শেষে বলত “ক্যইরা! মুহপুইড়্যার মুহপুইড়্যাইলি, নাকি তহর নিসার?’ তবে আমিও পারি। ওর থেকেও ভালো মাঞ্জা বানাতে পারি। সেই সঙ্গে প্যাঁচও। ঘুড়ি যদি ও ওড়াত তাহলে আমিও দেখিয়ে দিতাম।
আমি পাঁচিল
আজও আমি পঁচিশে ডিসেম্বর এলেই সকাল থেকে রোদ পোহানোর নাম করে ছাদে বসে ঘুড়ি দেখি। কত বছর হয়ে গেল। এই দিনটাতে আমি কোত্থাও যাই না। সেই কবেকার কথা। যুদ্ধটা সেদিন থেমেছিল। কিন্তু একটা ভয় যেন ছেয়েছিল চারপাশে। উল্লাস-আনন্দের মাঝেই একটা আতঙ্ক যেন ভিতরগুলোকে ছারখার করে দিচ্ছিল। সেদিনই বড়চাচা কপালে হাত রেখে বলেছিল, ‘আর লয় রে! এবার আমরা চলুম। ত্যুইরা সব ভাইল্য থাহিস!’ প্রথমে বুঝিনি। গেদে আর দর্শনা তো পাশাপাশিই। মাঝে শুধু সামান্য একটা বেড়া। কিন্তু পরের দিন যখন সবাইকে ডেকে দেবু, পরান, রক্তিম, স্বপনরা সব ছেড়েছুড়ে ওপাশে গেল তখন বুকটা কেমন যেন ছ্যাঁত করে উঠেছিল। শুধু বলেছিল পঁচিশে ডিসেম্বরের মজাটা যেন থাকে। আছেও। আজও পঁচিশে ডিসেম্বর আকাশের দিকে তাকালে বুকটা ঠিক ওরকমই ছ্যাঁত করে ওঠে। এপাশে রইলাম শুধু আমি, ইকবাল আর রহিম। ইকবাল আর রহিম আজও দর্শনার বর্ডার থেকে ঘুড়ি ওড়ায়। এখনও আমার কাছে আসে। আমি আজও রহিমের জন্য মোমবাতি আর ইকবালের জন্য ভেড়িয়াল বানিয়ে দিই। তবে মাঞ্জাটা করে দিই না। আর সেই জন্যই হয়তো আকাশের সব ক’টা ঘুড়ি কেটে গেলেও গেদে থেকে ওড়া ময়ূরপঙ্খীটা আজও শেষ বেলাতেও একা একা ওড়ে।
আমি এপার
আজকাল আর সেইরকম হালকা ঘুড়ি পাওয়াই যায় না। মাঞ্জার কথা তো ছেড়েই দিলাম। তবে আজও আমি ময়ূরপঙ্খী-ই ওড়াই। নিজেই মাঞ্জা বানাই। পঁচিশে ডিসেম্বর আমাদের এই গেদের বাড়িটাতে আমি নিয়ম করে আসি। পরান, দেবু, স্বপনের ভাইরাও আসে। আসলে বাকিরা আর কেউ নেই। তারপর টুক-টুক করে আকাশে তারা ফোটার মতো উড়তে থাকে আমাদের ঘুড়িগুলো। ওপাশ থেকে ইকবাল, রহিম-ও ওড়ায়। ওদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই রাখিনি আমরা। ওরাও রাখেনি। তবে ঘুড়িগুলো রেখেছে। আগে আমরা ঘুড়ি উড়িয়ে জানান দিতাম আমরা ভালো আছি। কিন্তু এখন এক একটা ঘুড়ি মানে আমরা বেঁচে আছি। যদিও উমার খবর কোনওদিনই পাইনি। আমি নিইওনি। দেশ ছাড়ার সময় কতবার বলেছিলাম, আর যাই হোক না কেন আমাদের ঘুড়িগুলো যেন ওড়ে। কিন্তু উমা কথা রাখেনি। হয়তো পারেনি। মনটা খুব টানে। দর্শনার বাড়িটা...। একবার গেলেই পারি কিন্তু কেন যাব? পিছনে তাকালে যদি আবার পিছিয়ে পড়ি। প্রথমে ভেবেছিলাম জাস্ট পাড়া বদল হল। কিন্তু এই পাড়া দুটো যে দুটো আলাদা দেশের যেখানে প্রতিবেশীরা কয়েকগুচ্ছ নিয়মকানুন মেনে কথাবার্তা বলে সেটা বুঝিনি। ভাবলে গা-টা শিউরে ওঠে। কে জানে কেন এসেছিলাম। আসলে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যদি মরে যাই! কিন্তু প্রাণে মরার চেয়ে মনে মরার যন্ত্রণা যে কতখানি সেটা বুঝতে বড্ড দেরি হয়ে গেল।
আমি ওপার
দেরি আর কোথায়। এই তো স্বপনের ভাইয়ের ঘুড়িটা উড়ল। হাফ চাপরাশ। এরপর এই তো বাপনের ময়ূরপঙ্খীটা তারপর দেবুর পেটকাটি। থাক তাহলে, আল্লার মেহেরবানিতে ওপারটা ঠিকই আছে। আসলে একে একে স্বপনের চাপরাশ, রক্তিমের বলমার, দেবেশের গ্যালা— ঘুড়িগুলোকে মুছে যেতে দেখে মনে একটা ভয় ধরে গিয়েছে। তারপর হুশ করে রহিমের মোমবাতিটা প্যাঁচ মেরে কেটে দিল ময়ূরপঙ্খীটাকে। ইশ! বাপনের মুখটা মনে পড়ছিল আমার। আহা! বেচারা, বুড়ো হয়ে গিয়েছে। প্যাঁচে ঠিক সময়ে ছাড় দিয়ে হ্যাঁচকা টানটা আর মারতে পারে না। ঘুড়িটা অনেকক্ষণ উড়তে উড়তে সুতো নিয়ে আটকালো আমার-ই ছাদে। আমার নাতনিটা লাফিয়ে সুতোটা ধরে ঘুড়িটাকে নিয়ে এল। ‘আমিও ওড়াব’ নাতনিটার মতোই আমিও একদিন বলেছিলাম। আব্বা না শুনলেও বড় চাচা শুনেছিল। সুতোটা হাতে নিয়ে দেখলাম খুব বাজে। পাতলা মাঞ্জা। নীচে নেমে বিয়ের সময় আনা টিনের বাক্স থেকে সুতো জড়ানো লাটাইটা আনলাম। কিন্তু এ কি আর উড়বে? নাতনির থেকে ঘুড়িটা হাতে নিতেই বুকটা শিউরে উঠল। মোটা মোটা করে লেখা ‘যেখানেই থাকিস ভালো থাকিস উমা!’ আমিও একটা মোম পেন্সিল নিয়ে ঘুড়িটার উল্টো দিকে নাতনিটাকে দিয়ে লেখালাম, ‘আমি ভালো থাকলেও তোর প্যাঁচ মারার হাতটা ভালো নেই।’ তারপর বেঁধে নিজেই ওড়ালাম। চোখের জোর এখনও আমার বেশ ভালোই আছে। ক্ষয়েছে বলতে শুধু হাঁটু দুটো। তারপর কিছুটা ওড়াতেই হুশ করে ছিঁড়ে গেল। পচা সুতো। যদিও আমি শেষ পর্যন্ত দেখেছি। বর্ডার পেরিয়ে ওপারেই গেল। কে জানে বাপনের কাছে গেল কি না!
আমি ‘বেঁচে থাকা’
ঘুড়িটা কেটে যাওয়াতে ভিতরটা জ্বলে যাচ্ছিল আমার। রহিমকে গাল দিতে দিতেই কখন যে উমাকেও গালিগালাজ করতে শুরু করে দিয়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। আর ঠিক তক্ষুনি কেটে যাওয়া ময়ূরপঙ্খীটা আবার উড়ল। দুলতে দুলতে এদিকটাতেই এল। ঠিক এমনটাই করত উমা। নিজের মাঞ্জার অপমান উমা কোনওদিনও সহ্য করেনি। কেটে যাওয়া ঘুড়ি নিয়ে অন্যের ঘুড়ি কাটত। তাহলে কি বেঁচে আছে? আমি চোখ মেলে দেখার চেষ্টা করলাম। দুলতে দুলতে কিছুটা নীচে নেমেই কখন কোথায় যেন লুকিয়ে পড়ল। আকাশটা সেই আগেরই মতো থাকলেও নীচটা এখন ইট, কাঠ, পাথরের জঙ্গল। অনেক বড়, অনেক জটিল। ‘বাবা, দ্যিখসো, তুমহার মুহপুইড়্যা নিসার মুহ নিসেই পুইড়্যালো ক্যামনে’ আকাশের দিকে তাকিয়ে কখন যে চিৎকার করে বলে উঠেছিলাম আমি বুঝতেই পারিনি। বুঝতেই পারিনি যে সব কিছুর মতো বাবাও আর নেই।
অলংকরণ: সোমনাথ পাল