বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
গল্পের পাতা
 

কালা চশমা 
শুচিস্মিতা দেব

সুমিতাকে প্রবাস জীবনের শুরুতে সংসারের বাঙালি স্বাদগন্ধ বজায় রাখতে কম মেহনত করতে হয়নি! কোথায় মেলে বাঙালি পুরুতঠাকুর... শুক্তো-মুড়িঘণ্ট, স্পেশালিস্ট বঙ্গ ক্যাটারার... গাওয়া ঘি-গোবিন্দভোগ চাল অথবা শারদীয় পত্রপত্রিকা! কর্তাটি তার নির্ভেজাল খাঁটি বাঙাল ফলে দীর্ঘ দিল্লিবাসে যাবতীয় বঙ্গসমাচার এখন সুমিতার নখদর্পণে। তবে এবারে সে বড্ড ধাক্কা খেয়েছে! জীবনের অতি জরুরি সমস্যাটির সমাধানে সে ডাহা ফেল মেরেছে। দু’বছরে সে একটি সুশীল বঙ্গসন্তানের তোলপাড় সন্ধানে ব্যর্থ হয়েছে! তার একমাত্র মেয়ে শিঞ্জিনীর বিয়ের জন্য সর্বগুণসমন্বিত একটি বাঙালি সুটেবল বয় সে এখনও খুঁজে বের করতে পারেনি।
শিঞ্জিনী সুন্দরী, শিক্ষিতা, স্মার্ট, কর্মরতা। বিজ্ঞাপনে একেবারে খাপে খাপে বসে যাওয়া কন্যা তাদের! এমন মেয়ের পাত্রের অভাব হয়নি, কিন্তু সুমিতার পছন্দের সেন-মিত্র-ঘোষ-বোস পাত্রদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু খুঁত বের করে শিঞ্জিনী নাকচ করে দিয়েছে। ডাল মে কুছ কালা হ্যায়— এমনটাই সন্দেহ হচ্ছিল অতনু-সুমিতার! আজ সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়ে তাদের একেবারে ধরাশায়ী করে দিল!
শিঞ্জিনী জানিয়েছে সে একজনকে পছন্দ করে! ছেলেটি পাঞ্জাবি! তারই অফিসে কাজ করে। নাম হানি আরোরা।
‘হানি?’
নাম শুনে বাপ-মায়ের অ-মধুর অভিব্যক্তিকে আমল না দিয়ে অ্যাগ্রেসিভ ভঙ্গি মেয়ের, ‘হ্যাঁ! ওর বোনেদের নাম পিঙ্কি আর টুইঙ্কল! এনি প্রবলেম?’
প্রবলেম? অতনুর তো মাথা ঘুরছে! মেয়ে কি বুঝছে না অতনুদের বাঙালি সংস্কৃতি কী ভয়ঙ্কর রকমের চোটের মুখে পড়ল! কলকাতার ইন্টেলেকচ্যুয়াল পাবলিক নাম শুনে যা নাক সিঁটকাবে ভেবে সুমিতা কাতর। হায়! হায়! একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কত স্বপ্ন তাদের... কোথায় সাতপাক-শুভদৃষ্টি-উলুধ্বনি আর কোথায় ঘোড়ার পিঠে নাচতে নাচতে আসা শেরওয়ানি আর টাকার মালা! সাবেকি লাল বেনারসি কপালে চন্দন কি কম্পিটিশনে পেরে উঠবে চটকদার ল্যাহেঙ্গা-চোলির সঙ্গে? শুধু তাই? জামাইয়ের সঙ্গে খচরমচর করে তথাকথিত ‘রাষ্ট্রভাষা’য় আড্ডা মারা! কল্পনাতীত নয়? যত ভাবে তত চোখের জলে ভাসে সুমিতা।
এদিকে শিঞ্জিনী রবিবার হানিকে নাকি তাদের বাড়িতে ডিনারে নিমন্ত্রণ পর্যন্ত করে বসে আছে! বোঝাই যাচ্ছে, হানি বাড়ি পর্যন্ত হানা দেবার পাসপোর্ট পেয়ে গিয়েছে যখন কেস তাদের হাতের বাইরে যাব যাব করছে।
‘যেমন আদুরে মেয়েকে অতিরিক্ত স্বাধীনতা দিয়েছ... এখন সহ্য করো তার মধুর পরিণাম।’
বরকে ঠুসছিল সুমিতা। ‘পাঞ্জাবিদের বিয়েতে খাঁই খুব। ওরা আমাদের মতো সিম্পল বিয়েতে বিশ্বাসী নয়। হিন্দি সিনেমায় দেখো না? বিগ ফ্যাট ইন্ডিয়ান ওয়েডিং? গাড়ি চাইলে অবাক হয়ও না!’
দু’বছর পরে আসন্ন রিটায়ারমেন্টের কথা ভেবে অতনু গুম মেরে যায়। মেয়ের উপর অভিমানও হল। প্রেমে পড়ার সময় বাপ-মায়ের পকেটের কথাটা মনে রাখা উচিত ছিল না শিঞ্জিনীর? সাউথ ইন্ডিয়ান বা মারাঠি ছেলে পছন্দ করা যেত না? অতনুর ধারণা পঞ্চনদের অধিবাসীদের থেকে তারা টাকাপয়সার ব্যাপারে বাঙালিসুলভ হিসেবি হয়ে থাকে!
রবিবারের সন্ধ্যা! কাঁটায় কাঁটায় সাতটায় সুদেহী হানি হাতে অর্কিডের তোড়া নিয়ে হাজির তাদের ফ্ল্যাটে। শিঞ্জিনীকে একটু নার্ভাস লাগছে। পাঞ্জাবিরা যে সুন্দর ও স্মার্ট হয়, এটা অতনুরা অস্বীকার করতে পারে না। ছেলেটির নিচু হয়ে প্রণাম করার বিনীত আবেদনও সুমিতাকে স্পর্শ না করে পারে না। শিঞ্জিনী প্রণামে বিশ্বাসী নয় জানে সুমিতা। মাথা নত করলে মানুষ ছোট হয়ে যায় না, এ কথাটা আধুনিকা মেয়ের মাথায় ঢোকাতে পারেনি তারা।
অতনু সিডিতে বাংলা গান চালিয়ে রেখেছে। হানি সোফায় বসে বলে, ‘টেগোর সং?’
শিঞ্জিনী ট্রেনিং মন্দ দেয়নি বোঝে অতনু। মাছের ফ্রাই ফটাফট খেয়ে নিল। দু’চারটে ভাঙা বাংলা বলে একটু চমকের চেষ্টা করল কি? পরীক্ষায় ফেল মারার মতো আহাম্মক ছেলে নয়। কথাবার্তায় সাবলীল হাসিখুশি— ইম্প্রেস করার উগ্রতা নেই ব্যবহারে।
রাতে স্বামী-স্ত্রী মুখোমুখি।
‘মেয়ে শিখিয়ে পড়িয়ে এনেছে বটে তবে ছেলে খারাপ নয়’— অতনুর কথায় সুমিতা শরীরে বল পায়। স্বামীকে হাত করা সহজ নয় জানে। মেয়েটার জন্য মায়াও হচ্ছে।
‘ভদ্র ছেলে। তুমি যে বাঙালি, বাঙালি করে নাচো, আজকালকার কোন বাঙালি ছেলেমেয়ে আমাদের মতো? তোমার মেয়ে বাংলা সিনেমা দেখে? বাংলা বই পড়ে? বাংলা গান শোনে? শাড়ি পড়ে? দু’জনের মধ্যে অমিলের চেয়ে কিন্তু মিলই বেশি। কপালে থাকলে এই হানিই কালিয়া, মুড়িঘণ্ট চেটেপুটে সাফ করে দেবে দেখো।’
সুমিতা যুক্তিসহকারে চিন্তা সাজায় নাকি নিজেকেই আশ্বাস দেয় কে জানে!
‘কিন্তু বিয়ে তো শুধু ছেলেতে-মেয়েতে হয় না। বিয়ে মানে দুটো পরিবারেরও বন্ধন। দিল্লির যে সব পাঞ্জাবিদের চিনি বড্ড শোঅফ— বাইরের চাকচিক্য বেশি। অন্যরকম... আমাদের সঙ্গে খাপ খাবে কি?’
সুমিতাও তো সেটাই ভাবছে। তার আদি বাপের বাড়ি খুলনা আর শ্বশুরবাড়ি চট্টগ্রাম। অধুনা যথাক্রমে ভবানীপুর আর টালিগঞ্জ। সুমিতার শ্বশুরবাড়ির মানুষরা কটকট করে বলত, বাপরে! তোমাদের বাড়িতে ডাল খেলে মনে হয় পায়েস খাচ্ছি! সুমিতা যে কত বছর ঝালের চোটে শ্বশুরবাড়িতে খেতে পারত না, সেই হিসাব অতনু রাখেনি। বাংলার মধ্যেই কত ভেদাভেদ আর এ তো সুদূর পাঞ্জাব! হাজার হাজার কিলোমিটারের দূরত্ব। তাদের খাওয়াপরা, আচারকানুন না জানি কত আলাদা। তার মেয়েটার কষ্ট হবে না তো!
অতনু যেন স্ত্রীর মন পড়ে ফেলে। ‘ভয় পেও না। বিয়ে তো আর ঠিক হয়ে যায়নি। শ্বশুরবাড়ি দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব, শুধু ছেলে দেখে নয়। আমার মা সব সময় বলতেন, ঘর না দেখে কখনও বর আনবে না। আমার অসহায় বিধবা মা ছেলেপুলে নিয়ে টালিগঞ্জের কলোনিতে এসে কত যে কষ্ট করে আমাদের মানুষ করেন। একা হাতে তিনটে মেয়ে, দুটো ছেলের বিয়ে দেন। আমরা ভাইবোনরা তো ভালোই আছি।’
আনমনা অতনু থেমে যায়। সুমিতা জানে রোজগারের জন্য অল্প বয়সে অতনুকে মা আর পরিবার ছেড়ে প্রবাসে আসতে হয়েছিল। অতনু মায়ের কোলপোঁছা আদুরে ছোটছেলে। মাকে ছেড়ে আসার কষ্ট প্রবল ছিল। মায়ের আকস্মিক মৃত্যুতে শেষ দেখাটাও হয়নি। প্রবাসজীবন অতনু কোনওদিনই পছন্দ করেনি। দূরে থেকেও আচার ব্যবহারে প্রাণপণে সে এতদিন বাঙালিয়ানাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। মেয়েটা অতনুর বুকে শেল হেনে দিল। বাবার কথাটা একবার ভাবল না?
সুমিতা অতনুর মতো নয়। প্রবাস জীবন তার দিব্যি লাগে। কলকাতার জীবন একঘেয়ে। এখানে নাটক, জলসা, গানবাজনা— বারো মাসের তেরো পার্বণের হইহুল্লোড়ে মেতে আছে মিশুকে সুমিতা। অতনুর মতো সে ‘কলকাতা’ ‘কলকাতা’ করে হেঁদিয়ে মরে না। তবু ধুতি-পাঞ্জাবি-টোপর শোভিত একটি লাজুক জামাইয়ের ছবি তার বুকে বেদনার ঢেউ তুলছে সেটা সে অস্বীকার করে কী ভাবে?

গাড়ি ছুটছে হু হু বেগে... রোহতক শহরে হানিদের বাড়ির উদ্দেশে। চালক হানি সিডিতে বাংলা গান চালিয়েছে। কী জানি কী ভেবে শিঞ্জিনী আজ একটা হালকা রঙের বালুচরী শাড়ি পড়েছে। বাপ-মাকে খুশি করতে নাকি শ্বশুরালে বাঙালি নারীর ভাবমূর্তি তৈরি করতে বোঝে না অতনু। তবে তার মনে হচ্ছে পুরো ব্যাপারটা মেকি এবং লোকদেখানো। তারা কেউ সত্যিই খুশি নয়। গম্ভীর বাবা-মাকে দেখে শিঞ্জিনীরও মনখারাপ। ওদের সে যেন নিয়ে যাচ্ছে বধ্যভূমিতে। নার্ভাসনেসে বুক কাঁপে তার। বাবা-মাকে এত অসুখী সে দেখতে পারছে না। সে নিজেও জানে হানি কোনওদিন একশো ভাগ বাঙালি জামাই হয়ে উঠবে না বা রোহতকের পাঞ্জাবি পরিবারটি তাদের আত্মীয় হয়ে উঠতে অনেক হোঁচট খাবে। তবু হানিকে সে চায়— তারা পরস্পরকে ভালোবাসে।
কৃপাল কলোনির দোতলা বাড়িটাতে আজ উৎসবের আমেজ। হানিদের আত্মীয়স্বজনদের পাল্লা বেশ ভারী। যে কোনও শুভ-অশুভ ঘটনাই বৃহত্তর ‘পরিবার’বেষ্টিত হয়ে উদ্‌যাপন করে তারা। মাসি-পিসি, তাদের ছেলেমেয়ে, নাতিনাতনিতে সরগরম বাড়ি। মহিলাদের অবদানে রান্নাঘরের বাতাস সুঘ্রাণে ভরপুর। খুশির আমেজ ছড়ানো সাজানো গুছানো ঘরে ঘরে। ভাবখানা ভাবী বধূর বাঙালিয়ানা নিয়ে অহেতুক ভাবাভাবির কিছুই নেই যেন!
অতনু বেশ আড়ষ্ট। প্রথমদিনই এত মানুষ সে আশা করেনি। এরপর যদি বিয়ে না হয়?
সুমিতা তুলনায় অনেকটাই সাবলীল। পরিবেশটা সুমিতার কাছে অভিনব লাগছে। খোলামেলা হাইওয়ে ধরে জার্নি— তার চেনা পৃথিবীকে পিছনে ফেলে নতুন মানুষজনের মধ্যে বেশ উত্তেজনার স্পর্শ পাচ্ছিল সে। এরা ভারী অতিথিবৎসল। খাদ্য-পানীয় আর কথার স্রোতে খেই হারানো অতনু অবশ্য ভাবে ‘বড্ড আদিখ্যেতা!’
এই সময় হানির বাবা একজন অতিবৃদ্ধাকে ধরে ধরে ঘরে ঢুকতেই চমকে যায় অতনু-সুমিতা। হানির দাদিমার অস্তিত্ব তাদের অজানা ছিল। লোলচর্ম ফুটফুটে দাদিমার মুখের হাসিটি ভুবনমোহিনী। অতনু প্রণাম করতে তিনি ‘বেটা’ বলে জড়িয়ে পাশে বসালেন। বয়স দাদিমাকে তেমন কাবু করেনি। কথার ফুলঝুরিতে গল্পবাজ দাদিমা তাঁর অতীতের সাতকাহন মেলে বসলেন। তাতে উপস্থিত কারও কোনও বিরক্তি দেখা গেল না!
এই সব স্মৃতিচারণা নিশ্চয়ই বহু বার শোনা, তবু ‘বুজুর’ মানুষটির উৎপাত দিব্যি হাসিমুখে সহ্য করতে তারা আপত্তি দেখায় না।
লাহোর থেকে আটটা সন্তান নিয়ে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন পরম। তার সোহরকে ততদিনে কচুকাটা করে নিকেশ করা হয়েছে লাহোরে। হানির বাবাই ছিল ষোলো বছরের জ্যেষ্ঠ সন্তান— অস্তিত্ব রক্ষার সেই ভয়ঙ্কর সংগ্রামের স্মৃতি ঘরের বাতাসে বিষাদ ছড়ায়। আজকের সম্পন্ন গৃহস্থালির আড়ালে লুকিয়ে থাকা ছিন্নমূল মানুষের গোপন ইতিহাসের ব্যথা দীর্ঘশ্বাসের মতো মথিত করে মানুষগুলিকে।
অতনু সাদা সালোয়ার কামিজ পরা বৃদ্ধাকে দেখে অপলক... তার স্মৃতি জুড়ে আজও বসে আছে এমনই এক বৃদ্ধা অতসীবালা। পরনে সাদা থান, সাদা চুল, এমনই দৃঢ়, এমনই সাহসী ছিলেন তার মা। দাঙ্গায় স্বামীকে হারিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কলকাতার দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। ভারতবর্ষের দুই প্রান্তে স্বাধীনতার যূপকাষ্ঠে একই সময়ে দু’টি নিঃস্ব পরিবারকে বলি দিতে হয়েছিল তাদের জীবনের সুখ, আনন্দ, স্বাভাবিক জীবনের স্বস্তি।
অতনুর দু’টি সজল চোখ ঘরের অনেকেই অবাক করলেও সুমিতা বোঝে বইকি। পরম কী বোঝেন কে জানে! তিনি ঝুঁকে অতনুর হাতটা নিজের হাতে টেনে নেন।
‘দুখী মৎ হো বেটা... আজকের সুখের দিনে তোমাকে কষ্ট দিলাম। কিন্তু অতীতকে বাদ দিয়ে তো আমরা সম্পূর্ণ হই না বেটা। তোমরা আমাদের আপনজন হবে, পরিবারের পরম্পরার সবটুকু তোমাদের জানার পুরা হক আছে।’
সত্যিই পরম আরোরাকে বেশ ‘আপনজনই’ বোধ হচ্ছে অতনুর। শিঞ্জিনী আর সুমিতা দেখে অতনুর মুখের টানটান কঠিন রেখাগুলো মিলিয়ে গিয়েছে। পরমের অশক্ত হাতটা এখনও ধরে আছে আনমনা অতনু...

দিল্লির দিকে ফিরছে গাড়িটা। পিছনে অতনু আর সুমিতা গা এলিয়ে বসেছে। সন্ধে নামছে দু’পাশের সবুজ খেতজুড়ে— গ্রামের পথে মোষের দল অলসগতিতে ঘরে ফিরছে— বাড়ির উঠোনে গোল হয়ে বসে হুঁকা টানছে গালগল্পে মেতে থাকা জাঠপুরুষের দল। দিনশেষের ধুলোমলিন শান্ত সুখের ছবি আঁকা হচ্ছে পথের দু’ধারের গৃহস্থালিতে।
ক্লান্ত শিঞ্জিনী সিডি চালাতেই বেজে ওঠে গান ‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু...’
খানিক বাদে সকলকে চমকে দিয়ে অতনু বলে ওঠে, ‘ওরে! হানি এতটা পথ গাড়ি চালাবে, ঘুমিয়ে না পড়ে! ওর পছন্দ মতো গান চালা বরং। লেট হিম রিল্যাক্স।’
শিঞ্জিনী হানির দিকে তাকায়। হানি শিঞ্জিনীর দিকে। বড় মধুর হাসিতে ভরে ওঠে তাদের মুখ।
দ্বিতীয় বার অনুরোধ করতে হয় না। গাড়ির ভিতরে ঝমঝমিয়ে বেজে ওঠে পাঞ্জাবি গানের ঝাঁঝালো ধুন ‘ও মাইনু কালা চশমা... কালা চশমা।’
হানি সোৎসাহে স্টিয়ারিংয়ে তাল ঠোকে। শিঞ্জিনী হানির চোখে চোখে রেখে ভ্রুতে নাচের কাঁপন তোলে। বাবার গলার আন্তরিকতাটুকু তার ক্লান্তিকে নিমেষে ফেলে আসা পথের বাঁকে ঠেলে দেয় যেন!
সুমিতা স্বামীর মুখ দেখে আড়চোখে। গানের ধামাকায় আবার না ব্যাজার হয়ে যায় অতনু।
মুখে গাম্ভীর্য বজায় রাখলেও আসলে এখন মনে মনে হাসছে অতনু। ভাবছে কালাচশমাটা তার চোখ থেকে বোধহয় এতদিনে খসে গেল— সে এখন বেশ পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে।
অলঙ্করণ: সোমনাথ পাল 

23rd     May,   2021
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ