বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

মিষ্টির প্যাকেট আর...

বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র—মনে আছে তো! সাদা খসখসে কাগজে আঁক কাটা চৌখুপি। তার ভিতরে লাল-কালো বা নীল কালিতে বাংলা হরফে লেখা তারিখ-বার। উপরে মাসের নাম। আর অমাবস্যা, পূর্ণিমার চাঁদ আঁকা। পয়লা বৈশাখের দিন হালখাতা করে ফেরার পথে এরকম একটা ক্যালেন্ডার আর মিষ্টির প্যাকেট। তারপর থেকে ক্যালেন্ডারটা দেওয়ালে এমনি এমনিই ঝোলে। ২৫ বৈশাখ, মহালয়ার মতো কয়েকটা দিন ছাড়া দেখার খুব একটা প্রয়োজন হয় না। বাকি সময়ে কাজ বলতে পাখার হাওয়ায় ফরফর করে ওড়া। তবে প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ আসে। দু-একটা ক্যালেন্ডার কপালে জুটেই যায়।   
বাড়তি বলে তার আদর কম। বাঙালিরা ছোটবেলায় মাসগুলির নাম বড়দের চাপে মুখস্থ করে বটে, পরে তা ভুলেও যায়। আষাঢ়ের ধারাপাত রেনি সিজন হয়ে যায়। ইংরেজি মিডিয়ামে পড়া কচি জিভ জ্যেষ্ঠ উচ্চারণ করতে জড়িয়ে যায়। পৌষের পর যে মাঘ আসে, হাজার চেষ্টা করেও মনে করতে পারে না খুদেরা। ফলে পয়লা বৈশাখের মিষ্টি হজম হওয়ার আগেই অবহেলায় ছিঁড়তে শুরু করে ক্যালেন্ডারের পাতা। মাসগুলি স্মৃতির মতোই ছিঁড়ে ছিঁড়ে ছড়িয়ে পড়ে ঘরের কোণায়, সোফার তলায়। অভিমান হয়! হতেও পারে। তার পরও সব কিছু ভুলে বাঙালির জীবনে ফি বৈশাখে পা রাখে ক্যালেন্ডার। সে বোধহয় জানে, এখনও কেউ অমাবস্যা কবে পড়েছে জানতে পাতা উল্টে দেখবে। কবে একাদশী, কবে পূর্ণিমা জানতে এখনও চশমার আড়ালে থাকা ঘোলা দুই চোখ পাতায় ধীরে ধীরে আঙুল বোলাবে। এটা জানানোই তার কাজ। তাই গুটিগুটি পায়ে ফিরে আসা। দেওয়ালের এক কোণে, নজরের বাইরে সন্তর্পণে একটা পেরেক খুঁজে নেওয়া। সেখানেই ঝুলে থাকা। ইংরেজি ক্যালেন্ডার বাঙালির ব্রেড অ্যান্ড বাটার হলে গরমে ঠান্ডা থাকার বেলের পানা বা টকের ডাল হল বাংলা বর্ষপঞ্জি। বাংলায় ক্যালেন্ডারকে এ নামেও ডাকেন অনেকে।
বাংলার বর্ষপঞ্জিতে ছ’টি ঋতু। প্রতি ঋতুতে দু’টি মাস। মাসগুলি নক্ষত্রের নামে। যেমন—বিশাখা নক্ষত্রের নামে বৈশাখ। জ্যেষ্ঠা থেকে জ্যৈষ্ঠ। শ্রবণা থেকে শ্রাবণ ইত্যাদি। আর নবগ্রহ থেকে সাত দিনের নাম—বুধ, রবি, শনি ইত্যাদি।
একাধিক মত অনুসারে, বাংলার পয়লা বৈশাখে কোনও কালেই নববর্ষ পালন হতো না। এই দিন ব্যবসায়ীরা নতুন খাতা খুলতেন। পরে বৈশাখে শুরু হয় নববর্ষ পালন। এর সূত্রপাত অবশ্য প্রাচীন যুগে। রাজা, মহারাজা, সম্রাট বা জমিদাররা প্রজাদের থেকে কৃষিজমির খাজনা আদায় করতেন। এই পদ্ধতিই হালখাতা হয়ে ওঠে ব্যবসায়ীদের কাছে। বর্তমান সময়ে পয়লা বৈশাখের দিন আগের বছরের ধারদেনা চুকিয়ে নতুন খাতায় নাম তোলেন ক্রেতারা। কেউ কেউ আবার জমা রাখেন আগাম টাকা। সেটা হালখাতায় উঠে শুরু হতো নতুন হিসেব। সে রীতিই চলছে এখনও।

16th     April,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা