বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
বিকিকিনি
 

দক্ষিণের বারাণসী গোকর্ণ

আরবসাগর তীরে দক্ষিণের বারাণসী গোকর্ণ। এবার শীতে ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকে। লিখেছেন তাপস কাঁড়ার।

শীত দোড়গোড়ায়  কড়া নাড়ছে প্রায়। আর শীতের এই ছোট্ট সময়টা হাতছাড়া করতে চায় না ভ্রমণপ্রিয়  বাঙালি। এবার শীতে ঘুরে আসতে পারেন কর্ণাটকের গোকর্ণ থেকে।
আরবসাগর তীরে দক্ষিণের বারাণসী গোকর্ণ। প্রকৃতি আর ধর্মের অদ্ভুত সহাবস্থান এখানে। দিন দুয়েক অনায়াসে কাটিয়ে দেওয়া যায়। শহরে  প্রাচীনত্বের স্বাদ পাওয়া যায় আনাচেকানাচে। রাস্তার দু’পাশের বাড়িগুলির চেহারা ও চরিত্রের মধ্যেই যেন থমকে আছে সময়। ধর্মপ্রাণ মানুষের পদচারণা গোকর্ণের সর্বত্র। পরনে শ্বেতবস্ত্র, হাতে পুজোর সামগ্রী। ধর্মীয় আবহ পর্যটকদের আহ্বান জানায়।
গোকর্ণে মহাগণপতি ও মহাবালেশ্বর মন্দির মূল আকর্ষণ। মহাগণপতিতে দ্বিবাহুবিশিষ্ট গণেশকে ছোট  শিশু মনে হয়। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, কৈলাস থেকে মহাদেবের দেওয়া আত্মলিঙ্গ নিয়ে লঙ্কা যাওয়ার পথে রাবণ এখানে আসেন। সম্মুখে সাক্ষাৎ এক বালককে আত্মলিঙ্গ সমর্পণ করে বলেন, ‘আমি দৈনিক আচার সেরে না আসা পর্যন্ত এই লিঙ্গ মাটিতে কোথাও রাখবে না।’ তবু বালক মাটিতে আত্মলিঙ্গ রেখে দেয়। রাবণ ফিরে মাটি থেকে তা তুলতে না পেরে ভীষণ রেগে যান বালকের উপর। উত্তেজিত হয়ে পাথর ছুড়ে মারেন বালকের মাথায়। সেই বালক ছিলেন গণেশ। তিনি মাথায় সেই আঘাতের চিহ্ন আজও বহন করে চলেছেন। দ্রাবিড়ীয় স্থাপত্য শৈলীতে তৈরি মন্দিরটি পাথরের ভাস্কর্য দ্বারা অলংকৃত।
এই মন্দির দর্শন করে চলুন মহাবালেশ্বর মন্দিরে। সমুদ্রমুখী এই মন্দিরও দ্রাবিড়ীয় শৈলীর। ধূপের সুবাস, ঘণ্টা ধ্বনি ও সমুদ্রের গর্জন মিলেমিশে একাকার। এছাড়াও দেখে নিতে পারেন রামতীর্থ, তামরি পারনি তীর্থ।
এবার ধর্মীয় আবহ ছেড়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে যাওয়া যাক। গোকর্ণে  রয়েছে অতি সুন্দর সমুদ্রতট। আরবসাগর অন্য রূপে ধরা পড়েছে এখানে।  কুডলে, ওম, প্যারাডাইস ও হাফ মুন নামের বিচগুলো দেখার মতো। গোকর্ণের প্রধান বিচ অবশ্য  কুডলে। দীর্ঘ এই বিচে ভক্ত ও পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।
সোনালি বালির ক্যানভাসে  নৌকার রঙিন উপস্থিতি। নোনা জল পা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেন কুমিরডাঙা খেলে।  এই সৈকতের মায়া ছেড়ে অটো করে চলুন ওম বিচে। বেশ সুন্দর পাহাড়ি পথে নির্জন সৈকত। পাহাড় আর পাথরের 
প্রেম সমুদ্রের সঙ্গে। উপর থেকে ওম আকৃতির মতো লাগে। এই সৈকতে বিদেশিদের আনাগোনা বেশি। পাথরের উপর বসে নিরন্তর জলের যাওয়া আসা দেখতে দেখতে সময় 
চলে যায়।
এখান থেকে বোটে চেপে ঘুরে আসা যায় প্যারাডাইস বিচ ও হাফ মুন বিচ। শান্ত নিরিবিলিতে এই সৈকতে কিছুটা সময় কাটানো যায়। বোট ছাড়া এই সৈকতে আসতে পারেন ট্রেকিং করে। ঘুরতে ঘুরতে  সূর্যাস্তের সময় চলে আসুন কুডলে সৈকতে। মনে রাখবেন মন্দিরে প্রবেশ করতে হলে দক্ষিণ ভারতীয় রীতি অনুযায়ী পুরুষদের ধুতি ও মহিলাদের শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ পরতে হবে। ইচ্ছে হলে প্রসাদও নিতে পারেন।
কীভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে যশবন্তপুর এক্সপ্রেস ধরে যশবন্তপুর। এখান থেকে প্রতিদিন সকাল ৬.৫০ ছাড়ছে পঞ্চগঙ্গা এক্সপ্রেস। পৌঁছয় পরের দিন সকাল ৭টায়। প্রতি সোম, বুধ ও শুক্রবার সকাল ৭টায় ছাড়ে কারোয়ার এক্সপ্রেস। পৌঁছয় রাত ৯ টায়। দু’টি ট্রেনই গোকর্ণ রোড স্টেশনে থামে। 
ছবি: লেখক  

29th     October,   2022
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ