বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
আমরা মেয়েরা
 

রানি  সাহেবার  দরবার

প্রাচীন শিল্পরীতিকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস নিয়েছেন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের রাজপরিবারের  বর্তমান প্রজন্ম। নেতৃত্বে রানিরা। কেমন সেই যাত্রা? লিখছেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য।

জমকালো শাড়ি বা ঘাগরা চোলি। মাথা থেকে পা পর্যন্ত অলঙ্কারে মোড়া। সখী, দাসী পরিবৃতা হয়ে চলাফেরা। কখনও বা চিকের আড়াল থেকে রাজ্যের ভার সামলানো। ইতিহাস পড়লে যে কোনও রাজ্যের রানির যে ভাবমূর্তি তৈরি হয় বা চলচ্চিত্রে রানিদের যেভাবে দেখিয়েছেন বিভিন্ন পরিচালক, তার বাহ্যিক রূপ তো অনেকটা এমনই। কিন্তু কলকাতায় এই গরমের দুপুরে যে রাজকন্যা বা রানিরা সেমিনার করলেন, তাঁরা চান্দেরি সিল্ক, জর্জেট, শিফনে সেজে হাজির! হালকা হীরে, সোনা বা মুক্তোর গয়নায় আভিজাত্য আছে, দেখনদারি নেই। তাঁদের সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যায় তাঁরা কোন ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক।  
আয়োজক কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভিটি। সদ্য তাদের বার্ষিক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর চতুর্থ বর্ষে একটি সেমিনারের বিষয় ছিল ‘সাসটেনেবেলিটি ইন দ্য আর্টস: রিফ্লেকশনস ফ্রম প্রিন্সলি ইন্ডিয়া’। সেখানেই বক্তব্য রাখলেন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের রাজপরিবারের বর্তমান প্রজন্ম। ওড়িশা ময়ূরভঞ্জের অক্ষিতা এম ভঞ্জ দেও উপস্থাপনা করলেন। অংশ নিয়েছিলেন শৈলজা কাটোজ (রানি সাহেবা, কাংড়া, হিমাচল প্রদেশ) মহারাজকুমারি ব্রিজেশ্বরী গোহলি (গুজরাট), নন্দিনী সিং (মধ্যপ্রদেশ), জয়দেব সিং (রাজস্থান), জ্যোৎস্না সিং (জম্মু এবং কাশ্মীর), বীরাঙ্গনা শোলাঙ্কি (ভানসদা, গুজরাট), বৈষ্ণবী কুমারী (কৃষ্ণগড়, রাজস্থান)। এর মধ্যে শেষ তিনজন জুম কলে অংশ নিয়েছিলেন। আঞ্চলিক শিল্পকলাকে কীভাবে রক্ষা করছেন, কীভাবে প্রাচীন প্রথা বজায় রেখেছেন, কীভাবে আরও বেশি কর্মীর আর্থিক সংস্থানের রসদ জোগাড় হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করলেন তাঁরা। ঠিক যেন আধুনিক দরবারের রাশ হাতে নিয়েছেন রানিরা। তার মধ্যে অন্যতম শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা।

শিল্প কী?
রাজপরিবারের সদস্যদের কাছে শিল্পর সংজ্ঞা কী? অক্ষিতা মনে করেন, ‘একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট সমাজের যে প্রকাশ সেটাই শিল্পে ধরা থাকে। শিল্পের মধ্যে সেই সময়ের রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতি সবটাই ধরা পড়ে।’ নন্দিনী বললেন, ‘আমার কাছে শিল্পের সংজ্ঞা হল আনন্দ, ভালোবাসা, অনুভূতির প্রকাশ। ক্যানভাস হোক বা কাগজ— মুডের রকমফেরই হল শিল্প। এমন কিছু যা ভাবনার রসদ জোগায়।’ হিমাচলপ্রদেশের কাংড়া মিনিয়েচার নিয়ে কাজ করছেন শৈলজা। তিনি মধ্যপ্রদেশের মেয়ে। বিবাহসূত্রে হিমাচলপ্রদেশের রাজবধূ। ২৫ বছরের বিবাহিত জীবনে পারিবারিক শিল্পকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য। তাঁর কথায়, ‘শিল্প সেটাই যা দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলবে। সেটাই কাংড়া মিনিয়েচারে ধরে রাখার চেষ্টা করি আমরা। দেখলেই বুঝবেন পাহাড়, লতা, গুল্ম— প্রকৃতির সবকিছু যেভাবে ওই এলাকাকে ঘিরে রেখেছে তার প্রতিফলন আছে আঁকায়। আবার বিভিন্ন উৎসব চিত্র বা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনও ফুটে উঠেছে এই শিল্পের মাধ্যমে। আমরা কে কোন পরিবেশে বাস করি তাও আমাদের শিল্প দেখেই বোঝা সম্ভব।’ 

শিকড়ের টান বনাম নতুনত্ব
শিল্পের যে মাধ্যমেই কাজ হোক না কেন, শিকড়কে ধরে রাখাই প্রত্যেকটি রাজ-সদস্যের উদ্দেশ্য। তা না হলে প্রাচীন আঞ্চলিক বিভিন্ন শিল্পধারা একসময়ে কালের নিয়মে অবলুপ্ত হয়ে যাবে। সেটা যাতে না হয়, সেই চেষ্টা জারি রেখেছেন তাঁরা। তাহলে কি শিল্পে নতুন পরীক্ষানিরীক্ষার জায়গা নেই? নন্দিনী বললেন, ‘শিল্পের ক্ষেত্রে শিকড় ভুলে গেলে চলবে না, আবার তা নিয়ে পরীক্ষাও করতে হবে। আমরা কোথা থেকে এসেছি, আজ কোথায় আছি এটা জানা সবার দরকার। ইকো ব্যালেন্স সিস্টেম মেনে আমরা কাজ করি।’ মধ্যপ্রদেশের বেইগা আর্টের কথা উল্লেখ করলেন তিনি। শিল্পী জোধাইয়া বাইয়ের ৮০ বছর বয়স। বেইগা আর্ট তৈরি করে জাতীয় তথা আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি পেয়েছেন। এখনও এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। তাঁর প্রত্যেকটা কাজ নাকি এক একটা গল্প বলে। নতুন প্রজন্মকে শিল্পের প্রতি উৎসাহী করে তুলতে আধুনিকতার ছাপ রাখতেই হবে, এমনটা মনে করেন শৈলজা। তাঁর কথায়, ‘আসল জিনিসটা ধরে রাখা জরুরি। আবার তরুণ প্রজন্ম উৎসাহ পায় এমন কিছুও করতে হবে। নতুন ভাবনা আনতেই হবে। শুধু ইতিহাস ধরে বসে থাকলে কিন্তু সব ধরনের দর্শকের কাছে পৌঁছতে পারব না। আমার ছেলে ২৩ বছরের অম্বিকেশ্বর কাটোজ রাজপরিবারের তরুণ প্রজন্ম। ও কাংড়া দুর্গে বিভিন্ন ভাষাভাষী অডিও গাইডদের খুব প্রোমোট করে। যাতে পৃথিবীর সব মানুষ কাংড়া দুর্গের ইতিহাস জানতে পারেন। এভাবেই আমরা সবকিছু আধুনিক করে তোলার চেষ্টা করছি।’ 

পরিবেশবান্ধব
প্রকৃতির সঙ্গে শিল্প ওতঃপ্রোত ভাবে জড়িত। ‘সাসটেনেবলিটি ইন আর্ট’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সেটাই মনে করিয়ে দিলেন ব্রিজেশ্বরী। তিনি বললেন, ‘ভারতীয় শিল্প সবসময়ই পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। পরিবেশবান্ধব। যে জায়গায় আমরা বাস করি, তার প্রভাব শিল্পে পড়বেই। প্রত্নতত্ত্ব, শিল্প, ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ নিয়ে পড়াশোনা করার পর আমার আধুনিক শিল্প নিয়ে কাজ করার ঝোঁক আরও বেড়ে যায়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে সেখানকার শিল্পকলা বোঝার চেষ্টা করেছি। যে কোনও শিল্প তৈরির যে কাঁচামাল তা সেখানকার মানুষ, প্রকৃতি, প্রাণীর মধ্যে দিয়ে জোগাড় করা হয়। গুজরাটের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের বাঁধনি হাতে তৈরি হয়। আমরা ডিজাইন আরও আধুনিক করার চেষ্টা করছি।’ 

ফ্যাশন ও শিল্পের সংযোগ
সেমিনারে কেউ পরেছেন সিংহের মোটিফ দেওয়া হাতে বোনা চান্দেরি সিল্ক। কারও বা পরনে জর্জেট। কেউ বা খানদানি শিফন। প্রত্যেক রানিই ফ্যাশন সচেতন। শিল্প ও ফ্যাশনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কথা একবাক্যে স্বীকার করে নিলেন তাঁরা। অক্ষিতা মনে করেন ফ্যাশনেও শিকড়ের টান থাকা জরুরি। ‘ফ্যাশন অর্থাৎ নিজেকে সকলের সামনে তুলে ধরা। আমাদের পরিবারে পুরুষ, মহিলা সকলেই ফ্যাশন সচেতন। কেমন গয়না পরবেন, কেমন চুলের সাজ হবে এসব নিয়ে ভাবতেন। সবটাই শিকড়কে মনে রেখে’ বললেন তিনি। 
ইতিহাসে পড়া বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্যর ধারণাকে মনে করালেন ব্রিজেশ্বরী। তাঁর কথায়, ‘ভারতের প্রত্যেক প্রদেশের টেক্সটাইলই অসাধারণ। ফ্যাশন অর্থাৎ যে রং, যে ডিজাইন ব্যবহার করছি, তার মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করা। কোন জায়গা থেকে আমি এসেছি, সেই জায়গার কী কী বিশেষত্ব তাও তুলে ধরা।’ শৈলজা আবার তাঁর শিল্পীদের কাজের মধ্যে ফ্যাশনের পাঠ খুঁজে নিতে চান। তিনি বললেন, ‘কাংড়া মিনিয়েচার দেখলে বুঝবেন রাধা কৃষ্ণ, রাজা রানি— অর্থাৎ যে সব মোটিফ এই পেন্টিংয়ের অংশ তাদের পোশাক, গয়না কতটা ফ্যাশনেবল। প্রচুর ডিজাইনারও কাংড়ার পেন্টিং থেকে আইডিয়া নেন। কলকাতার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ও তো কাংড়া মিনিয়েচার থেকে পাওয়া আইডিয়া তাঁর ডিজাইনে ব্যবহার করেছেন। আর রাজপরিবারের ফ্যাশনের কথা যদি বলেন, পারিবারিক বিয়ের অনুষ্ঠানে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পোশাক, গয়না আমরা পরি। তা মিউজিয়ামেও রাখা আছে। ট্র্যাডিশনাল আউটফিট কখনও আউট অব ফ্যাশন হয় না।’

‘রানি’র পরিচয় উপভোগ্য?
২০২২-এ দাঁড়িয়ে তাঁরা ‘রানি’র পরিচয় দৈনন্দিন জীবনে কতটা উপভোগ করেন? অক্ষিতার কথায়, ‘বংশানুক্রমিকভাবে পাওয়া রানি, রাজা শুধু পরিচয় নয়। আমি বিশ্বাস করি যাঁরা এই প্যানেলে বলতে এসেছেন, সকলেই নিজের কাজ দিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন নিজের যোগ্যতায়। নিজেদের পরিচয়ের পাশাপাশি এত মানুষকে নিয়ে যে আমরা চলতে পারছি, এটা বড় বিষয়। রানি বলে শুধু যে বিলাসবহুল বাড়িতে থাকা, গাড়ি চড়া, গয়না পরা তা নয়, বরং নিজের কাজের মাধ্যমে এতগুলো পরিবারকে আর্থিক স্বাবলম্বী করে তোলা। এই কাজে সাহসের প্রয়োজন। এই কাজটা করতে করতে কোথাও নিজেদেরও নতুনভাবে খুঁজে পাওয়া যায়। যে ঐতিহ্য আমরা বহন করছি, তার একটা দায়িত্ব আছে।’ রানির পরিচয়ে দায়িত্বের কথা স্বীকার করলেন শৈলজাও। তিনি বললেন, ‘রানি পরিচয়ের সঙ্গে প্রচুর দায়িত্ব জড়িয়ে থাকে। যদি আমার ব্যবহার ঠিক না হয়, মেজাজ দেখিয়ে ফেলি, তাহলে কিন্তু কাজ হবে না। আমি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করি। জোর করে তো সম্মান আদায় করা যায় না। সেটা কাজের মাধ্যমেই করতে হয়।’

রাজবংশের মহিলাদের অবস্থান
রাজপরিবারের জৌলুস দেখে সাধারণ মানুষ অভ্যস্ত। কিন্তু সবেতেই যেন পুরুষ আধিপত্য। রাজবংশের মহিলারা নাকি অবদমিত? অন্তত ইতিহাসে তেমন প্রামাণ্য তথ্য কম নেই। সত্যিই যাঁদের গায়ে রাজরক্ত রয়েছে, যাঁরা রাজবংশের সম্মান বজায় রাখা এবং তা ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে আছেন তাঁদেরও অভিজ্ঞতা কি একই? প্রশ্ন শুনে কয়েক সেকেন্ডের নীরবতা। একটু থমকে অক্ষিতার উত্তর, ‘ইতিহাস যদি দেখেন, মহিলাদের ইতিহাস অনেকাংশেই পুরুষরা লিখেছেন। আর ভারতের ইতিহাস লেখার ক্ষেত্রে প্রথম দিকে পাশ্চাত্য প্রভাবের কথাও অস্বীকার করতে পারব না। পর্দাপ্রথা বলুন বা সামাজিক অন্যায়, সুবিচারের অভাব সেটা কিন্তু সমাজের প্রতিটি স্তরের মহিলাদেরই ভোগ করতে হয়েছে। শুধু রাজপরিবার নয়। লিঙ্গ সমতার জন্য সব স্তরের মহিলা লড়াই করেছেন। রাজপরিবারের মহিলারাও পড়াশোনা করেছেন। কর্পোরেট সেক্টরে চাকরি করছেন। ফলে রাজপরিবারের মহিলাদের লড়াই আলাদা নয়। আর যাঁরা লড়াই করে এগিয়ে এসেছেন তাঁদের ইতিহাস সেভাবে লেখা হয়নি। ঝাঁসির রানির কথা আমরা পড়েছি, কিন্তু তিনি ছাড়া আরও অনেক এমন বীরাঙ্গনা রয়েছেন।’ তাঁর কথার সূত্র ধরে ব্রিজেশ্বরী বললেন, ‘ঠিকই, লড়াইটা একই। যে সামাজিক ব্যবস্থাটায় আমরা বাস করি মহিলাদের সমস্যা সেখানেই। তবে মহিলারা সব ক্ষেত্রেই এখন অনেক এগিয়ে এসেছেন।’
যেহেতু লড়াইটা বহু প্রাচীন, যেহেতু এ লড়াই সামাজিক তাই সোচ্চারে নারীবাদের কথা না বলেও সমাজের প্রতিটি স্তরের মহিলা যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন, সে চেষ্টা রানিরা নিরন্তর করে চলেছেন। ভারতের প্রতিটি প্রদেশে বাড়ির মহিলাদের পেশাদার করে তোলার কাজ করছেন। প্রোডাকশনের বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন পদে আরও বেশি করে মহিলা নিয়োগ করতে চান তাঁরা। হাতের রেখায়, তুলির আঁচড়ে, শ্রমে, গল্প কথায় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখাই তাঁদের লক্ষ্য। আলোচনায় খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উঠে এল লকডাউন প্রসঙ্গ। সে সময় বেঁচে থাকার তাগিদেই বেশ কিছু শিল্পী নাকি অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের ফের প্রাচীন শিল্পের কারিগর হিসেবে ফিরিয়ে আনার কাজ করছেন রাজপরিবারের সদস্যরা। কারণ এই শিল্পীরা অন্য পেশায় চলে গেলে হারিয়ে যাবে শতাব্দী প্রাচীন এক একটি ঐতিহ্য।
 

21st     May,   2022
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ