বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
আমরা মেয়েরা
 

এখন মেয়েরা

অ্যাপে সাফল্য দিব্যার
দিব্যা গোপিনাথ একজন সাধারণ মেয়ে। হঠাৎই তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন। আর তাঁকে বিখ্যাত করে তুলেছে একটি লার্নিং অ্যাপ। বাইজু’স অ্যাপের কথা বলছি। দিব্যা তাঁর স্বামীর সঙ্গে মিলে এই অ্যাপটি তৈরি করেছেন। বরাবরই পড়াশোনার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। বিশেষত অঙ্ক আর বিজ্ঞান। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ থেকেই তিনি পড়ানোর পেশায় ঢুকেছিলেন। তারপর সেখান থেকে হয়ে উঠলেন লার্নিং অ্যাপের সৃষ্টিকর্তা। দিব্যার কথায়, ‘পড়ানোর ধরন বিগত কয়েক শতাব্দীতেও খুব একটা বদলায়নি। এদিকে প্রযুক্তির দিক দিয়ে আমরা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছি। সেই ভাবনা থেকেই পড়াশোনার পদ্ধতিগত কোনও বদল আনা যায় কি না সে নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করি। আর সেই চিন্তা থেকেই জন্ম নেয় বাইজু’স। বাইজু রবীন্দ্রন দিব্যার স্বামী নাম। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই যেহেতু এই লার্নিং অ্যাপটি শুরু হয়েছিল তাই অ্যাপের নামও বাইজু’স রাখাই মনস্থ করেন দিব্যা। অ্যাপটি এত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে তা ভাবেননি দিব্যা। কিন্তু আশার কথা এই যে লোকের এখনও পড়াশোনার প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ। তাই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়। দিব্যা বলেন পড়াশোনার প্রতি তাঁর এই যে আগ্রহ সেটাই এই অ্যাপ তৈরি ও পরিচালনার ক্ষেত্রে বিরাট প্লাস পয়েন্ট। ভালোবাসার কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারলে সাফল্য আসবেই, বলেন দিব্যা। আর তাঁর সাফল্যেরও এটাই চাবিকাঠি। তবে এই অ্যাপ নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেন তিনি। প্রতিটি বোর্ডের পাঠ্যক্রম বিষয়ে নিজেকে ওয়াকিবহাল রাখেন। শুধু তাই নয় বিভিন্ন বছরের প্রশ্নপত্র ঘেঁটে একটা কাঠামো তৈরি করেন। সেই কাঠামো বছর বছর আবার বদলও করেন। তাতে নতুন মাধ্যম যুক্ত করেন। প্রশ্নের ধরন বদলান। কখনও ছোট প্রশ্নের আধিক্য থাকে কখনও বা বড় প্রশ্ন তৈরি করেন। শুধু তাই নয় আনসিন বিষয়গুলোকে প্রসঙ্গিক করে তোলারও চেষ্টা করেন। এখনকার পরিস্থিতি ও পরিবেশন বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন। দিব্যা বললেন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই তিনি সাফল্যের উপায় খুঁজছেন, আর সেই সাফল্য যদি আগামী প্রজন্মকে আধুনিকতার পথে ঠেলে নিয়ে যেতে পারে তাহলে সেটাই হবে তাঁর সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব।     

নৃত্যভঙ্গি নিয়ে উন্নততর চিন্তায় স্বপ্নকল্প
 িখ্রস্টপূর্ব ২০০ নাগাদ ভরত মুনি তাঁর নাট্যশাস্ত্র কাব্যে নারীর বিভিন্ন অভিব্যক্তির কথা লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন মেয়েরা মুখে সবসময় মনের ভাব প্রকাশ করে না ঠিকই কিন্তু অভিব্যক্তির মাধ্যমে তা প্রকাশ করে। তাই মেয়েদের মুখভঙ্গি অনুযায়ী তাঁদের আট ধরনের মনোভাবের কথা লিখেছিলেন তিনি। তাতে রাগ, দুঃখ, বেদনা, প্রত্যাখ্যান, প্রেম, হাসি, আনন্দ ও ভয় এই আটটি অভিব্যক্তির কথা রয়েছে। এবং এই প্রতিটি অভিব্যক্তিই তিনি নৃত্যের ভঙ্গিমায় দেখিয়েছেন। কিন্তু এত বছর পরে সেই কথার উল্লেখ কেন? উল্লেখটি টেনে আনলেন ওড়িশার এক নৃত্যশিল্পী স্বপ্নকল্প দাশগুপ্ত। তিনি তাঁর নৃত্যতত্ত্বে বলেছেন, মেয়েরা যত পরিণত হয়েছেন ততই তারা তাদের মনোভাব লুকিয়ে রাখতে শিখেছে। ফলে তাদের মুখভঙ্গির মাধ্যমে আর রাগ সব ক্ষেত্রে প্রকাশ পায় না। বরং অপছন্দটাকে তারা বিরক্তির মাধ্যমে প্রকাশ করে। এই যে রাগ না করে বিরক্তি প্রকাশ, এর মধ্যে প্রতিপক্ষকে আলগোছে দূরে ঠেলে দেওয়ার একটা ব্যাপার আছে। রাগ যতটা ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি, বিরক্তি ততটা নয়। ফলে বিরক্তি নারীর পরিণত মনের প্রকাশ। একইভাবে দুঃখের মধ্যেও অভিমানের অংশটুকু বাদ দিয়ে নারী তার মুখের অভিব্যক্তি সাজিয়েছে। ফলে অন্যের ব্যবহারে দুঃখ প্রকাশ পেলেও  কখনওই তা ব্যক্তিগত আঘাতে সে আর পরিণত হতে দেয় না। মান অভিমান পর্বগুলো তার অভিব্যক্তি থেকে বাদ পড়ে। আনন্দেও উচ্ছ্বাসের অংশ বাদ পড়ে এবং একটা অন্য ধরনের সাবলীল দীিপ্ত তার নৃত্যের মাধ্যমে সে ফুটিয়ে তোলে। স্বপ্নকল্প এই অভিব্যক্তিকে আবার বিচার ও বিশ্লেষণ করে বলেন, সামাজিক পরিবর্তনের পাশাপাশি নারীর স্বভাবগত কিছু বদল ঘটেছে। সেই বদলের কারণে মেয়েরা এখন আর নিজেদের চাহিদাগুলোকে সবসময় রেখে ঢেকে রাখে না। সে বিষয়ে তারা অনেকটাই সরব হয়ে উঠেছে। এবং এই যে সরব হয়ে ওঠা, এর ফলে তাদের চাহিদা অনেকটাই পূর্ণ হয়। ফলে তাদের মনোভাবগুলোও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বদলে গিয়েছে। শুধু যে চাহিদার কথা খোলসা করে বলার ক্ষমতাই মেয়েদের মধ্যে পরিবর্তন এনেছে তা নয়, যুগের সঙ্গে তারা বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছে এবং এই যে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরনো, পাঁচটা লোকের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ, আদান প্রদান— এর ফলে তাদের চিন্তাভাবনায় একটা পরিণত ভাব এসেছে। তারা নিজেদের মনের ভাবগুলো লুকিয়ে বাইরের জগতে চলার মতো একটা ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছে। সেই ব্যক্তিত্ব সাবলীল ও সচেতন।      

একতার পারদর্শিতা
নয়ের দশকে তিনি ছিলেন নেহাতই অল্পবয়সি কিশোরী। বয়সের নিয়মে উচ্ছল ও প্রাণবন্ত এই কন্যাটির কিন্তু লেখালেখির প্রতি বরাবরের টান। ওই অল্প বয়স থেকেই তাই বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট না করে তিনি যোগ দিলেন পারিবারিক ব্যবসায়। হয়ে উঠলেন বালাজি টেলিফিল্মসের যুগ্ম ম্যানেজিং ডিরেক্টর। এতক্ষণে পাঠক হয়তো বুঝে গিয়েছেন আমি একতা কাপুরের কথা বলছি। তারপর প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে একতা একের পর এক হিট চিত্রনাট্য উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। টিভির পর্দা থেকে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তা-ই সিনেমা এবং সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পর্যন্তও পৌঁছে গিয়েছে। এবং সব মাধ্যমেই চূড়ান্ত সফল একতা। তাঁর গল্পে মেয়েদের চরিত্রের যে প্রাধান্য থাকে তা তো বলাই বাহুল্য। তবে শুধু প্রাধান্যতেই থেমে থাকেননি তিনি। বরং নারী চরিত্রে এক অসম্ভব বৈচিত্র্য এনেছেন তাঁর লেখনী ও গল্পের মাধ্যমে। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে একতা বলেন মেয়েদের সামাজিক অবস্থান এখনও বিতর্কিত। সমাজের কত ক্ষেত্র আছে যেখানে মেয়েরা আজও নিজেদের স্বাক্ষর রাখেননি। আর যেসব ক্ষেত্রে নিজেদের প্রমাণ করেছেন সেখানেও সারাক্ষণ একটা অলিখিত পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাঁদের। ফলে টিকে থাকার এই যে লড়াই, এটাই নারী চরিত্রে একটা বৈচিত্র্য বহন করে আনে। আর সেই বৈচিত্র্যটাকেই একতা ফুটিয়ে তোলেন তাঁর লেখা ও চিত্র পরিকল্পনার মাধ্যমে। তাই তাঁর চিত্রনাট্যে প্রতিটি মহিলা একে অপরের চেয়ে আলাদা। প্রতিটি মহিলা নিজ নিজভাবে ব্যতিক্রমী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। নিজের এই কৃতিত্ব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কিন্তু একতা হেসে বলেন, সমাজে সকলের নির্দিষ্ট কাজ রয়েছে। তিনি শুধুই নিজের কাজটুকুই সুষ্ঠুভাবে করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।     

21st     August,   2021
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ