মিষ্টি ছাড়া আবার পুজো হয় নাকি? এবার পুজো স্পেশাল মিষ্টি নিয়ে প্রতিবেদনে শেরী ঘোষ।
জন্মের সময় সদ্যোজাতর মুখে মধু দেওয়া থেকেই বাঙালির মিষ্টি প্রীতির শুরু। বাঙালির এই বিশেষ ‘সুইট টুথ’-এর কথা ভেবেই মিষ্টির খোঁজ খবর হাজির করেছি আমরা। এবার পুজোর বিশেষ মিষ্টির তালিকায় কী আছে তা জেনে নিন।
ভীম নাগ
১৯৭ বছরের ঐতিহ্যপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটির শহর জুড়ে বিভিন্ন শাখা। পুজো স্পেশাল মিষ্টির মধ্যে থাকছে দিলখুশ, প্রাণভরা, প্যারাডাইস, মনোহরা, দেশবন্ধু, আবার খাব, পরিতৃপ্তি, পেস্তা বরফি, বৈকুণ্ঠ ভোগ, রোজ ক্রিম। ফিউশন সন্দেশের মধ্যে পাবেন বাটারস্কচ, ম্যাংগো ফ্লেভারড পুর ভরা সন্দেশ, গ্রিন ম্যাংগো স্কচ। তালশাঁস সন্দেশ আছে বিভিন্ন ভ্যারাইটিতে। শুধুমাত্র পুজো উপলক্ষে বিশেষ কড়াপাকের সন্দেশের মধ্যে থাকছে শারদ শুভেচ্ছা এবং শুভ বিজয়া সন্দেশ। ছানার মুড়কি, কেশর রাবড়ি পাবেন। পুজোয় দোকান খোলা থাকবে সকাল আটটা থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত।
গিরিশচন্দ্র দে এবং নকুড়চন্দ্র নন্দী
প্রতিষ্ঠানটির ১৭৯ তম বর্ষ চলছে। এদের বিশেষত্ব বিভিন্ন ধরনের সন্দেশ। এবছরের পুজো স্পেশাল আইটেমের মধ্যে থাকছে ডাব সন্দেশ, চন্দ্রপুলি, জলভরা তালশাঁস, গোলাপি প্যাঁড়া, দিলখুশ, পারিজাত সন্দেশ, মালাই রোল, মৌসুমী সন্দেশ ইত্যাদি। ফিউশন আইটেমের মধ্যে পাবেন বাটারস্কচ, মালাই শিঙাড়া, শচীন সন্দেশ, কেশর কাঁচাগোল্লা ইত্যাদি। পুজোর সময় দোকান খোলা থাকবে সকাল সাতটা থেকে রাত বারোটা।
কামধেনু
দক্ষিণ কলকাতার এই মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানটির মোট ১৪টি শাখা রয়েছে। এদের বিশেষত্ব নবদ্বীপের বিশেষ ক্ষীর দই মিষ্টি দই। এছাড়াও পাবেন বেকড দই এবং আম দই। বিশেষভাবে উল্লেখ্য বেকড ছানার মালাইকারি, স্পেশাল বৈকুণ্ঠ ভোগ সন্দেশ। পুজোর সময় দোকান খোলা থাকবে সকাল আটটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত।
নলিন চন্দ্র অ্যান্ড সন্স
১৯৮ বছরের এই সংস্থার পুজো স্পেশাল মিষ্টির মধ্যে রয়েছে কেশর ছানার পায়েস, চকো ডিলাইট সন্দেশ, বাটারস্কচ আইসক্রিম সন্দেশ, কেশর রসমালাই, তোতাপুরী, রোজ ক্রিম সন্দেশ, আবার খাব, পারিজাত, চপ সন্দেশ, ডিম সন্দেশ, চকলেট তালশাঁস, জলভরা তালশাঁস, চকলেট বল, চকলেট বোম, ব্রাজিলিয়ান সাম্বা, ব্ল্যাক কারেন্ট সন্দেশ ইত্যাদি। দইয়ের মধ্যে রয়েছে ম্যাংগো পুজো স্পেশাল আইটেম। এর মধ্যে শারদীয়া লেখা একটি নতুন ধরনের মিষ্টি থাকবে। মহালয়া থেকে লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত পাওয়া যাবে। দোকান খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা।
নিতাই সুইটস
প্রায় ১৬ বছর ধরে সাতটি শাখায় মিষ্টান্ন পরিবেশন করে চলেছে নিতাই সুইটস। এদের এই বছরের পুজোর বিশেষত্ব খাঁটি ঘিয়ের তৈরি গোলাপজাম, রাজভোগ, বিভিন্ন ধরনের সন্দেশ যার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য সরমঞ্জরী, গুড়ের বাদামমঞ্জরী, আম সন্দেশ ইত্যাদি। এছাড়া পাবেন মিষ্টি দই। পুজোয় দোকান খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা।
ইন্দুমতী সুইটস
এই মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানটির এই বছরের এদের পুজো স্পেশাল আইটেমের মধ্যে পাবেন রোজ রসমালাই, ঘিয়ের শোনপাপড়ি, পান ফ্লেভার সন্দেশ, বেকড ক্ষীরকদম, বেকড মিল্ককেক, ড্রাই ফ্রুট সন্দেশ, ক্রিম কালাকাঁদ। দইয়ের মধ্যে থাকছে তিন রকম ভ্যারাইটি। টক দই, মিষ্টি দই এবং স্ট্রবেরি দই। পুজো স্পেশাল প্রতিটি আইটেমই পাবেন ভাইফোঁটা অবধি। দোকান খোলা থাকবে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০.৩০টা।
অঞ্জলি সুইটস
অঞ্জলি সুইটসের পুজো স্পেশাল আইটেমের মধ্যে পাওয়া যাবে পুরভরা তালশাঁস সন্দেশ, জলভরা তালশাঁস সন্দেশ, ড্রাই ফ্রুটসের পুর ভরা তালশাঁস সন্দেশ, দুই থেকে তিন ধরনের গোলাপজাম মিষ্টি, কাঁচাপাকের বাটার স্কচ সন্দেশ, িগ্রন অ্যাপেল সন্দেশ, স্ট্রবেরি সন্দেশ ইত্যাদি। শুধু পুজোর সময় থাকবে ১০০ টাকা পিস তালশাঁস সন্দেশ এবং বড় শঙ্খ সন্দেশ। দোকান খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা।
দেশপ্রিয় সুইটস
এদের মোট সাতটি শাখা। এ বছর পুজো স্পেশাল আইটেমের মধ্যে থাকছে স্পঞ্জ রসগোল্লা, বম্বে রোল, পাঞ্জাব রোল, মালাই পাতুরি, জলভরা তালশাঁস, বড় শাঁখ সন্দেশ, বিশুদ্ধ ঘিয়ের গোলাপজাম, কালোজাম, পান্তুয়া, দেশি ঘিয়ের মিহিদানা এবং সীতাভোগ। দইয়ের মধ্যে রয়েছে অনেক ভ্যারাইটি। পাবেন মালাই দই, ক্ষীর দই ইত্যাদি। এছাড়া রয়েছে রাবড়ি, রসমালাই। দোকান খোলা থাকবে সকাল সাতটা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত।
ব্রজনাথ সুইটস
এ বছর পুজোয় ডায়াবিটিসের রোগীদের কথা ভেবে এরা নিয়ে আসছে লো জি আই সুগারের মিষ্টি। এই মিষ্টি ডায়াবেটিক এবং নন ডায়াবেটিক সবাই খেতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে প্লেন সাদা সন্দেশ, ম্যাংগো সন্দেশ এবং রসমালাই। লো জিআই সমৃদ্ধ গজা, সীতাভোগ এবং মিহিদানা ছাড়াও পাওয়া যাবে ডায়াবিটিস লাড্ডু, দরবেশ এবং রসগোল্লা। বিভিন্ন আইটেমের দাম ১৫ টাকা থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। এদের নিজস্ব বেকারিতে লো জিআই এর বিভিন্ন ধরনের কুকিজ, পেস্ট্রি এবং ক্রিম ছাড়া ফ্রুট কেকও তৈরি হয়। পুজোর সময় এই সব মিষ্টিই পাবেন। দুর্গাপূজা থেকে ভাইফোঁটা— বাংলার উৎসবের মধ্যে সেই মিষ্টি পাওয়া যাবে। এছাড়া রসমালাই, দই বড়া, রসমালাই কেক, রাবড়ি কেক পাবেন। পুজোর ক’দিন আউটলেটগুলো খোলা থাকবে সকাল আটটা থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত।
ছবি: মিষ্টির দোকানের সৌজন্যে