রথ মানেই পাঁপড় ভাজা। সঙ্গে আরও কয়েক পদ ভাজার আয়োজন থাকলে তো কথাই নেই। ঘরোয়া পদ্ধতিতে চার রকম ভাজাভুজির রেসিপি দিলেন প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হিঞ্চে শাকের পকোড়া
উপকরণ: হিঞ্চে শাক ১আঁটি, বেসন ১ কাপ, চালের গুঁড়ো কাপ, কালো জিরে ১ চামচ, হলুদ গুঁড়ো চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো চামচ, নুন পরিমাণ মতো, ভাজার জন্য তেল।
প্রণালী: হিঞ্চে শাক খুব ভালো করে ধুয়ে লম্বা লম্বা করে কেটে নিন। এরপর বেসন, চালের গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কার গুঁড়ো আর পরিমাণ মতো নুন ভালো করে মিশিয়ে নিন। তাতে অল্প করে জল দিয়ে একটা ঘন ব্যাটার তৈরি করুন। ব্যাটারটি ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর দু’-তিনটি হিঞ্চের ডগা একসঙ্গে করে নিয়ে ওই ব্যাটারে চুবিয়ে নিন। বেশ ভালোভাবে ব্যাটার যেন হিঞ্চের গায়ে লেগে থাকে সে দিকে খেয়াল রাখবেন। গরম তেলের মধ্যে ব্যাটার মাখানো হিঞ্চে দিন। এক পিঠ হয়ে গেলে তা উল্টে দিয়ে অপর পিঠ ভেজে নিন। সোনালি রং হলে কড়াই থেকে তেল ঝরিয়ে নামান। ধনেপাতার চাটনি সহযোগে পরিবেশন করুন।
মুগ ডালের জিলিপি
উপকরণ: মুগ ডাল ১ কাপ, বিউলির ডাল ২ টেবিল চামচ, নুন পরিমাণ মতো, তেল ও ঘি ভাজার জন্য।
চিনির সিরা তৈরি করার জন্যে: ৩ কাপ চিনি, ৪ কাপ জল, ৫-৬ টি ছোট এলাচ, অল্প কেশর।
প্রণালী: মুগ ডাল আর বিউলির ডাল তিন ঘণ্টা আগে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর মিক্সিতে তা বেটে নিন। খুব মিহি পেস্ট বানিয়ে নেবেন। এই পেস্টের সঙ্গে অল্প জল আর পরিমাণ মতো নুন ভালো করে ফেটিয়ে নিন। অন্য দিকে একটা পাত্রে চিনি ও জল একসঙ্গে নিয়ে ফোটান। তার মধ্যে ছোট এলাচ আর কেশর ফেলে দিন। চিনির সিরা খুব ঘন হবে না। মোটামুটি পাতলা থাকতেই নামিয়ে নিন। এরপর কড়াইতে তেল ও ঘি একসঙ্গে নিয়ে গরম করুন। তেল ও ঘি গরম হলে তৈরি করা ডালের পেস্ট একটা পাইপিং ব্যাগ অথবা ফানেল এর মধ্যে দিয়ে গরম তেল ও ঘিয়ের মধ্যে ছাড়ুন। জিলিপির আকার দেবেন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। দু’পিঠ ভেজে নিন। তারপর তা তুলে নিয়ে চিনির সিরার মধ্যে দিন। দু’তিন ঘণ্টা পর পরিবেশন করুন মজাদার মুগ ডালের জিলিপি।
কর্ন পকোড়া
উপকরণ: কর্ন ২ কাপ, বেসন ২ টেবিল চামচ, চালের গুঁড়ো ২ কাপ, কাঁচালঙ্কা ৪টে, আদা এক টুকরো, হলুদ গুঁড়ো চামচ, জিরে গুঁড়ো চামচ, লঙ্কার গুঁড়ো চামচ, জোয়ান ১ চামচ, ধনেপাতা কুচি ২ চামচ, ১টা বড় পেঁয়াজ কুচি করে কাটা, লেবুর রস ২ চামচ, নুন পরিমাণ মতো, তেল ভাজার জন্য। প্রণালী: কর্ন, কাঁচালঙ্কা, আদা একসঙ্গে মিক্সিতে হাল্কা করে পিষে নিন। এরপর একটা পাত্রে ঢেলে ওর মধ্যে হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়া, ধনেপাতা কুচি, পেঁয়াজের কুচি, নুন আর লেবুর রস বেশ ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার কড়াইতে তেল দিন ও তেল গরম হলে অল্প অল্প মিশ্রণ নিয়ে পকোড়ার আকারে গড়ে গরম তেল ছাড়ুন। একপিঠ ভালো করে ভেজে অন্যপিঠ উল্টে ভেজে নিন। তেল ঝরিয়ে তুলে রাখুন। ধনেপাতার চাটনি অথবা পুদিনার চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করুন গরম কর্ন পাকোড়া।
সাবুর পাঁপড়
উপকরণ: ছোট দানার সাবু ১০০ গ্রাম, নুন ১ চামচ, ভাজার জন্য তেল, ১০টি মাঝারি মাপের কৌটোর ঢাকনা।
প্রণালী: সাবু দানা ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর একটা পাত্রে সাবুর পরিমাণের তিন ভাগের এক ভাগ জল দিয়ে ২ ঘণ্টা সাবু ভিজিয়ে রাখুন। এবার ১টা থালায় ১০টা গোল কৌটোর ঢাকনা রেখে তাতে তেল মাখিয়ে রাখুন। আধ ভেজানো সাবু দানাতে এক চামচ নুন মেখে নিন। এই মিশ্রণটি থেকে এক চামচ করে তুলে প্রতিটা ঢাকনায় ভরুন। তারপর তা হাত দিয়ে আস্তে আস্তে চেপে দিন। ঢাকনার তলায় যেন সাবুর দানার একটা মোটা আস্তরণ পড়ে খেয়াল রাখবেন। এবার একটা জালি পাত্রের ওপর এই ঢাকনাগুলো সাজিয়ে নিন। একটা বড় ডেকচিতে জল দিয়ে ফুটতে দিন। জল ফুটে উঠলে তার ওপর ঢাকনাসমেত জালি পাত্রটি রাখুন আর ওপর থেকে একটা চাপা দিয়ে দিন। দেড় মিনিট স্টিম করুন। এবার একটা থালায় অল্প তেল মাখিয়ে নিন। তারপর জল থেকে জালি পাত্রটি তুলে নিন। তার ওপর বসানো ঢাকনাগুলো একে একে ওই তেল মাখানো থালার ওপর উপুড় করে পিছন দিক থেকে কিছুটা চাপ দিয়ে পাঁপড়গুলো বের করে নিন। এবার রোদে দিয়ে অন্তত ২ ঘণ্টা ধরে পাঁপড়ের দু’পিঠ ভালো করে শুকিয়ে নিন। এরপর কড়াইতে তেল দিয়ে অল্প ফ্লেমে পাঁপড়গুলো ভেজে তুলে নিন।