বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
চারুপমা
 

কো-অর্ড সেটে জমবে পুজো

কো-অর্ড। নামের মধ্যেই স্পষ্ট এর বিশেষত্ব। কোঅর্ডিনেশন অর্থাৎ বাংলা অভিধানে যাকে বলে সমন্বয়, তা তো জীবনের প্রতি পদক্ষেপে প্রয়োজন। সঠিক সমন্বয় যেমন আলোর সন্ধান দিতে পারে, তেমনই সমন্বয়ের অভাবে নষ্ট হয়ে যায় অধিকাংশ জিনিস। ফ্যাশনেও এবার সমন্বয়ের ডাক। কো-অর্ড সেট এখন ট্রেন্ডি। পুজোর কেনাকাটা শুরু হয়েছে অল্প বিস্তর। ষষ্ঠীর সকালের ফুরফুরে মেজাজ হোক বা নবমীর বিকেলে পাড়ায় আড্ডার মুড— সবটাই নিখুঁত ছন্দে মাপা হতে পারে পছন্দসই কো-অর্ড সেটের হাত ধরে।
কো-অর্ড সেট কী? ফ্যাশন ডিজাইনার অনুশ্রী মালহোত্রা বললেন, ‘কোঅর্ড সেট এখন খুব জনপ্রিয়। সব রকম ফ্যাব্রিকেই তৈরি করা যেতে পারে একই রঙের কোঅর্ডিনেটেড পোশাক। উপর আর নীচ দুটোই কোঅর্ডিনেট যখন অর্থাৎ একইরকম রং অথবা প্রিন্ট, তাকেই কো-অর্ড বলি আমরা। মোডাল সিল্ক, ডিজিটাল প্রিন্ট ফ্যাব্রিকের উপর হতে পারে। সিল্কের উপর প্রিন্টেড দারুণ লাগবে। আমি যেহেতু সাসটেনেবল ফ্যাশন নিয়ে চর্চা করি, মোটামুটি ইকো প্রিন্ট, ন্যাচারাল ব্লক প্রিন্ট দিয়ে কো-অর্ড প্রচুর তৈরি করছি। অর্গ্যানিক কোরা ফ্যাব্রিকও আছে আমার। খুবই ট্রেন্ডি আর ইন ফ্যাশন এই কো-অর্ড।’
কো-অর্ড সেটের একটা দারুণ সুবিধে আছে। যদি ইচ্ছে হয় উপরের শার্টের সঙ্গে কনট্রাস্ট একরঙা স্কার্ট বা প্যান্ট দিয়ে সাজলে সেটা আবার অন্য একটা পোশাকের অপশন হতে পারে। উল্টোটাও সত্যি। শুধুমাত্র টু-পিস নয়। কো-অর্ড থ্রি পিসও হয়। এই পোশাক তৈরির আগে রং এবং প্রিন্টের মোটিফ যাতে একই থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখেন ডিজাইনাররা। কিন্তু উপর এবং নীচের পোশাকের আলাদা ফ্যাব্রিক হতে পারে। অর্থাৎ লিনেনের টপের সঙ্গে কটন সিল্কের পালাজো কো-অর্ড সেট হিসেবে পরতেই পারেন। 
অভিনেত্রী বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায় কো-অর্ড ফ্যাশন সম্পর্কে সচেতন। কিন্তু এখনও তাঁর ওয়ার্ডরোব এই ধরনের পোশাকে ভরেছে তা নয়। তিনি বললেন, ‘আমি কো-অর্ডে কমফর্টেবল। কিন্তু খুব একটা পরা হয় না। এমনিতে কনট্রাস্ট করে পোশাক পরি। কালো বা নীল জিনসের সঙ্গে সাদা শার্ট। গাঢ় এবং হালকা রঙের কনট্রাস্ট সাধারণত পরি। কিন্তু ফ্যাশন তো ঘুরে ঘুরেই আসে। স্টাইল নিজস্ব, সব সময়ই থাকে। অনেকদিন পর আবার কো-অর্ড ফ্যাশন পুজোর আগে ফিরেছে। এমনিতে আমার ভালোই লাগে। ছোটবেলায় পুজোর কেনাকাটার উত্তজনা ছিল। তখন ১০টা করে জামা হতো। আসলে এখন আর সেই উত্তেজনা নেই। এখন তো সারা বছর কাজের প্রয়োজনে নানা পোশাক কিনতে হয়। তবে পুজোর চারদিন চারটে নতুন পোশাক এখনও হয়। এবার কয়েকটা নতুন শাড়ি আছে। তবে পুজোর আগে যদি পছন্দ হয় কো-অর্ড সেটও কিনব।’
পেন্সিল স্কার্ট, ফ্লোয়িং শার্ট, বুটকাট জিনস, স্কিনি জিনস সব কিছুই কো-অর্ড করে পরলেও আপনার চেহারার সঙ্গে কোনটা মানানসই, সেদিকে নজর দিন। এ তো ফ্যাশনের শুরুর কথা। ফ্যাব্রিক যত আরামদায়ক হবে এবং ব্যক্তি বিশেষে তা যত ভালো ক্যারি করতে পারবেন, ততই তা দেখতে সুন্দর লাগবে। অনুশ্রীর কথায়, ‘কোঅর্ড সেট ফিগার কারেকশন করে। কারণ কোনও কালার ব্লকিং থাকে না। কম উচ্চতার মানুষও পরতে পারেন। সব রকম চেহারার মহিলারা এটা পরুন। মূলত ওয়ার্ডরোব বদলানোর কথা মাথায় রেখে কো-অর্ড তৈরি করি আমরা। যে একঘেয়ে লুক চলছে, তার থেকে একটা ফ্রেশ লুকের বদল তো সকলেই চান।’
কো-অর্ড সেটের সঙ্গে বাকি অ্যাক্সেসরিজও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানেই বড় ভুল করে ফেলেন অনেকে। ফ্ল্যাট জুতোর সঙ্গে কখনও কো-অর্ড সেট ভালো লাগে না। এরজন্য চাই হিল। আপনার চেহারা সঠিক প্রদর্শনের জন্য বেশিরভাগ পোশাকের সঙ্গেই হিল পরার পরামর্শ দেন ডিজাইনাররা। তাই অল্প হলেও হিল পরলেই ভালো লাগবে। একান্তই হিল পরতে স্বচ্ছন্দ না হলে বুট ট্রাই করুন। 
৬০-এর দশকে কো-অর্ড সেটের চাহিদা ছিল আকাশছোঁয়া। ফ্যাশন সচেতন যে কোনও মহিলার সংগ্রহে থাকত এ ধরনের পোশাক। মাঝে বেশ কিছু বছর কনট্রাস্টের চাহিদা তৈরি হয়। ফের স্বমহিমার ফিরেছে কো-অর্ড। ফ্যাশনের সংজ্ঞা যে আদতে সেই উৎসের খোঁজ অথবা পুরনোকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো- তা মেনে নিলেন অনুশ্রী। তাঁর কথায়, ‘২০০০-২০০১-এও আমরা শাড়ির সঙ্গে রং মিলিয়ে ব্লাউজ বানাতাম। তারপর কনট্রাস্টের যুগ এল। এভাবেই পুরনো জিনিস বারবার ফিরে আসে। বেশ কিছু বছর শর্ট কুর্তির খুব চল ছিল। তারপর লং কামিজ, কুর্তির ট্রেন্ড তৈরি হল। কো-অর্ডে আসলে কাটিংয়ের আলাদা কোনও বিশেষত্ব নেই। উপরে শার্ট, নীচে যে কোনও লোয়ার হতে পারে। আবার কোঅর্ডিনেট করা সালোয়ার স্যুট হতে পারে। শর্ট কুর্তির সঙ্গে সারারা প্যান্ট কেউ পছন্দ করতে পারেন। উপরে শার্ট নীচে লুজ প্যান্ট। ক্রপ টপ দিয়েও পরতে পারেন। ফলে যে কোনও প্যাটার্নেই হতে পারে। ফ্যাশন ট্রেন্ড তো এভাবেই বদলাতে থাকে।’
কো-অর্ড সেটের সঙ্গে সবথেকে ভালো মানায় স্টেটমেন্ট জুয়েলারি। হাতে একটা বড় আংটি। কানে লম্বাটে দুল। নাকে বড় নাকছাবি। এগুলো আপনাদের সহজ অপশন। যাঁদের চুল বড়, তাঁরা চুলের জন্য স্টেটমেন্ট জুয়েলারি ব্যবহার করুন। খোঁপায় বাহারি কাঁটা বদলে দিতে পারে সম্পূর্ণ সাজ। কো-অর্ড সেট নিজেই ফুরফুরে পোশাক। ফলে এই ট্রেন্ডে গা ভাসালে মন ফুরফুরে হবেই। পুজোর লিস্টে অনায়াসে রাখুন। পরে বেড়াতে যাওয়ার অবসরে হোক বা সান্ধ্য পার্টি জমাতেও এই হবে আপনার দোসর।

2nd     September,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ